বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ছোটগল্প: স্বরচিত কষ্ট- কলমে: ইরি অতনু কটিয়াদীতে গভীর শ্রদ্ধা ও নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস পালিত মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবসে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন কবি নাসির আহমেদের সম্পাদনায় খুলনার কবি সাহিত্যিকদের জীবনালেখ্য গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন বাজিতপুরে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাবোর্ডের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবসে খুলনা মেট্রোপলিটন শ্যূটিং ক্লাবের শ্রদ্ধা নিবেদন কবিতাঃ তুমি আসবে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্টুডেন্টস কেয়ার জগন্নাথপুর ও জগন্নাথপুর যুব ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত জগন্নাথপুর উপজেলা ভিত্তিক প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায় মেধাবৃত্তি পরিক্ষার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন কবিতাঃ বিজয়ের মাস “সিআইপি” হিসেবে উপদেষ্টা ড.আসিফ নজরুল এর কাছ থেকে থেকে সম্মাননা ক্রেষ্ট গ্রহন করছেন শফিকুল ইসলাম রাহী

মনসামঙ্গল গানের প্রখ্যাত শিল্পী সুধীর বালার জীবন বৃত্তান্ত

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১১১ Time View

কলমেঃ চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ৫নং কীর্ত্তিপাশার ৩নং ওয়ার্ডের খাজুরা প্রাইমারি স্কুলের পশ্চিম দিকের রাস্তায় কিছুটা পথ সামনে গিয়ে বাবু সুধীর বালার বাড়ি।তিনি বরিশাল বিভাগের মধ্যে মনসামঙ্গল গানে ক্ষ্যাতি অর্জন করেছেন।
তিনি কৃষক পরিবারে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।খাজুরা মামা বাড়িতেই তার পরিচিতি বিস্তার হয়।আসুন তার পরিচয় জানি, প্রয়াত সুধীর বালা ১০ই ডিসেম্বর ১৯৩৮ সালে জন্ম ৩০শে মার্চ ২০২৫ রবিবার বিকাল ৪:৩৩ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। পিতা স্বর্গীয়: বিপিন বালা,মাতা স্বর্গীয়: বেলকা রানী বালা,প্রয়াত সুধীর বালার স্ত্রী মালতী রানী বালার কাছে তিনটি সন্তান অসংখ্য নাতি-নাতনি রেখে চির বিদায় নেন এই গুণীজন।
আসুন তার শিক্ষা জীবন জানিঃ
তিনি খাজুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেতে পারেনি ওখানেই তার শিক্ষাজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে ।এরপরে পিতার সঙ্গে সংসারের হাল ধরেন।
শিক্ষা জীবনের পরিসমাপ্তি হয়ে তার মনের মধ্যে বিস্তার করে অন্য কিছু ।পিতার সঙ্গে সংসারের কাজ করে কাজের ফাঁকে অবসর সময়ে সুধীর বালা হঠাৎ করে মনসা মঙ্গল বেহুলা লক্ষিন্দরের আত্মকাহিনী নিয়ে গবেষণা শুরু করেন ।১৯ ৬৪ সাল থেকে দেবী মনসার বেহুলা লক্ষিন্দরের কাহিনী নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে নতুন স্বপ্ন দেখেন। নিয়মিত বই পড়া শুরু করে অত্র অঞ্চলে মনসামঙ্গল পালা গানের একজন সরকার হয়ে উঠলেন। তিনি একটি দল গঠন করে বরিশাল এবং বরিশালের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে তার সুনাম। বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় এটাকে রয়ানি গান বলে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছিল অত্র অঞ্চল তথা সনাতন ধর্ম অবলম্বীদের কাছে তিনি মনসামঙ্গলের একজন দলনেতা সরকার হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। বরিশাল বিভাগ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে গান গেয়ে ঘুরে বেড়াতেন ১০-১২ জনার একটি টিম অত্র অঞ্চলে।তিনি মনসামঙ্গল বই পড়তেন তাই দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিল একই বাড়ির উপরে তার মামা রঞ্জিত বেপারী । তখন তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সুধীর বালার বেহুলা লক্ষিন্দরের বইটি তার মামা নিয়ে পড়ে দেখলেন পড়াশোনার অবসরে। কিন্তু রঞ্জিত বেপারী অবশেষে পড়াশোনা শেষ করে একজন স্কুল মাস্টার হলেন এবং জায়গা জমি মাপার জন্য জ্ঞান অর্জন করে পারদর্শী হয়ে ওঠেন । সুধীর বালার মামা রঞ্জিত মাস্টার একজন আমিন হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন।তাকেও অত্র অঞ্চলের মানুষ এক নামে চেনে। তবে কি ধরে নিতে পারি মনসামঙ্গলের বই পড়ে একই বাড়িতে দুই জন মা মনসার আর্শীবাদ পেয়ে গুণী মানুষ হলেন ।
