শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
জগন্নাথপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ দোকানঘর উচ্ছেদ ডিমলা কামিল মাদ্রাসা সেন্টারে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন বিশিষ্ট ব্যাংকার মোহাম্মদ হারুন উর রশিদ সিকদারকে সংবর্ধনা সিংগাইরে ইমাম- মোয়াজ্জেমদের মাঝে সাত্তার খানের শীতবস্ত্র বিতরণ Where the Earth Sings in Light and Green ছোটগল্প: স্বরচিত কষ্ট- কলমে: ইরি অতনু কটিয়াদীতে গভীর শ্রদ্ধা ও নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবসে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন কবি নাসির আহমেদের সম্পাদনায় খুলনার কবি সাহিত্যিকদের জীবনালেখ্য গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন বাজিতপুরে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাবোর্ডের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

বাংলা ভাষার জন্য রক্তাক্ত ইতিহাস

Coder Boss
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১১৫ Time View

জহিরুল ইসলাম ইসহাকী
===============

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইতিহাসের এক অনন্য দিন, যেদিন মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত ঝরিয়েছিল বাঙালি জাতি। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য যে সংগ্রাম হয়েছিল, তা আজ শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। একুশের আত্মত্যাগের কারণে ২১শে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত, যা বিশ্বের সব ভাষাভাষী মানুষের জন্য গৌরবের।

ভাষা আন্দোলনের পটভূমি

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা ও ভাষা সংকট

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়, যার দুটি অংশ ছিল— পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তান (বর্তমান পাকিস্তান)। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬% মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলত, কিন্তু তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্র করেছিল।

১৯৪৮ সালের ২১শে মার্চ করাচিতে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন, “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”। এই ঘোষণা বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।

ভাষা আন্দোলনের সূচনা

১৯৪৮ সাল থেকেই বাংলা ভাষার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামে। ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ প্রথম ভাষা আন্দোলনের ধর্মঘট হয় এবং আন্দোলনের নেতা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানীসহ অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি: রক্তাক্ত অধ্যায়

১৯৫২ সালের শুরুতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিন ঘোষণা দেন যে, উর্দুই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা থাকবে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাঙালিরা আবারও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

২১শে ফেব্রুয়ারি: শহীদের আত্মত্যাগ

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে, যাতে চারজনের বেশি লোক একসঙ্গে সমবেত হতে না পারে। কিন্তু ছাত্ররা তা মানেনি।

পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে শহীদ হন—

সালাম

রফিক

বরকত

জব্বার

এছাড়াও আরও অনেকে আহত হন।

এই ঘটনার পর পুরো পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৫৬ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

ভাষা আন্দোলনের ফলাফল ও গুরুত্ব

১. বাংলা ভাষার স্বীকৃতি

১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে উর্দুর পাশাপাশি অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।

২. স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তি

ভাষা আন্দোলনই পরবর্তীতে ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলন, ১৯৭০-এর নির্বাচন ও ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পথ তৈরি করে।

৩. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করে। এটি বাঙালির জন্য এক অনন্য অর্জন।

উপসংহার

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন শুধু একটি ভাষার অধিকারের লড়াই ছিল না, এটি ছিল জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। সালাম, রফিক, বরকত, জব্বাররা রক্ত দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য বাঙালি জীবন দিতে দ্বিধা করে না। তাদের আত্মত্যাগের কারণেই আমরা আজ স্বাধীনভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি।

একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য শুধু শোকের দিন নয়, এটি গর্ব ও প্রেরণার দিন। আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে মর্যাদার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়াই হবে শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।

“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি?”

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

সরিষাবাড়িতে তুখোড় ছাত্রদল সেক্রেটারি সহঃঅধ্যাপক রুকন আর নেই মতিউর রহমান,সরিষাবাড়িঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক সদস্য সচীব ও সরিষাবাড়ি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক সহঃ অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম রুকন গত রাত ২:৩০ ঘটিকায় উত্তরা হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন।ইন্নাহ,,,,,রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। মহাদান ইউনিয়নে জন্মগত নাগরিক ও স্থায়ী বসতি শিমলা টাউন। মরহুম রিয়াজ উদ্দিন ডাক্তারের ২য় সন্তান মাজহারুল ইসলাম রুকন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ভাই ২ বোন ও স্ত্রী- সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। ৭ ডিসেম্বর বাদ আছর সরিষাবাড়ি আরডিএম মডেল পাইলট হাই স্কুল মাঠে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের জানাযা নামাযে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম,সরিষাবাড়ি কলেজের সহঃ অধ্যাপক খায়রুল আলম শ্যামল,আমিমূল এহসান শাহীন,পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র ফয়জুল কবির তালুকদার শাহিন,সাধারণ হসম্পাদক জহুরুল ইসলাম পিন্টুসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অধ্যাপক /শিক্ষকবৃন্দ/ কর্মচারীবৃন্দ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অসংখ্য গুনগ্রাহি উপস্থিত থেকে বিদহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102