বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন

‎ঝুপড়ি ঘরে বসবাস, অবশেষে অসহায় খোকন পেলো নতুন ঘর

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫
  • ২৭ Time View


‎মোঃ আল আমিন, হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

‎দীর্ঘদিন ধরে একটি ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিলেন হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের চৌদার গ্রামের অসহায় ও কর্মহীন খোকন মিয়া। কাঠ, টিন ও পলিথিনে তৈরি সেই অস্থায়ী ঘরটি ছিল তার একমাত্র আশ্রয়। বর্ষার সময় ছাউনি দিয়ে বৃষ্টির পানি আটকাতে হতো, আর শীতে ঘরের ফাঁকফোকর দিয়ে ঠান্ডা ঢুকতো অবলীলায়। সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে অসহায় এই মানুষটি দিনের পর দিন জীবনের কঠিন বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছিলেন।

‎তবে সেই লড়াইয়ের চিত্র বদলে দেয় একজন মানবিক মানুষের সাহসী উদ্যোগ। উপজেলার পিতলগঞ্জ এলাকার তরুণ সমাজসেবক এসএম মিজানুর রহমান মামুন এগিয়ে আসেন খোকনের পাশে। নিজের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মানুষের সহানুভূতি আর ভালোবাসাকে পুঁজি করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন খোকনের অসহায় জীবনের চিত্র তুলে ধরে। তার সেই পোস্টে সাড়া দেন দেশের ভেতরের অনেকেই, বিশেষ করে প্রবাসে অবস্থানরত অনেক হৃদয়বান ব্যক্তি।

‎সোমবার (৩০ জুন) সকালে খোকন মিয়ার হাতে নতুন ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়।

কবি, ‎মামুন বলেন,’বারবার পোস্ট দিয়েছি, মানুষের দরজায় গিয়েছি। অনেক সময় অপমান সহ্য করেছি,কেউ সাহায্য করেছেন হাসিমুখে, কেউ আবার কটাক্ষ করেছেন। তবুও হাল ছাড়িনি। ধাপে ধাপে কাজ করেছি। কেউ ২০০ টাকা দিয়েছেন, কেউ ৫০০০ টাকা পাঠিয়েছেন। সব কিছুর সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই আজ খোকনের জন্য মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।’ তার এ ঘর নির্মাণে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রায় চার মাসের চেষ্টায় সম্পন্ন হয়েছে ঘরের নির্মাণকাজ। এতে রয়েছে দুইটি কক্ষ। টিনের ছাউনি, শক্ত মাটির মেঝে ও দরজা জানালার ব্যবস্থা সহ একেবারে বসবাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে খোকনের জন্য।’

‎তিনি আরও বলেন,’এই ঘর শুধু ইট, কাঠ আর টিন দিয়ে তৈরি না—এটা ভালোবাসা, সহানুভূতি আর মানুষের একসঙ্গে এগিয়ে আসার প্রতীক।’

‎স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মামুনের এই মহতী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা বলেন,আজকের দিনে যেখানে মানুষ নিজের প্রয়োজন নিয়েই ব্যস্ত, সেখানে একজন তরুণের এই মানবিক উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সমাজের জন্য অনুকরণীয়। এ ধরনের উদ্যোগগুলো অন্যদেরও উৎসাহিত করবে।

‎নতুন ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত খোকন মিয়া বলেন,’জীবনে ভাবিনি এমন একটা ঘরে একদিন থাকবো। মামুন ভাই শুধু ঘর দেননি, নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। যেসব ভাই-বন্ধু টাকা দিয়েছেন, বিশেষ করে প্রবাসীরা—তাদের জন্য আমি সারা জীবন দোয়া করবো। আল্লাহ যেন তাদের ভালো রাখেন।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102