শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন

উপন্যাস: রাঙ্গানো আলো

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১১১ Time View

মোঃ আহসান কবির রিজওয়ান

পড়ালেখায় যে মানুষকে মহাত্ব করে তুলে এমনটা না, পড়ালেখা একটি টর্চ লাইটের ন্যায়। আজকে তুফানের একটি গল্প শুনাব যেখানে লুকিয়ে রয়েছে প্রেম-প্রতিবাদ, নাম তুফান হলেও চোখের মধ্যে অদৃশ্য আগুন। যেন দিনের পথ ধরে কাউকে খুঁজে বেড়াচ্ছে পুড়ে ছাই করার জন্য। হয়তো শিক্ষা বোর্ড তাকে পাশ করিয়ে দিলে ভাল কোন কলেজে সেও পড়ালেখা করত। তার চাওয়া ছিল নিজের যোগ্যতায় পাশ করা, অংক-ইংরেজিতে একটু কাঁচা। গত আমলগুলো থেকে পরিবারে লেগে আছে অশান্তি, এখন সেও নতুন আরেক অশান্তি। বোজার ন্যায় হয়ে গেছে। মানুষ কেন বুঝেনা সবাই সব বিষয়ে দক্ষ নয়, সবারে নিজস্ব করে বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কেউ কলেজে পড়বে আবার কেউ সেই গত/আগের স্কুলে আবার পড়বে, তুফানের শিক্ষার সিঁড়ি পিছলে গিয়েছে। মানুষ রেজাল্ট শুনতে আসে তখন ফেলের ছাত্রটির একটু সংকোচ থাকে, অন্য দিকে যে ভাল রেজাল্ট করেছে সে খুশিতে সবাইকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছে। মানুষের অভিমান আস্তে আস্তেই বাড়ে, সবাই পাইলে আমি পাইলাম না কেন। আল্লাহ যা করে ভালর জন্যই করে, এই ম্যাট্রিক ফেলের ছাত্রটির মধ্যে ঘটে গেল আরেক সূচনা। ইনকামের সন্ধানে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, কোন কাজ শিখতে হলে লেগে থাকতে হবে। প্রথমে ভাই একটি মুদি দোকানে রেখে দিল, তাতে বেশ কদিন চলছে ভালই কিন্তু সে দাসত্ব পছন্দ করেনা তবু এখন বাধ্য হয়েছে টাকার প্রয়োজন। যার কাজ তারে কাছে শোভা পায়, ভাইটা (ডিপ্লোমা) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে অন্যের দোকানে মেকারি কাজ করে। সংসারে নিভু নিভু অবস্থা, মধ্যবিত্তের ভিতরেও তারা নিম্ন। সাহায্য-সহযোগিতা করার কেউ নাই। মাস শেষও সঠিক পারিশ্রমিক পায়না তুফান, ঢাকাতেও যে মানুষ তাকে ঠকাবে সেটা কে জানত! নানা তাল-বাহানা/যুক্তি, মানুষের ব্রেইন যে তাঁরা কীভাবে ওয়াশ করে সেটা বুঝা মুশকিল। একদিন তুফান দোকানে যায়নি, দোকানি অনেক কবার তাকে কল করেছে! তুফানের একটায় দাবি বেতন বাড়াতে হবে। দোকানি বলে,”এবার আসেক, দেখি কম-বেশি করে রাখা যায় কি-না।” তুফানের ভাইও তাকে বলল, এবার যা আরেক বার যদি এমন করে তাহলে তাঁর দোকানে আর যেতে হবেনা। তুফান রোজ রাতে বাসায় এসে গান গায়, এটা তার শখের মধ্যে একটি। তুফানের ভাই রুহান।
১ম নম্বর:
একদিন সকালে তুফান দোকানে গেছে! মালিক বলল, গোডাউন থেকে মাল আন। সে গোডাউনে ওখানে দেখে কিছু বখাটে ছেলে গাঁজার কলকি টানছে।শহরের মানুষ যতই বলুক গ্রাম নোংরা/গ্রামের মানুষ নোংরা আর আমি বলি নোংরা শহর থেকেই তৈরি হয়, যেমন- মাদক দ্রব্য, খুনখারাপি, ছিনতাই ইত্যাদি। দুপুরে বাসায় যাওয়ার পথে দেখছে গ্যাংয়ে গ্যাংয়ে মারামারি, এখন অন্য পথ দিয়ে যদি যেতে হয় তাহলে অনেক সময় ব্যয় হবে। সে তাদের পাশ কেটে যাওয়ার চেষ্টা করল। এরি মধ্যে কে যেন পুলিশকে এসবের খবর দিয়েছে, তুফান যাচ্ছে কিন্তু পুলিশ এসে তুফানকেও গ্রেফতার করল, পুলিশ সন্দেহ করতিছে এও বুজি মারামারি করেছে। রুহান থানায় গিয়েছে তুফানের জন্য সুপারিশ করতে কিন্তু পুলিশ বলছে, এ চাঁদাবাজ এবং তারা মারামারি করা কালীন আমরা উপস্থিত হয়ে তাকে ধরে আনছি। একটা ছোট্ট বিষয়কে পুলিশেরা বড় করে ফেলে টাকার জন্য, সবাই টাকার কাছে বিক্রি হয়েছে। দুদিন পরে টাকা দিয়ে তুফানকে ছাড়িয়ে (মুক্ত) আনে তার ভাই রুহান। এখন থেকে তুফানকে সচেতন হয়ে চলার নির্দেশ দিচ্ছে রুহান। ঢাকা শহরে টাকা উড়েনা, টাকা আসে কর্মের জোরে।
২য় নম্বর:
