লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
বিশ্বে কোন অত্যাচারী স্বৈরশাসক, সম্পদশালী জমিদার, ধনী, উচ্চ পদ পদবী ধারী, কেউ কি বেঁচে আছেন? চেঙ্গিস খান, আলেকজান্ডার দি গ্রেট, পিনা চোট, ইদি আমীন, কুইন মেরী, হিটলার ফেরাউন, রাবন কেউ বেঁচে নাই এ নশ্বর ধরায়! সবাইকে চলে যেতে হয়! ইরানের রেজা শাহ পাহলভি, রাশিয়ার জার, চীনের কিয়াং কাই শেক, ভারত থেকে বৃটিশ, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান অত্যাচার নির্মুল করেছে যারা তারা ছিলেন এ দেশের মেহনতী মানুষ! এই কামার, কুমার, চাষী, তাতী, শ্রমিক, রিকশা, ভ্যানওয়ালাকে অত্যাচার করলে তারা ক্ষুদিরাম সূর্য সেন, কানাই লাল, প্রীতিলতা প্রফুল্ল চাকী এমন কি নাথুরাম গড তৈরি হয়ে যায়, শুধু শাসকদের অপরিনামদর্শী নির্বোধ পদক্ষেপের জন্য এবং তখন ততকালীন শাসকের আয়ু ক্ষীণ হয়ে আসে!
প্রিয় পাঠক, একজন রিকশা ওয়ালা বা একজন ভ্যান ওয়ালা, একজন মুদি দোকানদার শেখ মুজিবের মত এত বড় ইতিহাস সৃষ্টি কারী শ্রেষ্ঠ বাঙালির উপর Special fascination থাকতেই পারে! তাকে দমন করতে পুলিশর সামনে কোন দলীয় লোক কে সুযোগ দেয়া গর্হিত কাজ!
আমি একজন ক্ষুদ্র লেখক, আমার অনুরোধ আপনারা মুজিব, বাঙালি জাতি উৎপাঠন বন্ধ করুন এবং মুজিব আর শেখ হাসিনা আলাদা করে দেখতে শিখুন! আপনারা ক্রমশঃ আল্লাহ ভগবান ঈশ্বরের অভিশাপে নিমগ্ন হচ্ছেন! যে রিকশাওয়ালা সারা দিনের আয় দিয়ে ফুল কিনে “মুজিবের” মৃত্যু দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে আসে, যে হাফেজ বা মাওলানা কুরআন খতম দিয়ে ৩২ নাম্বার ধানমন্ডি মুজিবের উপর দোয়া পাঠ করতে আসে তাকে বাঁধা দিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ কন্টকা কীর্ণ করে চলেছেন! আওয়ামী নিষিদ্ধ, হাসিনা নিষিদ্ধ পর্যন্ত থেমে যান! দয়া করে বাংলাদেশ এবং মুজিব পরিবর্তন করার চেষ্টা না করা ভালো!
আপনারা পড়েন নাই পাকিস্তানের ১৯৭১ সালের ইয়াহিয়া খানের প্রেস সেক্রেটারি “মেজর সিদ্দিক সালিকের” লেখা বই Withness to surrender, তিনি লিখেছেন, “যে রেসকোর্স ময়দান পাক সেনারা মেশিন গান আর মর্টার শেলে ঘিরে রেখেছিলো বৃটিশ আমলে অমৃতসরের জালি ওয়ালা বাগ হত্যাকান্ডের মত দশ লক্ষ মানুষ মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়ার জন্য, সেখানে মুজিবের বুদ্ধি জ্ঞান গরিমা রাজনৈতিক প্রজ্ঞার জন্য পাক সেনারা একটা গুলিও ছুড়তে পারে নাই, মুজিব স্বাধীনতা ঘোষণা ঠিক ই করেছেন এবং দশলাখ উপস্থিত বাঙালি বিশৃঙ্খলা না দেখিয়ে মন্ত্র মুগ্ধ হয়ে ফিরে গেছে! তার ভাষায়, “মনে হলো কোন মন্দির মসজিদ থেকে ঈমামের বানী শুনে তারা বাসায় ফেরত গেলেন!” মুজিব এমন মোহমুগ্ধ কারী এক যাদুকর ছিলেন, তিনি বিশ্বের অন্য নেতাদের মত পালিয়ে যান নাই তার জনগন রেখে বরং নিজ বাড়ীতে মৃত্যু কে আলিঙ্গন করতে বসেছিলেন শেষ কাজ স্বাধীনতা ঘোষণা শেষ করে! ন’মাস অনুপস্থিত মুজিবের নামে যুদ্ধ হয়েছে এবং বর্বর পাক সেনারা পরাজিত হয়ে তাকে কারামুক্ত করতে বাধ্য হয়েছে! তার মাথায় প্রসাব করা, তার বাড়ী ভাঙ্গা, তার মাজার ভাঙার চেষ্টা প্রয়োজন আছে বলে বলে বাংলাদেশের বোদ্ধা জনেরা মনে করে না!
এ বাড়াবাড়ি হয়তো বুমেরাং হতে পারে, আল্লাহ /ভগবান ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না!
দশলাখ লোকের জীবন বাঁচানো এবং তাদের মন্ত্র মুগ্ধ করে সভ্য লোকের মত ঘরে ফেরতনপাঠানে শুধু মুজিবের পক্ষে সম্ভব ছিলো।
সেই মুজিব কে এদেশের কিছু মানুষ জীবন থেকে বেশী ভালো বাসবে এইটাই স্বাভাবিক! সেই শ্রেনীর হচ্ছে রিকশা ভ্যান চালক দিনমজুর কৃষক-শ্রমিক কুলি মুটে মজুর কিশান! অনুগ্রহ করে এদের গায়ে হাত তোলা বন্ধ করুন!
যে রিকশাওয়ালা কে জেলে নিলেন তার গ্রামের বাড়ীতে তিনজন প্রতিবন্ধী পোষ্য, তার বাবা মা ও অচল যারা অভুক্ত সেই কয়দিন যে কয়দিন তার ছেলে জেলে এবং রিকশা চালায় তাদের টাকা পাঠাতে পারে নাই! অভুক্ত বাবা-মার অভিশাপ আল্লাহর আরশ পর্যন্ত কেঁপেছে কিনা জানি না তবে আমাদের মত দুর্বলের চিত্ত ভেদ হয়ে গেছে!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশ কে ভালো বাসেন!
লেখকের শেষ কথা “রাজাকে রাজনীতি জানতে হয় এবং মনে রাখতে হয়, কোন সরকার ই শেষ সরকার না!