শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সাংবাদিক আবু মিয়ার পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শিরনী বিতরণ ও দোয়া মাহফিল নিয়ামতপুরে নাতির ভাসমান মরদেহ দেখে মারা গেলেন দাদাও নিয়ামতপুর দলিল লেখক সমিতি নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন সৌহার্দ্য বিশ্বাস এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ অর্জন করায় খুলনা আর্ট একাডেমির প্রাক্তন শিক্ষার্থী শুভদ্বীত মন্ডল ও সুব্রত কুমার মন্ডল ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কবিতাঃ ভুলে গেলে সব? জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষনা আরিফুল হক চৌধুরীর পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে রিজিকের পরিচয় ডুমুরিয়ার খর্ণিয়ায় খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া -ফুলতলা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ আলি আসগার লবির স্লূইচ গেট পরিদর্শন নড়াইলে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি’র উপস্থিতিতে জেলা পুলিশ লাইন্স এ বার্ষিক পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ঢাকায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে খুনের পর লাশের ওপর পৈশাচিক আচরণ!

ভূতের নৌকা পরীদের দখলে (একটি রূপকথার গল্প)

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৫ Time View

 

অথই নূরুল আমিন

মহুলা ভূত রাজ্য। এই রাজ্যটির চারদিকে ছিল শুধু সাগর, সাগর আর সাগর। সেই সাগরের উপকূলে রয়েছে একটি ছোট্ট জঙ্গল। আর তার পাশে ছিল বিশাল একটি ফুলের বাগান। হাতে গোনা কয়েকটি ভূত পরিবার বসবাস করত। যেহেতু এই রাজ্যের চারদিকে ছিল সাগর। তাই সকল ভূতেরা সবাই মিলে চলাচলের জন্য একটি মনোরম নৌকা তৈরি করেছে। এই নৌকা দিয়ে ভূতেরা মাঝে মাঝে এদিক-ওদিক ঘুরতে যায়। কখনো গভীর সাগর থেকে বড় বড় মাছ, হাঙ্গর, কুমির শিকার করে। কখনো গভীর রাতে ভূতেরা এই নৌকাতেই রাত যাপন করে। এরকম বিভিন্নভাবে তাদের তৈরি নৌকাটি ব্যবহার করে।

উপকূলের পাশে থাকা ফুলের বাগানে নানা জাতের ফুলের সমারোহ। সেই বাগানে মাঝে মাঝে পরীরা নানা ঢঙের গান গায়, খেলা করে। এদিকে ভূতেরা শখ করে দুটি গাভী লালন পালন করে। এই দুটি গাভীকে প্রায় সময় ফুল বাগানের আশে পাশে নির্দিষ্ট একজন ভূত সবসময় রেখে দেয় আবার সন্ধ্যা হবার আগে এসে নিয়ে যায়। মাঝে মাঝে গাভী দুটিকে নৌকায় উঠিয়ে নদীর ওপারে নিয়ে যায়। এই পাতী দুটি দেখাশোনা করে যে ভূত তার নাম হলার ভূত। এই রাজ্যে হলার ভূত বলেই সে পরিচিত। এই হলার ভূত খুব শক্তিশালী একজন ভূত। এই হলার ভূত গাভী দুটিকে মাঝে মাঝে প্রহার করে। গাভীগুলো তখন খুব কষ্ট পায়।

আজকেও গাভীগুলোকে ফুল বাগানের পাশে এসে ঘাস খাওয়ার জন্য রেখে গেছে। কিন্তু সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। গাভী দুটি নিতে হলার ভূত এখনো এলো না। এদিকে প্রতিদিনের মতো আজও পরীরা ফুল বাগানে ঘুরতে এসেছে। জাঁ পরী, সাঁ পরী, তাঁ পরী। এই পরীরা বাগানে খেলাধুলা করছে। বাগানের পাশে দুটি গাভী দেখে কৌতূহলবশত জিজ্ঞাসা করছে।

জাঁ পরী: কি গাভী ভাই! তোমরা এখানে কি করছ এখনো? তোমাদের মালিকরা কোথায়?
সাঁ পরী: এটাতো একটা ভূতরাজ্য মনে হয়। ভূতেরা কেউ গাভী দুটি লালন পালন করে হয়তো।

তাঁ পরী: কোন মালিক না থাকলে সাথে করে নিয়ে যাব আমাদের দেশে।
সাদা গাভী: তাই কর পরীরা। তাই কর। আমাদেরকে যে ভূত লালন পালন করে তার নাম হলার ভূত। প্রতিদিন আমাদেরকে আঘাত করে। এমনকি পেট ভরে খেতে
পর্যন্ত দেয় না।

কালো গাভী: জানো পরীরা, ভূতদের একটি নৌকা আছে। ঐ নৌকায় উঠিয়ে আমাদেরকে মাঝে মাঝে ওপারে নিয়ে যায়। তারপর মাঝ নদীতে নিয়ে আমাদেরকে অনেক ভয় দেখায়। নদীতে ফেলে আমাদেরকে মেরে ফেলতে চায়।

