কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
আজ নারী মঙ্গল গ্রহে যায়, সূর্যে “প্রব” লাগায়, বিমান চালায়, যুদ্ধ বিমান নিয়ে বোম্বিং করে ফিরে আসে, ট্রেন চালায়, অর্থাৎ কোন ক্ষেত্রে সে অপারগ এমন আপত্তি কোন ক্ষেত্র থেকে উঠে আসে না, কনজার্ভেটিভ কিছু লোক ছাড়া নারীকে দ্বিতীয় শ্রেনীর “মানুষ” হিসাবে দেখে না! যদি-ও কিছু পরিবারে উচ্চ শিক্ষিত নারীর একা বাইরে যাওয়া ও বারন, ফেজবুক খুলতে স্বামীর ছবি সাথে লাগে, তার নিজ বেতন ভাতা নিজ হাতে রাখার অধিকার নাই, কবিতা প্রবন্ধ লেখালেখি তে নারীর চরিত্র নষ্ট হওয়ার ভয় দেখে! অবশ্য এসব এলাকা ভিত্তিক পরিবারের বিগত অনগ্রসরতা দায়ী! তা ছাড়া না জানা ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কিছুটা দায়ী! নারী তার নিজ ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠায় অপারগতা এবং আহহা বড় কষ্টে মিলেছে ধন, যা চান তা করি বরণ, এমন মানসিকতা পোষন করা সে সব নারী!
প্রিয় পাঠক, আমার বিষয় একটু রসিকতা পূর্ণ, “ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে!” আমার প্রবন্ধে একজন নারীকে ক্যাপশন করেছি ভাত রান্না করছেন, যিনি ভারতের প্রথম নারী প্রকৌশলী ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট! প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডা লিস্ট! আরও পড়াশোনা করেছেন, কিন্তু নারী প্রকৌশলী বলে চাকরি নাই! কোথাও চাকুরী মিলে না, তখন প্রকৌশলী সুধা কুলকার্নি টাটায় একটা বিজ্ঞাপন দেখেন, “ইঞ্জিনিয়ার চাই কিন্তু নারীর দরখাস্ত নিষেধ!”বাংলাদেশের কোন মসজিদ গেটে ঝুলানো দেখেছি ” নারী ও কুকুর প্রবেশ নিষেধ “!
সুধা কুলকার্নি খেপে যেয়ে টাটাকে একটা ব্যক্তিগত চিঠি লেখেন এবং টাটা তাকে চাকুরী দেন টাটার সবচেয়ে বড় পদ একদিন দখল করেন তিনি! কুরআন গীতা বেদ বাইবেল তানাখ সব ধর্মের ধর্মগ্রন্থ বলেছে, ” জীবন সবাইকে নিয়ে, আমি তুমি সে! কিন্তু আমরা জীবন বেছে নিয়েছি জীবন ব্যক্তিকেন্দ্রিক, “আমি আমি এবং আমি!” সম্পদ জমাচ্ছি আমার ছেলে-মেয়ে সন্তানের জন্য, তাতে অন্যের অধিকার জানি ই না! ধর্মের কথা মানছি না কিন্তু মসজিদ মন্দির গীর্জায় দৌড়ে আগে ছুটছি!
“প্রকৌশলী সুধা কুলকার্নি বিশ্বাস করতেন তার সম্পদের ভিতর অন্যের রিজিক আছে, তাই তিনি তার সম্পদ অর্ধেক জনকল্যাণে ব্যয় করে দিতেন! তিনি ৭০০০ লাইব্রেরি করে দিয়েছেন সারা দেশে! ৫০০০ পাবলিক টয়লেট করে দিয়েছেন সারা শহরে, দাতব্য চিকিসালয়, আরও অনেক কিছু যা আমি টেনে আনলাম না, সবই তার ও স্বামীর ব্যক্তিগত পয়সায়! আপনি ঢাকা শহরে যে দশ তলা বিল্ডিং করে ভাড়া খাচ্ছেন, তার নিচের ফ্লোরে গ্যারেজের বাকী ফ্লোরটা একটা লাইব্রেরি করে দিন! মানুষ জ্ঞান আহরনে সমৃদ্ধ হোক! এমন এই রাজধানী তে সদয় বান কোনকোন মানুষ করেছেন, সেখানে বয়স্কদের আড্ডা হয়! আরও দু’দিন বেঁচে থাকার এবং পড়াশোনা করার, জানার ব্যবস্হা হয়! সে যাক, চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি! স্মর্তব্য, আমি বিখ্যাত উপন্যাসে ” আনোয়ারা মনোয়ারা” পড়েছি ৬ষ্ঠ ৭ম শ্রেনীতে আমার নিজ গ্রামের লাইব্রেরী থেকে ইসু করে নিয়ে, সাতদিনে ফেরত চুক্তি তে! সে লাইব্রেরী তে হৃদয় বান লোকেরা বই কিনে দিতেন, প্রায় একশো বই দেখেছি!
আমার বিষয়বস্তু নারীর শেষ অবস্থান! আমার এক আপনজন ডবল এমআরসিপি ডাক্তার! এখন ও ইউনাইটেড এ কর্মরত অবসর জীবনে! তার সহধর্মিণী ডাক্তার, তিন মেয়ে আমেরিকায় ডাক্তার ও কর্মরত!
তিনি এখন ও ভাত পাকান, পাক্কা গৃহিণী! মেহমান গেলে নিজে দায়িত্ব নেন! এই দম্পতি বছর পাঁচ ইরানে ডাক্তারি জব করেছেন (রেজা শাহ রাজ্যত্বকালে), পরবর্তী তে সৌদি আরব প্রায় ২০/২১ বছর ! মানব উপকার করেন, আমি অসুস্থ হলে আমার সহধর্মিণী একা আমাকে নিয়ে দিল্লি রওয়ানা হলেন সাথে অফিস পিএস আমার! ভাবী নিজ ইচ্ছায় সঙ্গী হলেন! আমার আপন জনেরা এগিয়ে আসে নাই, আপনি নিজে বুকে হাত দিয়ে বলুন, পারবেন আপনি আপনার স্ত্রী কে এমন কারো উপকারে, সাথে পাঠাতে? ভাই বেবী স্পেশালিষ্ট, আমার ছেলেকে ১৩/১৪ বছর পর্যন্ত ফ্রী চিকিৎসা দিছেন!
ভারতের সুধা কুলকার্নি নিজস্ব ফার্মের এমডি এবং সংসার করেন! ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন কত সাধারণ জীবন তার এবং রাধুনি! তাই বলছিলাম দুষ্ট স্বরে সোহাগ ভরে,
” ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে!”
যত বড় হোন না কেন
নিজেই নিজের হেঁশেল ঠেলে!
তবে WOMAN থেকে MAN হতে পারে খুব কম জনে!