শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সুনামগঞ্জ ১আসনের এমপি হিসেবে দেখতে চায় মাহবুবুর রহমানকে জামালগঞ্জে যুবদলের উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ধর্মপাশার সেলবরস ইউনিয়নে ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন মাহেরিন চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল বৃক্ষ একাধারে পরিবেশ সুরক্ষা এবং সৌন্দর্য বর্ধনে ভূমিকা রাখে- খুবি ভিসি মধ্যনগরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিশাল জনসভা খুলনা আর্ট একাডেমির ঐতিহ্য সংরক্ষণশালায় ‘জল নেতি’ উপহার দিলেন আহমেদ হোসাইন ছানু তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে– আব্দুল মোতালেব খাঁন প্রয়াত বিএনপি নেতা শেখ কামাল আলীর কবর জিয়ারত করলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ নরসিংদীতে নিরাপদ খাদ্য আইনে অভিযান পরিচালনা করে দুটি প্রতিষ্টানকে ০২ লক্ষ টাকা জরিমানা

ঘোড়ার গাড়িতে করে মাটির রঙ বিক্রি করেই জীবন-সংসার চলে আমিনুলের!

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১০৫ Time View

এস এম রকিবুল হাসান, নিয়ামতপুর(নওগাঁ) প্রতিনিধি:

“রঙ লাগবে নাকি গো রং,, বাড়ির দেয়াল লেপার জন্য লাল মাটির রং” এমনভাবে গলা ছেড়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে মাটির রং বিক্রি করেন আমিনুল ইসলাম। গ্রামে গ্রামে ফেরি করে মাটির বাড়ির প্রলেপ দেওয়ার রং বিক্রি করে বেড়ান। বয়স ৫০ ছুলেও যেন ক্লান্তি নেই তার। জীবন ও জীবিকার তাগিদে ছুটে চলেন রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রং বিক্রি করে আবার ফিরে আসেন নাড়ীর টানে। 

ফেরিওয়ালা আমিনুল ইসলামের বাড়ি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের চান্দইল চুনিয়াপাড়া গ্রামে। ফেরি করে রং বিক্রি করলেও নিজের বাড়িতেই সেই রং করার জায়গা নেই। বাড়ির দেয়াল ভেঙে ভেঙে পড়ছে ওপরে জরাজীর্ণ টিনের ছাউনি। 

জানা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে অনেক আগে থেকেই লাল মাটির এই রং মাটির বাড়ির দেয়াল ও বারান্দায় ব্যবহার করা হয়। এই অঞ্চলের মাটি খুঁড়ে গভীর গেলে লাল রঙের একধরনের কাঁকরের দেখা মেলে। স্থানীয়রা এটাকে ‘আঁকির’ বলে থাকেন। এই আঁকির তুলে এনে খেজুরগুড়ের পাটালির মতো করে চাকতি তৈরি করা হয় এবং রোদে শুকানো হয়। এরপর ওই চাকতিগুলো এক টাকা, দুই টাকা ও পাঁচ টাকায় বিক্রি করেন আমিনুল। অত্র অঞ্চলে আমিনুলকে ছাড়া এ পেশায় আর কাউকে দেখা যায় না।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আমিনুল ইসলাম তার বাড়ির উঠানের পাশে চাকতিগুলো শোকাচ্ছিলেন। উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে রোদে শুকানোর পরই এগুলো বিক্রির উপযোগী হবে। কাজের ফাঁকেই কথা হয় তার সাথে। 

তিনি বলেন, পড়াশোনা দ্বিতীয় শ্রেণির বেশি হয়নি তার। দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে তাঁর। বড় ছেলে বিয়ে করে বিভিন্ন কাজে জড়িত, ছোট ছেলে বিএসসি শেষে ঢাকায় একটি কারখানায় চাকরি করে। মেয়ের সংসার ভেঙে যাওয়ায় আমিনুলের সঙ্গেই থাকেন।

তিনি বলেন, বাড়ি-ভিটা ছাড়া অন্য জায়গা না থাকায় ২৫ বছর ধরে এ ব্যবসা করে চলেছেন। সারাদিন প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। নিজেই মাটি খুঁড়ে ‘কাঁকর’ তুলে সেগুলো চাকতি করে শুকিয়ে বিক্রি করতে হয়। এগুলো ঘোড়ার গাড়িতে চাপিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এগুলো এক, দুই ও পাঁচ টাকায় বিক্রি করতে হয়। চাকতিগুলো পানিতে ভেজালে গাঢ় লাল বর্নের রং হয়। সাধারণত ধুলো-ময়লা এড়াতেই এই লাল রং ব্যবহার করা হয়। 

তিনি আরও বলেন, এই পেশায় জড়িয়ে পড়ায় অন্য কোন কাজ করা হয়ে উঠেনা। বর্ষা মৌসুমে রং বিক্রি কমে হয়। এই সময়টায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। ঘোড়া পুষতেও তো খরচ করতে হয়।

সংকর দাস নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই এই আঁকিরের ব্যবহার দেখে আসছি। মাটির বাড়িতে এই রং ব্যবহার করলে ধুলো-বালি কম হয়। তাছাড়া আলপনা হিসেবে ব্যবহার হয়।

সবুজ সরকার নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, তার মা বরাবরই বাড়ির ভেতর ও বাইরে লাল মাটির রং দিয়ে লেপে দেন। বয়সের ভারে মা আগের মতো লেপতে না পারলেও লোক লাগিয়ে এখন রং করে নেওয়া হয়। 

বর্তমানে ইট পাথরের বিশ্বে কোন এক সময় হারিয়ে যাবে মাটির বাড়িগুলো, হারিয়ে যাবে আমিনুলের মতো ফেরিওয়ালা। তখন স্মৃতির পাতায় উঠে আসবে তাদের নাম।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102