একদিন দোকানি তুফানকে বলল দুই নম্বর গলির প্রথম বিল্ডিংয়ের দোতলায় চার নম্বর রূমে গিয়ে এই পার্সেল গুলো দিয়ে আসেক। তুফান বিল্ডিংয়ের দোতলা চার নম্বর রূমে যাওয়ার পথে দেখে গ্লাস/কাঁচ দুই নম্বর রূমে একটি ছেলে লিজার বুকের উপরে বসে গা ঝাকাঝাকি করছে, তাহলে কি এটা পরকিয়া? নাকি স্বামী-স্ত্রী? তুফান যে বাড়িতে বাসা ভাড়া থাকে সে বাড়ির পাশের বাড়িতে তারা বাসা ভাড়া থাকে। তুফানরা জানে তার বিয়ে হয়নি, ঢাকাতে আসছে ইনকামের সন্ধানে। তার মা গার্মেন্টসে চাকরি করে, বাবা রিক্সা চলায়। তারা কি প্রেম করে পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করছে? নাকি শুধু ছেলের পরিবার জানে, নাকি দেহব্যবসা? টাকার জন্য মানুষ কত কিছু করতে পারে, তার মধ্যে এটি একটি। এসব তুফানের মাথায় ঘুরঘুর করছে।
৩য় নম্বর:
একদিন মুদি দোকান থেকে পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের পণ্য চুরি হয়েছে, এটার দোষারোপ করা হয়েছে তুফানকে। দোকানি বলছে,”কদিন আগে সে বলছিল তাকে নাকি অল্প বেতন দেওয়া হয়, তাতে তার নাকি পোষায় না।তুফান এসব চুরি করছে, মাঝখানে ত আমি দোকানে থাকি না সেই সুযোগে সে চুরি করছে।” তুফান বলতিছে, আমি চুরি করি নাই! এগুলো কে নিয়েছে আমি জানিনা।’ কে শুনে কার কথা! তুফানের ভাই রুহানের কাছ থেকে জরিমানা নিয়ে তাকে কাজ থেকে বের করে দেওয়া হলো, যদি আবারও কখনো করে সতর্ক হয়ে এমনটা ভেবে। সিসি ফুটেজও এডিট করে বিনাপরাধীকে অপরাধী বানা হয়, সেই দোকানির সিসি ক্যামেরা নষ্ট কিন্তু পাশে থাকা এক দোকানি বলছে তুফানের ছবি আমার সিসি ফুটেজে ধরা পরছে।’ তারপরে সে কলার ব্যবসা শুরু করে, আল্লাহ রহমত থাকলে যেখানে পানি বেঘোরে মরে যাওয়া অবস্থা কারো সেখানেই তিনি পানি পেয়ে তৃষ্ণা মেটাতে পারবে। ব্যবসা করার জন্য লক্ষ্য রাখতে হয় পণ্যটি সুন্দর কি-না, ভাল-মন্দ, টাকা, ক্রেতা, আচরণ ইত্যাদি। গ্রামীন ভাষায় রয়েছে ‘মুইও নিঃস্ব হনু, দ্যাশতও অকাল পরিল’ অর্থাৎ পাঠকের চেয়ে কবি বেশি, ক্রেতা কমে যায় কিন্তু বিক্রেতা বাড়ে। তবু খেয়ে পরে চলছে সংসার। এই ঢাকাতে ইনকাম করতে না পারলে আপনি মানসিক ভাবে অসুস্থ হবেন। এখানে টাকাতেও সুখ খোঁজা হয়, গ্রামে যেমন একদিন পর একদিন কাজ করে একদিন সুখের ঘুম দেওয়া যায় আমি গ্যারান্টি শহরে তা লক্ষ টাকা দিয়েও কেনা যাবেনা। তবে গ্রামে হিংসুক লোকের বৃদ্ধি হয়েছে, স্বার্থপরেরও জন্ম হয়েছে! যার জন্য সময়গুলো একা কাটানোই শ্রেয়। শহরে পানি খেয়ে শান্তি পাওয়া যায় না আর গ্রামে টাটকা খেয়েও স্বাস্থ্যবান হওয়া যায় না, কেননা কেউ কারো ভাল চায় না এটা শুধু গ্রামে নয় শহরেও এমন। গ্রামে বেকার হয়ে বসে আছেন, তাতে কেউ আপনাকে কাজের ব্যবস্থা করে দিবে না! খুঁজেও পাওয়া মুশকিল এককথায় এই সুন্দর গ্রামগুলোয় নোংরায় পরিণত হচ্ছে, শহরের রূপ নিতে চাচ্ছে। যেখানে নিজদের অঞ্চলে মূল্যায়ণ পাওয়া যায় না, তাহলে শহরে গিয়ে কেমন মূল্যায়ণ পাবেন! যাইহোক গে, গ্রামে ভেজাল মুক্ত অক্সিজেন পাওয়া পাওয়া যায়। শহরে বাঁশের মধ্যেও ভেজাল।
৪র্থ নম্বর:
রাস্তার ধারে পুলিশ ব্যবসা করতে দেয়না, দৌড়ের উপর থাকতে হয় পুলিশ আসাকালীন কেননা দাঁড় হয়ে হিরেগিরি দেখাতে গেলে হয় জরিমানা/গ্রেফতার কখনোবা উভয় শাস্তি। পৌরসভাকে নিয়মিত টাকা দিতে হয়, এটাও চাঁদাবাজির মতই কাউকে সুরক্ষা দিতে পারেনা অতচ নিজে/নিজেদের পকেট ভর্তি করায় ব্যস্থ। একদিন বাসায় কে যেন রান্না করতে গ্যাস চালু করেছে অতচ বন্ধ করে যায়নি, দুপুর বারোটা বাজে তুফান রান্না ঘরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। একটা ডিম আছে তা ভেজে খাওয়ার জন্য, সে যখনি রান্না ঘরে ঢুকল তখনি ঘরটাতে আগুন জ্বলে উঠল, টিন নষ্ট হলো, কাঠ পোড়া গেল। তাতে সবাই তুফানের দোষ দিল, এতে করে তাদেরকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হলো ও তাদের কাছ থেকে জরিমানা নেওয়া হলো। কেন তারই সাথে এমন হয়! রুহান রুহানের বউকে রংপুরে রাখতে যাবে, এক মাস পরে তাদের সন্তান হবে! ডাক্তার বলছে আরকি। রুহান তুফানকে বলল,”ভাল করে কাজ করিস! কোন ঝামেলায় যাবি না। নতুন বাসা নিলাম বুঝিস ত।” তারা চলে গেল।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

