শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
সুনামগঞ্জে মেধাবী ছাত্র ও প্রতিভাবান ফুটবলার সালমানের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন মধ্যনগর থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১০১ পিস ভারতীয় কাপড় জব্দ গ্রেফতার ১ জামালগঞ্জে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংগঠনিক প্রস্তুতি সভা বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী সবুজ তরফদার এর ছবি এঁকে উপহার দিলেন চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস জগন্নাথপুরের মিরপুর বাজারে সাংবাদিক ও সংগঠক আহমেদ হোসাইন ছানু’র সাথে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় মামার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু: সুনামগঞ্জে বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে সংস্কৃতিসেবীদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরন পিআর চালু হলে দেশে আর কোনো স্থানীয় নেতার জন্ম হবে না: রিজভী শাসক পরিবর্তন হয়, চরিত্র পরিবর্তন হয় না! প্রাকৃতিক স্নিগ্ধতার সুরভি

মহররম ও আশুরার ফজিলত, করণীয় বর্জনীয়

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫
  • ১৬ Time View

লেখক: হাফিজ মাওলানা আমিনুল হক (সাংবাদিক)

মহররম অর্থ সম্মানিত। এ মাসকে আল্লাহর মাস বলা হয়েছে। এ মাসের দশ তারিখকে আশুরা বলা হয়।

পৃথিবীর শুরু থেকে যুগে যুগে আশুরা দিবসে বহু স্মরণীয় ও ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। মহান আল্লাহ যেদিন আকাশ, বাতাস, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, জান্নাত-জাহান্নাম, লাউহে মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্টি-জীবের আত্মা সৃষ্টি করেছিলেন সে দিনটি ছিল ১০ মহররম তথা পবিত্র আশুরার দিন।

আরবি সনের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখকে পবিত্র আশুরা বলা হয়।

আশুরা আরবি শব্দ। আশারা থেকে আশুরা শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ হচ্ছে দশ। আরবি সনের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখকে পবিত্র আশুরা বলা হয়।

আশুরার অনেক ফজিলত রয়েছে। আশুরার দিনে কারবালার প্রান্তরে দ্বিন প্রতিষ্ঠার জন্য হজরত হুসাইন রা. শাহাদাত বরণ করার কারণে এ দিনটি আরো স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
মহাররম ও আশুরার ফজিলত অনেক বেশি।
মহাররম ও আশুরার ফজিলত অনেক বেশি।

কিন্তু শিয়া সম্প্রদায় হুসাইন রা. এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে মর্যাদাপূর্ণ এ দিনটিতে শোক মিছিলের নামে ব্যাপক শিরক বিদআত করে মুসলমানদেরকে বেঈমান বানানোর চক্রান্ত চালাচ্ছে। তাই মহাররম ও আশুরার ফজিলত, করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা প্রয়োজন। আল্লাহ সবাইকে শিরক ও বিদআতমুক্ত ঈমান নসিব করুন। আমিন।

মহাররম ও আশুরার ফজিলত:

১. রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন- যে মহাররম মাসে একটি রোজা রাখে, আল্লাহ তাকে ৩০টি রোজা রাখার সমান সওয়াব দান করেন। (তারগিব-১৫২৯)

২. রসুল (সা.) ইরশাদ করেন- আমি আশা করি যে, আশুরার রোজার উসিলায় আল্লাহ অতীতের এক বৎসরের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। (সহিহ মুসলিম ১১৬২)

আশুরার দিনে করণীয়:

১. আশুরার আগে বা পরে (৯-১০ বা ১০-১১) মিলিয়ে দুটি রোজা রাখা। (মুসনাদে আহমদ-২১৫৪)
২. বেশী বেশী তাওবা ইস্তিগফার করা। (জামে তিরমিজি-৭৪১)
৩. পরিবারের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা। (তারগিব-১৫৩৬)

আশুরার দিনে বর্জনীয়
১. মহাররমের চাঁদ উঠতেই ঢোল পিটানো নাজায়েজ এবং হারাম। (লি আহকামিল কোরআন পৃ. ৫৩)
২. শোক মিছিল বা র‍্যালি বের করা নাজায়েজ। (সহিহ বুখারি-৫৩৩৪)

