নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার একমাত্র সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান — ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স — এখন অগণিত অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে। চিকিৎসাসেবা পাওয়ার কথা থাকলেও রোগীদের দুর্ভোগ, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে প্রায়ই সরব হচ্ছে স্থানীয় জনগণ।
রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে গেলে দীর্ঘসময় বসিয়ে রাখা হয়, জরুরি বিভাগেও সময়মতো চিকিৎসক পাওয়া যায় না। অনেক সময় রোগীদের প্রাথমিক সেবা দিয়েই রংপুর বা কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। জরুরি ওষুধ না থাকায় রোগীদের স্থানীয় ফার্মেসিতে দৌড়াতে হয়।
এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই সময়মতো উপস্থিত থাকেন না, আবার কেউ কেউ সরকারি দায়িত্ব পালন না করেই ব্যক্তিগত চেম্বার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিয়মিতভাবে টয়লেট অপরিচ্ছন্ন, পানির সংকট, ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত বেড না থাকা এবং নার্সদের আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।
এক স্থানীয় ভুক্তভোগী বলেন, “বাচ্চা জ্বর নিয়ে গেছিলাম। ডাক্তার ছিল না। নার্স দেখে শুধু প্যারাসিটামল দিল। সকালে নিয়ে গেছি, দুপুর গড়িয়ে গেলেও ডাক্তার দেখা মেলেনি।”
এ ব্যাপারে হাসপাতালের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমাদের জনবল সংকট আছে, বিশেষ করে চিকিৎসক পর্যায়ে। তারপরও আমরা সাধ্যমতো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে কিছু অনিয়ম হয়ে থাকলে সেটি দেখার বিষয়।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। কারো গাফিলতি থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”অন্যদিকে রোগীদের অভিযোগ হচ্ছে, হাসপাতালে যাওয়ার পরে ডাক্তাররা রোগীর চিকিৎসা না দিয়ে, বরং নিজেদের রোগী নিজেদেরকে দেখতে বলেন। এমন অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য ডাক্তারদের কাছ থেকে কখনো কাম্য নয়। স্থানীয়দের দাবি, একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হাসপাতালের এমন অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না। তারা দ্রুত সেবার মান উন্নয়ন ও দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করেন।