সরিষাবাড়িতে তুখোড় ছাত্রদল সেক্রেটারি সহঃঅধ্যাপক রুকন আর নেই মতিউর রহমান,সরিষাবাড়িঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক সদস্য সচীব ও সরিষাবাড়ি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক সহঃ অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম রুকন গত রাত ২:৩০ ঘটিকায় উত্তরা হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন।ইন্নাহ,,,,,রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। মহাদান ইউনিয়নে জন্মগত নাগরিক ও স্থায়ী বসতি শিমলা টাউন। মরহুম রিয়াজ উদ্দিন ডাক্তারের ২য় সন্তান মাজহারুল ইসলাম রুকন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ভাই ২ বোন ও স্ত্রী- সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। ৭ ডিসেম্বর বাদ আছর সরিষাবাড়ি আরডিএম মডেল পাইলট হাই স্কুল মাঠে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের জানাযা নামাযে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম,সরিষাবাড়ি কলেজের সহঃ অধ্যাপক খায়রুল আলম শ্যামল,আমিমূল এহসান শাহীন,পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র ফয়জুল কবির তালুকদার শাহিন,সাধারণ হসম্পাদক জহুরুল ইসলাম পিন্টুসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অধ্যাপক /শিক্ষকবৃন্দ/ কর্মচারীবৃন্দ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অসংখ্য গুনগ্রাহি উপস্থিত থেকে বিদহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102