৩. তাজিয়া, মাজারবড তৈরি করা শিরক। (সুরা হাদিদ-৪) ৪. তাজিয়ার মিছিলে মান্নত করা হারাম। (সুরা বাইয়্যেনাহ-৫) ৫. মিছিলে ঘোড়ার পায়ে দুধ ঢালা হারাম। (সুরা বানি ইসরাইল-২৭) ৬.এ মিছিল দেখতে যাওয়া এবং সাহায্য সহযোগিতা করা সম্পূর্ণ হারাম। (সুরা মায়েদা-৫)

শিরক-বিদআতের পরিনাম আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন- নিশ্চয় আল্লাহ তার সাথে অংশীদার (শিরক) করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যার জন্য ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। আর যে কেউ আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন (শিরক) করে, সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়। (নিসা, ১১৬)

হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে-তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে জীবিত থাকবে তারা অচিরেই প্রচুর মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নাত এবং আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলিফাহগণের সুন্নাত অনুসরণ করবে, তা দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে। তোমরা (ধর্মের নামে) নব আবিষ্কৃত বিষয় সম্পর্কে খুব সতর্কতার সাথে বেঁচে থাকবে! কারণ প্রতিটি নব আবিষ্কৃত বিষয় হলো বিদ’আত এবং প্রতিটি বিদআত হলো (গুমরাহী বা পথ) ভ্রষ্টতা। (আবু দাউদ, হা নং৪৬০৭) আর প্রতিটি ভ্রষ্টতার ঠিকানা হল জাহান্নাম। (ইবনে মাজাহ, হা নং ১৫৮১)

আশুরার রোজার ফজিলত

হিজরি সনের শিক্ষা নিয়ে কুরআন সুন্নাহের আলোকে
আশুরার রোজা রাখার সঠিক নিয়ম কানুন তূলে ধরছি:

আশুরার রোজা রাখার সঠিক নিয়ম হলো–

দুটি রোজা রাখতে হবে। মহররমের ১০ তারিখ রোববার (৬ জুলাই) একটি, আর এর আগে মহররমের ৯ তারিখ শনিবার (৫ জুলাই) অথবা পরের দিন মহররমের ১১ তারিখ সোমবার (৭ জুলাই আরও একটি।

ইমাম বুখারি (রহ.) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করে মদিনায় পৌঁছে মদিনার ইহুদিদের আশুরার দিনে রোজা পালন করতে দেখেন।

নবীজি তাদের জিজ্ঞেস করেন, এ দিনে কী ঘটেছে যে তোমরা এতে রোজা পালন করো? তারা বলে, এই দিনটি অনেক বড় দিন, এ দিনে মহান আল্লাহ মুসা (আ.) ও তার সঙ্গীদের ফিরাউন থেকে মুক্ত করেছিলেন এবং ফিরাউন ও তার বাহিনীকে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মুসা (আ.) রোজা রাখতেন, তাই আমরাও আশুরার রোজা পালন করে থাকি। ইহুদিদের জবাব শুনে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুসা (আ.)-এর কৃতজ্ঞতার অনুসরণে আমরা তাদের চেয়ে বেশি যত্নশীল হওয়ার অধিকারী। অতঃপর তিনি নিজেও আশুরার রোজা রাখেন এবং মুসলমানদের তা পালন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। (বুখারি: ৩৩৯৭; মুসলিম: ১১৩৯)

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই রোজা নিজে পালন করেছেন এবং উম্মতকে রাখার প্রতি নির্দেশ করেছেন, তাই তার অনুসরণ করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, হে আল্লাহর রসুল, বিধর্মীরা তো এই দিনটিকে বড় দিন মনে করে। এই দিনে তারাও রোজা পালন করে। আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি তাহলে তো এদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে। তাদের প্রশ্নের জবাবে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারা যেহেতু এদিন একটি রোজা পালন করে, আগামী বছর ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করব, ইনশাআল্লাহ। (মুসলিম: ১১৩৪)

আরেক বর্ণনায় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো, তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সঙ্গে মিল না হওয়ার জন্য ১০ তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরও একটি রোজা রেখে নিও। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৪)

উপরোক্ত হাদিসের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, আশুরার রোজা দুটি রাখতে হবে। মহররমের ১০ তারিখ একটি, আর এর আগে মহররমের ৯ তারিখ অথবা পরের দিন মহররমের ১১ তারিখ।
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে সহিহ বুঝ এবং নেক আমলের তাওফিক দান করুক। আমীন

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102