লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
“জনাব রফিকুল ইসলাম” ছাড়া পেয়েছেন জেল থেকে! তিনি সেই সাড়া জাগানো “ডেসটিনি গ্রুপের” মালিক ছিলেন! যে গ্রুপ ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত। যার ৩৭ টা কোম্পানি ৭২২ টা ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ছিলো। ততকালীন সরকারের সাথেও বোধ-হয় দহরমমহরম ছিলো তা-না হলে পত্রিকা, টিভি চ্যানেল পেলেন, ৪০ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এগুলো ফাও করেন নাই! অনেকে আমাকে বললেন, “আরে কোথায় টাকা বিনিয়োগ করেন, ডেসটিনি তে আসেন কিছু গাছ কিনেন একদিন ডেসটিনি ডাইরেক্টর হয়ে যাবেন! আমি আমার পরিবার আলাউদ্দিন চেরাগ মানি না! তাই গেলাম না আর আমি টাকার ও মালিক না, জনগনের ভ্রম আছে আমাকে নিয়ে!
দুইমাস পর শুনলাম ২৫ লাখ গ্রাহকের ৪ কোটি টাকা হাওয়া! সরকার নড়েচড়ে বসলেন, ৫১ জন নির্বাহীর বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে! ১.৭ মিলিয়ন বিনিয়োগ কারী বৃক্ষ রোপন গাছ, বাস্তবে তাদের গাছ ছিলো ৫.৩%
৫১.১৩ বিলিয়ন টাকা পাচার (খবরে প্রকাশ)! মানি লন্ডারিং মামলা হলো, তার পরিবর্তে পাওয়া গেলো মাত্র ৮০.৪ মিলিয়ন সম্পদ, আহম্মক সরকার সারা বছর ঘুমায়ে বিলিয়নের বিরুদ্ধে মিলিয়ন জব্দ করলো! জেগেছে যখন চোর সব ছাফা করে দিয়েছে! শ্রদ্ধেয় মালিক রফিক সাহেব সম্ভাবত ২০১৪ সালে গ্রেফতার হলেন!
প্রিয় পাঠক, আমার আসল বিষয় “ছেড়ে দাও দলে নাও ” সব সামরিক সরকারের মূলনীতি! যদি প্রশ্ন করেন বর্তমান সরকার কি সামরিক সরকার? উত্তর আর্মি ব্যাক্টড সরকার, তা-না হলে কোন মন্ত্র বলে সরকার টিকে আছে! নিজ নিরাপত্তায় উপদেষ্টা কে ও AK 47 রাইফেল বিমানে ও বহন করতে হয়! তবে হ্যা, ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিন সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষ করেন নাই, দলমত নির্বিশেষে সমান দলনে পড়েছে! নিজে কোন রাজনৈতিক দল করেন নাই!
বলছিলাম ডেসটিনির রফিক সাহেব ছাড়া পেলেন। এমনি অগুনিত জন এই সরকার ছেড়ে দিয়েছেন!
মনে পড়ে, শ্রদ্ধেয় মুক্তি যোদ্ধা জিয়াউর রহমান ২১ মার্ডারারের আসামি গোপালগঞ্জের হেমায়েত কে ছেড়ে দিয়েছিলেন, হেমায়েত দিনে দুপুরে নির্মম ভাবে ন্যাপের লেবু মিয়া সহ ২১ জনকে জমি নিড়ানো টেংরি দিয়ে পিটিয়ে মগজ বের করে মেরেছিলো। গোপালগঞ্জ এসডিও তাকে গ্রেফতার করতে সাহস পান নাই, হেমায়েত সাড়ে সাত হাজার মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার ছিলেন! তিনি স্বাধীনতার পর ও অস্ত্রাগারের মালিক ছিলেন — বঙ্গবন্ধুর কানে ঘটনা পৌঁছালে স্পেশাল ফোর্স দিয়ে গ্রেফতার করেছিলেন। যাবত জীবনে জেল খাটতে ছিলেন হেমায়েত! বেকসুর খালাস!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেভেন মার্ডারের শফিউল আলম প্রধান খালাস। কনভিকটেড ১১ হাজার রাজাকার খালাস! বিচারাধীন ৩০ হাজার নির্দিষ্ট ধর্ষণ অগ্নিসংযোগ লুটতরাজ নারী সরবারহ কারী সব খালাস!
প্রিয় পাঠক, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র তৈরি ও হতদরিদ্র জনগন তটস্থ রাখার এবং নিরাপত্তা হীন অবস্থায় দিন কাটালে মাথায় আর দেশের ভালোমন্দ হিসাব আসে না, এইটাও একটা রাজনৈতিক কূটকৌশল! হয়তো সামরিক সরকারের এমন “সামরিক বাদ” এ থিওরি দেয় ! তাই ঢালাও বিগত সরকারের গ্রেফতার মানে আমার বন্ধু অতএব ছেড়ে দাও! কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন এসব ছেড়ে দেয়ায় বানিজ্য থাকে কিনা? তা থাকলে-ও থাকতে পারে! হলফ করে বলা যাবে না,”এ সরকার এমন করবেন না, অসম্ভব বুকে হাত রেখে বলা!” এমনটা বলতে পারবে এমন কিছু লোক ভেবেছিলেন বৈকি!! কিন্তু গুড়ে বালি, আশাহত —
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন!