মো: রিমেল, বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
বিকালে মা আমাকে নিয়ে গেল যতিনদের বাড়ি।জানি না কেন নিয়ে গেল।মা কি বুঝতে পেরে গেল আজ সকালে খেলার সময় যতিনকে আমি মেরেছিলাম?মনে মনে তাই ভাবছিল তনয়।
মা কেন যতিনের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছো বল না?
তুই আয় দরকার আছে।
একটু পরে যতিনের বাড়ি গিয়ে মা বললো
কই গো যতিনের মা। ঘরে আছো নি
ভয় পেয়ে গেল তনয়।কারণ সাথে যতিন ও ছিল যতিনের মায়ের সাথে।
যতিন যদি বলে,মাকে যে আমি তাকে মেরেছি?
তনয়ের মা বলে,তুমি না সকালে বললে একটা কাচা কাঠাল দিবা?
শুনে তনয় যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল।
দাড়াও গো।দা টা নিয়ে আসি।
যতিনের মা দা খুজছে।এদিকে তনয় মাকে বলে,
মা তুমি কাঠাল দিয়ে কি করবে?
জানস না কালকে পহেলা বৈশাখ। কিছু ভালো মন্দ ত রানতে হবে।নতুন দিনে একটু সবজি রানতে হবে।আয় আমার লগে।
কালকে নববর্ষ তা তনয় জানতো না।মায়ের সাথে কাঁচা কাঁঠাল নিয়ে বাড়ি ফিরে তনয়।রাতে মাকে নানা কাছে সাহায্য করে।মাকে প্রশ্ন করে,
আচ্চা মা কালকে কি হবে?
কালকে বাংলা বছরের প্রথম দিন।আমাদের বটতলায় মেলা বসবে।সবাই অনেক আনন্দ করবে।
শুনে মন খুশি হয়ে গেল তনয়ের।রাতে শুধু বটতলার মেলার কথা কল্পনা করছে।ঘুম আসে না।মা বুঝতে পেরে বলে,তয়ন ঘুমিয়ে পড়।সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে ত।রাত হয়েছে বেশ,আচ্চা মা মেলায় কি কি বসবে?
অনেক কিছু তুই ঘুমা,,,
ঠিক আছে মা।দেখো সবার আগে উঠবো।
সকাল হয়ে গেছে।৮ টা বাজতে চলল।বাড়ির সবাই উঠে গেলেও ঘুম ভাঙ্গেনি তনয়ের।মা সকালে বলে,
উঠ না তনয়।বেলা ত বেশ হয়েছে।সবাই নতুন নতুন জামা কাপড় পরে খাওয়া দাওয়া করল যে।যতিন ও তকে ডেকে গেল।
অনেক ডাকাডাকির পরে ঘুম ভাঙ্গে তনয়ের।আচ্ছা মা বাবা কই?
তর বাবা অনেক আগেই বটতলায় গেছে।তকে অনেক ডাকলো তুই ত উঠলি না।আমাকে বললে না কেন?
যা আর আর দেরি করিস না। পুকুর থেকে গোসল করে আয়।
তাড়াহুড়ো করে গোসল করে আসলো।মায়ের রান্না করা সবজি আর হরেকরকম পদের রান্না খেয়ে বেশ মজা পেল তনয়।
সকাল সাড়ে দশটার সময় পথের অর্জুন গাছটার নিয়ে বসে তনয় অপেক্ষা করে কখন বাবা আসবে।নানা মানুষ আসে যায় তবে বাবা আসে না।একটু পরে এক দইওয়ালা আসে।বাবু জি দই নিবে?
তনয়,কত করে?
৫ টাকা।পকেটে হাত দিয়ে তনয় দেখে ৩ টাকা আছে।সকালে মা তাকে দিয়েছিল।না গো আমার কাছে ৩ টাকা আছে।
আজকে পহেলা বৈশাখ যাও তোমাকে ৩ টাকাতেই দিলাম।
তনয়ের দই শেষ তবু ও তার বাবা আসছে না।পথের ধারের অর্জুন গাছের নিচে বাশের মাচার উপরে শুয়ে পড়ল।দক্ষিণা বাতাস বেশ বইছে।
একটু পরে একজন লোক এসে বলে,
দেখো কাণ্ড ছেলেটা ঘুমিয়ে আছে কেন?
রাস্তার ধারে কেউ এমনে শুয়?
উঠ উঠ।
উঠে চোখ চুলকিয়ে বলে তুমি কি আমার বাবাকে দেখেছো?
ভালো করে দেখ,আমি ই তর বাবা।
তারপরে বলে,
বাবা তুমি আমারে মেলায় নিয়ে যাও নি কেন?
তকে ত সকালে ডাকলাম।নে ধর।একটা বাশি আর একটা খেলনা গাড়ি দিল তয়নের বাবা।ঘরের দিকে রওনা দিয়ে বলে,পথের ধারে আর এভাবে শুবে না।লোকে কি বলবে ?তাদের ঘর বাড়ি নেই?
বাড়িতে এসে মাকে বলে,,মা মেলায় যাবো।
এই দুপুরে যাবি কি করে?
সন্ধ্যায় যাস নে।যতিন এসে বলল সন্ধ্যায় তাদের পরিবার মেলায় যাবে তকে ও নিয়ে যাবে।সন্ধ্যা হওয়ার অপেক্ষায় থাকে তনয়।
যতিন এসে বলে,তনয় চল বটতলার মেলায় যাবো।তনয়ের যতিনের পরিবারের সাথে যাচ্ছে মেলায় তবে যাওয়ার সময় কল্পনা করে কি কি কিনবে আর খাবে।
দুর থেকে বটতলার বটগাছটা দেখা গেল।কাছে এসে দেখে মেলায় কেউ নেই।মেলা শেষ হয়ে গেছে।একজন লোক বলে
মেলা ত বিকেলে শেষ হয়ে গেছে।কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে যতিন আর তনয়।
মন খারাপ করে আছে তনয়।একটু পরে দেখা গেল। তনয় বলছে, কাঠের ঘোড়াটা কত করে? মাটির ব্যাংকটা দেখাও ত,,,