শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
জগন্নাথপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ দোকানঘর উচ্ছেদ ডিমলা কামিল মাদ্রাসা সেন্টারে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন বিশিষ্ট ব্যাংকার মোহাম্মদ হারুন উর রশিদ সিকদারকে সংবর্ধনা সিংগাইরে ইমাম- মোয়াজ্জেমদের মাঝে সাত্তার খানের শীতবস্ত্র বিতরণ Where the Earth Sings in Light and Green ছোটগল্প: স্বরচিত কষ্ট- কলমে: ইরি অতনু কটিয়াদীতে গভীর শ্রদ্ধা ও নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবসে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন কবি নাসির আহমেদের সম্পাদনায় খুলনার কবি সাহিত্যিকদের জীবনালেখ্য গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন বাজিতপুরে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাবোর্ডের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

মায়ের যে স্মৃতি গুলো আমাকে আজও অনুপ্রাণিত করে

Coder Boss
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১০১ Time View

এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী

গতকাল ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত জীবনের ১৭ বছর পূর্ণ হলো আমার। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এই তারিখটিতে, আমার জীবনে নেমে আসে এক কালবৈশাখী ঝড়। যেই ঝড় ভেঙ্গে দিয়ে যায় একটি পরিবারের স্বপ্ন, একটি সাজানো সুখের ঘর। একটি সাজানো ফুলের বাগান ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়, সেই ঝড়ের কারণে। সারা জীবনের জন্য স্মৃতি চিহ্ন এঁকে দিয়ে যায়,আমার হৃদয়ে। সন্তানদের কাছ থেকে চিরতরে, মায়ের বিদায় এক অপ্রকাশিত আর্তনাদ। কারণ মা এমন একটি খুঁটি, যেই খুঁটির দ্বারায় টিকে থাকে একটি পরিবার। বাস্তবায়িত হয় সেই পরিবারের স্বপ্ন। আর সেই খুঁটি যখন ভেঙ্গে যায়, তখন পৃথিবীর কোন শক্তিশালী খুঁটি সেই পরিবারটিকে সহজে টিকিয়ে রাখতে পারেনা। মা হারা যন্ত্রণা কেবলমাত্র তারাই অনুভব করতে পারে, যারা অল্প বয়সে মা হারিয়েছে। মানুষ মরণশীল, প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে। কিন্তু কিছু মৃত্যু, কিছু জীবনের ক্ষতির কারণ। তবে নিয়তির লেখা, কখনও খন্ডন করা যায় না।
মায়ের স্মৃতি আজও অনুপ্রেরণা দিয়ে যায়:-
আমার স্মৃতিতে, নিজের চোখে দেখা মায়ের কিছু কাজ, আমার জীবনের অন্যতম শিক্ষা। আর পৃথিবীতে প্রতিটা সন্তানের, প্রথম শিক্ষা হচ্ছে তার মা-বাবা। আমি যদি আঞ্চলিক ভাষায় মায়ের, সেই কর্ম বিবরণ দেই তাহলে আপনারা স্পষ্ট বুঝতে পারবেন, আমার মা কেমন ছিল। প্রথমত সর্বক্ষেত্রে মা যে বাক্যটি সব সময় ব্যবহার করতেন সেটি হচ্ছে, “আজ মরিলে কাল দুইদিন,,দুইদিনের দুনিয়ায় মরতে হবে,খাইয়া মরি।আমার মা কারো সাথে ঝগড়া করে বেশিক্ষণ থাকতে পারতেন না। কোন খাবার একা একা খাইতেন না।প্রতিবেশীদের নিয়ে ভাগাভাগি করে খাইতেন।খারাপ কষ্ট দেখতে পারতেন না। সকাল বেলা যার সাথে ঝগড়া হতো, বিকেলবেলা তাকে নিয়ে একসাথে খাবার খেতো।এতিম অসহায়দের প্রতি মা অনেক দুর্বল ছিল। মানুষের প্রতি মানুষ মায়ের এই ভালোবাসা আজও আমাকে ভাবিয়ে তুলে। মায়ের মায়ের এই নৈতিক কর্মকাণ্ড আজ আমি অনুসরণ করে চলি।মা নেই, দেখতে দেখতে চলে গেল ১৭ বছর। কিন্তু মায়ের শিক্ষাটা কথা আমার সাথে রয়েছে।

আমাকে নিয়ে মায়ের স্বপ্ন :-
তিন ভাই বোনের মাঝে আমি হলাম বড়। আমাকে মা অনেক ভালোবাসতেন। মায়ের স্বপ্ন ছিল, আমি বড় হব। মানুষের মত মানুষ হব। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো। পড়ালেখা করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হব। আজ মায়ের দেখা স্বপ্নের পথেই আমি হাঁটছি। ছোট্ট জীবনে অনেক কৃতিত্ব অর্জন করেছি। নিজের কর্ম গুণে অর্জন করেছি মানুষের ভালোবাসা। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সেসব দেখার মত সেই প্রিয় মানুষটি আজ আর নেই। একাকীত্ব জীবনের শূন্যতায়, বিষন্ন হৃদয়ে মায়ের কথা খুব মনে পড়ে। একা একা ভাবি আজ যদি মা থাকতো, কতইনা খুশি হত।

