মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহ, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট। সারা দেশের মতো উত্তাল হয়ে ওঠে নীলফামারীও। রাস্তায় নেমে আসে ছাত্র-জনতা, গর্জে ওঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। শহরের একাধিক পয়েন্টে চলতে থাকে জোরালো আন্দোলন। এক পর্যায়ে শুরু হয় সংঘ*র্ষ। আর ঠিক সেই মুহূর্তে “নীলফামারী নিউজ টাইম”-এ আন্দোলনের লাইভ কাভারেজ করছিলেন সাংবাদিক আবু রায়হান।
লাইভ চলাকালীন হঠাৎ সংঘ*র্ষে গুরুতর আ*হত হন রায়হান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রথমে তাঁকে ভর্তি করা হয় নীলফামারী সদর হাসপাতালে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় রংপুর ও সেখান থেকে ঢাকার সিএমএইচে (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল)।
সিএমএইচে এখনও চিকিৎসাধীন রায়হান। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়। তাঁর কথায় উঠে এসেছে এই য-ন্ত্রণাময় পথচলার বাস্তবতা:
“সিএমএইচে চিকিৎসা চলাকালীন তিনটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। প্রতিবারই পরামর্শ দেওয়া হয় বিদেশে উন্নত চিকিৎসার। কিন্তু শারীরিক অক্ষমতা ও আর্থিক সীমাবদ্ধতা আমাকে একপ্রকার অচল করে দিয়েছে।”
এই কঠিন সময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরু থেকেই আহতদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে সিএমএইচে। শুধু বিনামূল্যে চিকিৎসা নয়, অনেককে দেওয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তাও। ব্যস্ততার মধ্যেও সেনাবাহিনী প্রধান নিয়মিত সিএমএইচ পরিদর্শন করে আহতদের খোঁজখবর নিয়েছেন, দিয়েছেন সাহস ও আশ্বাস।
আবু রায়হান আরও বলেন—
“আমাদের মতো আহতদের জন্য দুইজন মানুষ হয়ে উঠেছেন আশার আলো—নুসরাত আপা ও ইমরান ভাই। তাঁরা শুধু দায়িত্ব নয়, মানবিকতা থেকে আমাদের পাশে থেকেছেন। পরিবারের দায়িত্ব, ব্যক্তিগত আরাম, এমনকি ক্যারিয়ার—সব কিছু পেছনে ফেলে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন আন্দোলনের আহত সৈনিকদের জন্য। এই ত্যাগ, সহানুভূতি এবং সাহসিকতা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।”
তবে এখানেই শেষ নয়, রয়ে যায় কিছু জ্ব*লন্ত প্রশ্ন—
বাংলাদেশের মানুষ, রাষ্ট্র কিংবা রাজনৈতিক সংগঠনগুলো কি মনে রেখেছে এই আন্দোলনের আ*হত শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক, পথচারী, রিকশাচালক, কবি কিংবা লেখকদের ত্যাগ? তারা কি পেয়েছে সেই আ*ত্ম*ত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি?
এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো দেবে ভবিষ্যৎ। তবে ইতিহাস আজই লিখে রাখছে—
২০২৪-২৫ সালের বাংলাদেশে একটি নতুন প্রজন্ম অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলো। আর তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো কি