সংসার জীবনঃ
সুধীর বালা বিভিন্ন অঞ্চলে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন শুরু করলে তার পরিবার থেকে বিয়ে দেয় ১৯৬৮ সালে। স্ত্রী মালতী রানীকে নিয়ে সংসার জীবন শুরু করেন।সংসার জীবন শুরু করে পুত্র সন্তান আসলো ঘরে নাম রাখলেন
মিহির বালা। সন্তানকে নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পড়েছিলেন এই গুণীজন সুখের সংসারে চলমান আবারো পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন ।
নাম দিলেন কমল বালা সংসারের সদস্য সংখ্যা বেড়েছিলো তবে সে আনন্দিত হয়েছিল দুইটি পুত্র সন্তানের পিতা হয়ে এবারে স্বামী-স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়েই সুখে দিন অতিবাহিত হয়। আবারও কন্যা সন্তানের স্বপ্ন দেখেন মা মনসার আশীর্বাদে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। নাম দিলেন মিরা বালা।অনেক স্বপ্ন নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করলেন বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে টাকা অর্জন করে সংসারকে পরিচালনা করেছেন ।সন্তানদের ভালো রাখার জন্য দিনরাত মনসামঙ্গলের পালা গান করেছিলেন।
কর্ম জীবনঃ তিনি মনসামঙ্গলের পালা গানের সরকার ছিলেন, মৃৎশিল্পে পারদর্শী ছিলেন
তবে দেবী মনসার প্রতিমাই বেশি করতেন
এবং ছবি আঁকাসহ বিভিন্ন গুণের অধিকারী ছিলেন। অত্র অঞ্চলের নবীনদের প্রাকটিক্যাল খাতা এঁকে দিতেন এই জন্য যারা পড়াশোনা করতো সবাই তাকে চিনতো এবং ভালোবাসতো। বরিশাল অঞ্চলের সুপরিচিত ভালোবাসার মানুষ । মনসামঙ্গলে অবদান ছিল তাই বরিশাল বিভাগের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সবাই তাকে এক নামে চিনতেন। সবচেয়ে বড় গুন ছিলো অত্যন্ত
সু আলাপি এক জন ব্যাক্তি ছিলেন। এই জন্যই এই সুনাম অর্জন করছেন।
শেষ পরিণয়ঃ জন্মিলে মৃত্যুর স্বাদ প্রত্যেকেরই গ্রহণ করতে হবে তিনি গতো ১১ই মার্চ নিজ বাড়িতে রাতে ঘুমায় ১২ই মার্চ সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় ঘরের বেড়া ভেঙে বের করে ডাক্তার নিয়ে আসেন। বাবু সুরেন ডাক্তার এসে স্ট্রোক করেছে বলে জানায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরে নিয়ে যেতে বলেন কিন্তু তাকে বাড়ি থেকে কোথাও নেওয়া হয়নি। বাড়িতে বসে চিকিৎসা চলছিলো ৩০ শে মার্চ রবিবার বিকাল ৪:৩৩মিনিটে জীবন যুদ্ধে হেরে যায়। নিজ বাড়িতে বসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।আমরা সবাই জানি জন্মিলে মরিতে হবে তাই হয়তো তার চলে যাওয়ার সঠিক সময় হয়েছিল।(ওঁ দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু ) মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে পরপরে চলে যায়। ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী মৃত্যু কালীন সময় তার বয়স ছিলো ৮৬বছর ৩মাস ২০দিনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
★আসুন এবারে মনসামঙ্গল সম্পর্কে জানিঃ মনসামঙ্গল কাব্যের প্রধান দেবতা সর্পদেবী মনসা। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের মঙ্গলকাব্য ধারার অন্যতম প্রধান কাব্য হলো মনসামঙ্গল বা পদ্মাপু্রাণ মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কাব্য। এই ধারার অপর দুই প্রধান কাব্য চণ্ডীমঙ্গল ও ধর্মমঙ্গল কাব্যের তুলনায় মনসামঙ্গল প্রাচীনতর।