কলমে: শামীমা বেগম
আমি অগ্নিপুত্রীর কণ্ঠ, ঝঞ্ঝার ঝঙ্কার, দগ্ধ আর্তনাদ,
আমি তীব্র তমসা ভেদি উঠা এক তাপসী প্রলয়বাগ্!
পদে পদে জ্বলন্ত কাঁটা, ছিন্ন পল্লব, রক্ত-ছোপা ধূলি,
সেই পথে ধ্বনি তুলেছি—”জাগো, রুখো, দাও জবাব বুলি!”
আমি গিয়েছি শোষণের শ্মশান বেয়ে, ক্লান্তিহীন রথে,
যেখানে স্বপ্ন ভিক্ষাপাত্রে, খোঞ্জানো হয় ক্ষুধার তটে।
কবিতা নয়, এ উন্মত্ত বজ্রনিনাদ, কলম নয়, তরবারি,
শব্দে শব্দে শাসক-বক্ষ বিদীর্ণ করে জাগে নারী!
তোমার প্রেম যদি শৃঙ্খলে বাঁধা, তবে সে প্রেম অভিশাপ,
আমার প্রেম—অগ্নির পুণ্য, বিদ্রোহ-নিষিক্ত চিতার ছাপ।
যেখানে মানবতা নগ্ন, ন্যায়বিচার করে মুখোশ পরিধান,
সেখানে কবিতাই বিপ্লব—কণ্ঠে কণ্ঠে ধ্বনিত ঘোষণা-প্রমাণ!
দাও ধ্বংস, দাও পুড়িয়ে, দাও ছাইভস্ম রাজার অট্টালিকা,
আমি জ্বালাবো এক নতুন সূর্য, মৃতের বুকেই জাগুক সুরঝুরিকা।
চায় যদি সভ্যতা শব্দের সুধা, তবে শোন—আমার কণ্ঠস্বরে,
লুকিয়ে আছে এক কসাইখানা, নৃশংস সুন্দর কবিতার প’রে!
হে যুগ! ভয় করো, আমি আসি, রক্তে ধৌত অগ্নিবাণে!
জাগো পাষাণ, ভাঙো চিহ্ন—প্রলয় গৃহে রচি নতুন গানে।
এই “অগ্নিপথে” পদচিহ্ন নয়, বিজয়ীর বর্শা গেঁথে দেই,
সেই কাব্যেরে করো প্রণাম—যেখানে নীরবতাই চিৎকার হয়ে ওঠে বই!