খুলনা অফিস:
বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) খুলনা শাখার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭.০০ টায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাপা’র জাতীয় পরিষদ সদস্য ও খুলনা শাখার সমন্বয়কারী এবং খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডঃ মোঃ বাবুল হাওলাদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সংগঠনের সদস্য যথাক্রমে আইন ও অধিকার বাস্তবায়ন ফোরামের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি এস এম দেলোয়ার হোসেন, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম আলহাজ্ব এফ এম মনিরুজ্জামান, প্রধান শিক্ষক কবি সাঈদা পারভীন, মানবাধিকার সংগঠক মোঃ জামাল মোড়ল, শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাদিয়া আক্তার শিমু, কারিগরি প্রশিক্ষক মোঃ আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাঘ শুধুমাত্র ঐতিহ্য বা সৌন্দর্যের জন্যই নয়, এ অমূল্য সম্পদ রক্ষা করতে হবে আমাদের জীবন-জীবিকার স্বার্থে। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পাহারাদার হিসেবে বাঘ রক্ষা করতে হবে সুন্দরবন এবং এর প্রতিবেশ ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য। সুন্দরবনের বাঘ রক্ষা করতে হলে এর বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় নজর দিতে হবে। খাদ্য শৃঙ্খল ভেঙ্গে পড়লে বাঘ খাদ্য সঙ্কটে পড়বে এবং এর সংখ্যা কমে যাবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং শুধুমাত্র বাঘ শিকার বন্ধ নয়, বন্ধ করতে হবে হরিণসহ বনের সকল প্রাণী হত্যা। খাল-নদীতে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারও বন্ধ করতে হবে কঠোর হস্তে। সুন্দরবনের আশপাশের ক্ষতিকর স্থাপনা এবং এর অভ্যন্তরে জলযানের অবাধ যাতায়াত, দূষণ, শব্দ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাঘসহ বনের সকল প্রাণীর বসবাস উপযোগী একটি পরিবেশ তৈরী করতে হবে। অন্যথায় বাঘসহ সকল প্রাণী এদের প্রজনন ক্ষমতা হারাবে ও অকালে মারা যাবে, যা ইতোপূর্বে ঘটেছে এবং ঘটছে। বক্তারা বাঘ গণনার পদ্ধতি নিয়েও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এ গণনা হতে হবে আধুনিক, আরো বেশী প্রমাণ নির্ভর। বাঘ রক্ষা করতে হলে চোরা শিকারীদের দমন করতে হবে কঠোর হস্তে। সেজন্য আইনের কঠোর প্রয়োগের কোন বিকল্প নেই। কর্তব্যরত দপ্তরগুলোকে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আনতে হবে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার আওতায়। বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এব্যাপারে আরোও বেশী দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশকারী সকল পর্যায়ের মানুষকে সচেতন করে সুন্দরবন বিনাশী কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে হবে। বক্তারা এব্যাপারে সরকারের প্রতি সচেতনতামূলক কর্মসূচী গ্রহণের আহ্বান জানান।