আমার কৃতিত্ব আমার বিরহের কারণ :-
পৃথিবীর প্রতিটা মা-বাবা যেমন সন্তানের সফলতা কামনা করে। ঠিক তেমনি সন্তানের সফলতার প্রতিটা ধাপে-ধাপে মা বাবার মুখ উজ্জলিত হয়। বিশেষ করে মা সন্তানকে নিয়ে গল্প করে। নিজের সন্তানের কৃতিত্বের কথা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে। আমি এমন এক হতভাগ্য ব্যক্তি, এই ছোট্ট জীবনে নিজের কর্ম গুনে অনেক কৃতিত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।কিন্তু আফসোস, সেটা দেখার মত প্রিয় মানুষটি নেই। আমি যখন কোন অনুষ্ঠানের সম্মাননা পাই, তখন সেই সম্মাননা না আমাকে মায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আজ যদি মা থাকতো, তাহলে কত খুশি হত। নিজের ছেলের সম্মাননা দেখে, গর্ববোধ করত। এরকম নানা রকম কথা হৃদয়ের ছাপার রয়েছে। যা প্রকাশের মত ভাষা আমার জানা নেই। শূন্যতার শহরে একাত্ম জীবন, মায়ের আদর স্নেহ ভালবাসা থেকে বঞ্চিত। আমার খুব ইচ্ছে হয়, মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমাই। মায়ের মুখের সেই মিষ্টি ডাক, জাকির তুই আমার বাবার মত। এরকম ডাক মায়ের মুখেই মানায়। কারণ পৃথিবীর বুকে, মা হচ্ছে সেরা অভিনেত্রী। সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, অনেক অভিনয় করে থাকে।অভাবের সংসারে মা নিজে না খেয়ে থেকেও,খাওয়ার অভিনয় করে।মায়ের খাবারটা মূলত সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য রেখে দেয়। ইতিহাস বড় নির্মম, বাস্তবতা বড় কঠিন। মায়ের অভিনয়ের জীবন চিত্র যদি তুলে ধরা হয়, পৃথিবীর সকল অভিনেত্রীরা পরাজিত হবে। সেই মা থাকতে মায়ের মূল্য অনেকেই বোঝেনা। নায়ক অমূল্য রত্ন, যা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত।

উপসংহার:-
পৃথিবীতে আপন মানুষের অভাব নেই, কিন্তু এক মা যদি চোখের আড়াল হয়ে যায়, আপনার সবচেয়ে আপন মানুষটি আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করবে। অতএব আমার অনুরোধ থাকবে, সে মা নামক মানুষটি যতদিন চোখের সামনে থাকবে, তাকে সঠিক মূল্যায়ন করুন। আল্লাহর পরে যদি কাউকে সেজদা করার বিধান থাকতো, তাহলে মাকে সেজদা করতাম। আল্লাহ ব্যতীত যদি কোন প্রভু থাকতো,তাহলে সেই প্রভু হতো মা। কারণ সৃষ্টির সূচনা লগ্নে মায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যা বিশ্লেষণ করে শেষ করবে, এমন কোন কবি সাহিত্যিকের জন্য আজও হয়নি। মা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে, জীবন মৃত্যুর সন্নিকটে লড়াই করে। প্রসব বেদনায় চিৎকার করে বলে আল্লাহ তুমি আমাকে মৃত্যু দাও, কিন্তু আমার সন্তানের যেন কিছু না হয়। সন্তানের অসুখ হলে সে মা আবার বলে, আল্লাহ তুমি আমার আয়ু আমার সন্তানকে দিয়ে দাও। আমার সন্তান বেঁচে থাকুক।মা তো সেই নেয়ামত, যে নেয়ামত আল্লাহতালার কাছে অত্যন্ত প্রিয়। মা কোন ধর্মের আল্লাহ তায়ালা সেটা কখনো বলেনি, বরং কুরআন হাদিসের আলোকে প্রমাণিত হয়েছে, মা যেকোনো ধর্মেরেই হোক না কেন, মায়ের পরিচয় শুধুই মা। কোন মুসলমানের মা যদি ইহুদি নাসারা হয়, তবুও মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন মহান প্রভু।আপনারা সবাই মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন, মাকে ভালোবাসুন। দোয়া করি যাদের মা বেঁচে আছে, আল্লাহ যেন সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ু দান করেন। আর যারা আমার মত হতভাগা, আল্লাহ যেন তাদের মাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমিন…

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

সরিষাবাড়িতে তুখোড় ছাত্রদল সেক্রেটারি সহঃঅধ্যাপক রুকন আর নেই মতিউর রহমান,সরিষাবাড়িঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক সদস্য সচীব ও সরিষাবাড়ি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক সহঃ অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম রুকন গত রাত ২:৩০ ঘটিকায় উত্তরা হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন।ইন্নাহ,,,,,রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। মহাদান ইউনিয়নে জন্মগত নাগরিক ও স্থায়ী বসতি শিমলা টাউন। মরহুম রিয়াজ উদ্দিন ডাক্তারের ২য় সন্তান মাজহারুল ইসলাম রুকন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ভাই ২ বোন ও স্ত্রী- সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। ৭ ডিসেম্বর বাদ আছর সরিষাবাড়ি আরডিএম মডেল পাইলট হাই স্কুল মাঠে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের জানাযা নামাযে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম,সরিষাবাড়ি কলেজের সহঃ অধ্যাপক খায়রুল আলম শ্যামল,আমিমূল এহসান শাহীন,পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র ফয়জুল কবির তালুকদার শাহিন,সাধারণ হসম্পাদক জহুরুল ইসলাম পিন্টুসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অধ্যাপক /শিক্ষকবৃন্দ/ কর্মচারীবৃন্দ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অসংখ্য গুনগ্রাহি উপস্থিত থেকে বিদহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102