জাঁ পরী: কেন? কেন তোমাদেরকে মেরে ফেলতে চায়? তোমাদের অপরাধ কি? সাদা গাভী: অপরাধ হলো আমরা প্রজনন দিতে ব্যর্থ তাই।

কালো গাভী: জানো পরীরা, এই ভূতেরা আমাদের ভাষা বোঝে না। আমরা জাতে গাভী গরু। প্রজনন করতে হলে পুরুষ গরু দরকার। এই ভূতের রাজ্যে আর কোন গরু নেই। তাহলে আমরা প্রজনন করব কিভাবে?
সাঁ পরী: তাহলে তোমাদেরকে ভূতেরা খেয়ে ফেলে না কেন?
জাঁ পরী: তাইতো। তোমাদেরকে তো ভূতেরা খেয়ে ফেলতে পারে? তা করে না কেন?
তাঁ পরী: একটি গাভী তো যেকোনো একটি ভূতেই খেয়ে ফেলতে পারে ইচ্ছা করলে।

সাদা গাভী: না পরী। এই রাজ্যের ভূতেরা গরু খায় না। এছাড়া এই বনের পশু পাখি সব খেয়ে সাবার করে দিয়েছে। ওরা খুবই অত্যাচারী। আমাদেরকে তোমরা বাঁচাও পরী! তোমরা বাঁচাও।

সাঁ পরী: তা কি করে সম্ভব! আমরা তোমাদেরকে এখান থেকে নিয়ে যেতে পারবো না। সেই ক্ষমতা তো আমাদের নেই।
কালো গাভী: তোমরা তো অনেক যাদু জানো। ভূতের এই নৌকায় আমরা উঠি আর তোমাদের জাদু দিয়ে নৌকাটা সাগরের ওপারে পৌঁছে দিতে পারবেনা? তখন আমরা অন্য কোন রাজ্যে চলে যাব। তাঁ পরী: ঠিক আছে তাই করব। আমার যাদুর ক্ষমতা অনেক বেশি। সেই যাদু দিয়ে এই নৌকাটি নদীর ওপারে কেন? পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে পৌঁছে দিব। এমনকি আমাদের দেশে পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারব।

সাদা গাভী: তাই কর দয়ালু পরীরা। তাই কর।
পরীদের পরামর্শ মতে গাভীগুলো সেই ভূতের নৌকার কাছে এলো এবং নৌকায় উঠল। এদিকে ভূতেরা একটি বড় গাছের নিচে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন এমন সময় ভূতের সর্দার হলার ভূতকে জিজ্ঞাসা করলো।

সর্দার: হলার… গাভীগুলো কোথায়?
হলার ভূত: গাভীগুলো কালকে আনতে যাইনি সর্দার। ফুল বাগানের কাছেই আছে। সর্দার: ফুল বাগানে তো পরীরা আসে। এখন আমি পরীদের গন্ধ পাচ্ছি। ওরা আবার কেরামতি করেনি তো?
হলার ভূত: তা তো বলতে পারবোনা সর্দার।
সর্দার: চল তো ফুল বাগানে।

দৃশ্য: নৌকার মাঝে গাভী আছে। নৌকা ধীরে ধীরে চলছে। ভূতেরা এসে দেখল তাদের নৌকা ও গাভি দুটো হাত ছাড়া হবার পালা।
সর্দার: এই বেয়াদব পরীর দল। তোমরা আমাদের সাথে চালাকি করছো। আজ তোমাদেরকে এখানে বন্দি করব। নতুবা তাঁ পরীকে ফেরাও। আমাদের নৌকা।
আমাদের গাভী ফেরত দাও।

জাঁ পরী: দেখ অসভ্য ভূতের সর্দার। আমাদেরকে বন্ধি করার চেষ্টা করিস না। তাহলে আমার যাদুর হাত থেকে তোরা কেউ বাঁচতে পারবি না।
হলার: কি! এত বড় কথা?

হলার ভূত তার মুখ থেকে আগুনের গোলা বের করতে লাগলো। জাঁ পরী, সাঁ পরী, তাঁ পরী তাদের হাতে থাকা মমকাঠি ধারা প্রতিহত করতে লাগল। এদিকে ভূতের সর্দারসহ ভূতেরা চারজন পরীদের সাথে তুমুল যুদ্ধে লিপ্ত হল। সর্দার আহত হলো। হলার ভূত নিহত হল।

সাঁ পরী নৌকা নিয়ে নিরুদ্দেশ হলো। জাঁ পরী, তাঁ পরী তারা পাখা মেলে উড়ে চলে গেল। ভূতের নৌকা পরীদের দখলে গল্পটি এখানেই শেষ হলো।
বি: দ্র: গল্পটি এনিমেশন কার্টুন। অনূআর ঝুলি ইউটিউব চ‍্যানেলে প্রচারিত। এবং অনূআর ঝুলি ২ বই থেকে সংগৃহিত।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102