কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
আমার জীবনের গোপন কথা শুনলো নাতো কেউ
নারীর বুকের অতৃপ্ত ব্যথায়, তুললো নাতো, কারো মনে ঢেউ?
কাকে বলি চার দেয়ালে, তেমন বান্ধব কই
চারিদিকে ভুজঙ্গের জিহ্বা, কাকে বলি, আমি ভালো নেই !
আমি মাইকেলের শর্মিষ্ঠা নই, জীবনানন্দের বনলতা ও-নই
কিশোরী ‘ভবতারিণী’ থেকে “মৃণালিনী” হওয়ার ব্যথা কাকে কই?
রবিঠাকুরের অনেক প্রেমিকের ভীড়ে, কখনওই ছিলামনা তার বিশাল হৃদয় তীরে
আমি “সেরেস্তাদারের মেয়ে” কখনওই মূল্যায়িত হইনি পতি পরমেশ্বরের নীড়ে!
ছিলাম হেঁশেল ঠেলা রাধুনি, একা আড়ালে আবডালে, কাঁদুনি!
সন্তান পালনের আয়া হলে-ও সন্ধ্যার পরের সাজনি!
পাচ বছরে দশ সন্তান পরিকল্পিত ছিলো ডিপ ফ্রিজ আতুড়ঘর
আলো-বাতাসহীন সেঁতসেঁতে একাকিত্ব কয়েদির কারাগার!
ঘরবাঁধার চারমাস পার, নিরবে বিষ পানে আত্মহত্যা “কাদম্বিনী দেবী”,
যেন দেব দাসের পার্বতী চলে গেলেন পরোপার, নিশ্চুপ নির্বাক কবি!
মন খুলে বলেনি কোনদিন কথা, ‘ইন্দ্রাণী’ ‘জ্ঞানদান নন্দিনী’ তখনও তার হৃদয় গাথা
কক্ষের কপাট ভেঙে লাশের পাশে দু’টো চিঠি, ভাষা নয় যেন প্রেমের নকশিকাঁথা!
বাকী জীবন বিষাদের ছায়া ছিলো, তোমাদের রবিঠাকুরের চোখে-মুখে
ক্ষণিকের ভাবনা নারী হৃদয়, এবার বুঝি থাকবো আমি সুখে!!
যশোরের ফুলতলীর ‘বেণী মাধবের’ মেয়ে আমি, ‘ভবতারিণী’
মৃণালিনী খোলসে শেষ সন্তান দিতে আলো-বাতাসহীন ঘরে চলে গেলাম আমি এক ভবতরণী!
ঠাকুর বাড়ীর দেয়াল টপকে মৃত্যু সংবাদ পৌঁছে বড় ধীরে
থাকেনা শোকের মাতম, সব ঠিকঠাকমতো চলে, যে যায় কারো মুখে আসে না ফিরে!
উনিশ-বিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে না-পাওয়ার পাল্লা বড় ভারি
বড় ব্যাথে নিয়ে, জীবন ডুবসাঁতারে হেরে, ওপার দিলাম পাড়ি!