প্রভাষক জাহিদ হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে আর কোনো স্থানীয় নেতার জন্ম হবে না। তিনি বলেন, পিআর (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দল এমপি নির্বাচন করবে। দল এমপি নির্বাচন করলে আরও বেশি স্বৈরশাসক তৈরি হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রংপুরে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) রংপুরের আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে ঐতিহাসিক ও রক্তঝরা আন্দোলনে ১৪শ লোকের মতো জীবন দিয়েছে। আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজরা জীবন দিয়েছে। বিগত ১৬ বছর কী দুর্বিসহ দিন গেছে আমাদের। ফ্যাসিবাদের সময়ে, কোন তরুণ রাতে ঘুমাতে পারেনি, কোনো তরুণের পরিবার শান্তিতে থাকতে পারেনি, কার সন্তানকে কখন ধরে নিয়ে যাবে, কাকে অদৃশ্য করে দিবে, কার লাশ তিস্তার পাড়ে, পদ্মার পাড়ে, শীতলক্ষার পাড়ে, বুড়িগঙ্গার পাড়ে পড়ে থাকবে—তার কোন নিশ্চয়তা ছিল না। শেখ হাসিনার কড়াল গ্রাস থেকে কেউ রেহাই পায়নি, তার ভয়াবহ থাবা থেকে কেউ রক্ষা পায়নি।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য ছোট ছোট বাচ্চারা অকাতরে জীবন দিয়েছিল। আমরা কি দেশের গর্ব আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজদের ভুলে যাব? যাদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদেরকে ভুলা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে দেশের স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য দরকার। তা না হলে ফ্যাসিবাদ শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। পতিত হাসিনা আবার ফিরে আসার পথ তৈরি হয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত গুম কমিশন রিপোর্ট পড়লে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়! বিরোধী নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে লাঠিপেটা করে, হাত-পায়ের নখ তুলে কিভাবে নির্যাতন করেছে! আবার কিভাবে তাদের গুম করে রেখেছিল! অমানবিক কায়দায় নারীদেরকে তুলে নিয়ে যেতো এ রক্ত পিপাসুরা। তারা কি আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসতে পারে? দেশের স্বার্থে, নিজের সন্তানদের স্বার্থে আমাদেরকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদল সহ সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহ সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নুরুন্নবী চৌধুরী মিলন, রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হক সরকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শরীফূল ইসলাম মন্ডল প্রমুখ।