এই কাব্যের আদি কবি কানাহরি দত্ত ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ বা চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ছিলেন। তবে মনসামঙ্গল কাব্যের উৎপত্তি অধুনা পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলে। পরে পূর্ববঙ্গ ও উত্তরবঙ্গেও এই কাব্যের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “বাংলা দেশের নানা অঞ্চলে এখন বহু মনসামঙ্গল কাব্য পাওয়া যায়, তন্মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে কাব্যগুলো ‘মনসামঙ্গল’ ও পূর্ববঙ্গে প্রায়শই ‘পদ্মাপুরাণ’ নামে পরিচিত। মনসা মূলগতভাবে অনার্য দেবী। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, খ্রিষ্টীয় দশম-একাদশ শতাব্দীতে বাংলায় মনসার পূজা প্রবর্তিত হতো। তবে এই গ্রন্থগুলি অবশ্য খ্রিষ্টীয় একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীর পূর্বে রচিত হয়নি।
মনসামঙ্গল কাব্যের আদি কবি হরিদত্ত। বিজয়গুপ্ত এই কাব্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি। অন্যান্য কবিদের মধ্যে কেতকা দাস ক্ষেমানন্দ, বিপ্রদাস পিপলাই প্রমুখের নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
আধুনিক কালে মনসামঙ্গল অবলম্বনে বিশিষ্ট নাট্যকার শম্ভু মিত্র চাঁদ বণিকের পালা নামে একটি নাটক রচনা করেন। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ধারাবাহিকের আকারেও একাধিকবার প্রকাশ হয়েছে। একটি আখ্যানকাব্য। এই কাব্যের প্রধান আখ্যানটিও আবর্তিত হয়েছে মর্ত্যলোকে মনসার নিজ পূজা প্রচারের প্রয়াসকে কেন্দ্র করে। কাব্যের মূল উপজীব্য চাঁদ সদাগরের উপর দেবী মনসার অত্যাচার, চাঁদের পুত্র লখিন্দরের সর্পাঘাতে মৃত্যু ও পুত্রবধূ বেহুলার আত্মত্যাগের উপাখ্যান। এই কাব্যে সেযুগের হিন্দু বাঙালি সমাজের সমাজব্যবস্থা, অর্থনীতি, আচার-অনুষ্ঠান ইত্যাদি সম্পর্কে নানা অনুপূঙ্খ বর্ণনা পাওয়া যায়। চাঁদ সদাগর শুধুমাত্র এই কাব্যেরই নয়, বরং সমগ্র বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বলিষ্ঠ চরিত্র; বেহুলা-লখিন্দরের করুণ উপাখ্যানটিও তার মানবিক আবেদনের কারণে আজও বাঙালি সমাজে জনপ্রিয়।
পুজোর পাশাপাশি আয়োজন করা হয় মনসা পালাগানের। বাংলাদেশের বেশ কিছু শিল্পী এই ঐতিহ্যবাহী পালাগান করতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে থাকেন। এই পালাগান বহু মানুষের মন আকর্ষণ করে থাকে। তেমনি’’বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি উপজেলার খাজুরা গ্রামের সুধীর বালা ‘‘এই পালাগান ১৯৬৩ সাল থেকে সাধনা করেন অর্থাৎ বাংলাদেশ স্বাধীনের পূর্ব থেকে সাধনা করে আসছেন দীর্ঘ সময়ের পুরনো। তিনিও প্রায় ৬৫ বছর ধরে এই পালাগানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই মনসা পুজো উপলক্ষে দূর-দূরান্তের বহু ভক্তবৃন্দ ভিড় জমান। ইতিহাস বলে উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ লোকসংস্কৃতিতে এই পালাগান শুনতে পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে এই পালাগানের শিল্পীদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। বহু মানুষ এই পালাগান ছেড়ে অন্য কাজ করেন ঠিকই। তবে এই পালাগানের মধ্যে এক আলাদা তৃপ্তি রয়েছে। পালাগানের শিল্পীরা ছাড়া এই তৃপ্তি অন্যরা উপভোগ করতে পারবেন না।এক পালাগান শিল্পীদের ময়না বর্মন জানান, ‘‘ মনসাপুজো উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকায় শোনা যায় মনসা বা বিষহরি পালা গান। যদিও গ্রামীণ লোকসংস্কৃতি থেকে এক প্রকার হারিয়ে যেতে বসেছে এই মনসা বা বিষহরির গান।
লেখকের লেখার কারণঃ
আমি চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস ছাত্র জীবন থেকে খুলনায় থাকি। যতদূর পারি গ্রামের যারা শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি। আজ যার সম্পর্কে লিখলাম তিনি আমার অত্যন্ত একজন প্রিয় মানুষ ছিলেন। আমার বাবাকে মামা ডাকতেন সেই সূত্রে আমাদের দাদা হতেন কিন্তু তার চলাফেরা বন্ধুর মতো ছিল। অত্যন্ত সুআলাপী তাই ছোট বড় সবাই তাকে ভালোবাসতো। বন্ধুরা বলতেন চির যুবক। কারণ আমরা ছোটবেলা থেকেই একইভাবে দেখে আসছি মাথার চুলে নিয়মিত কলপ করতেন। তাই তার বয়স বোঝা যেত না। এটাও ছিল তার ব্যাতিক্রম একটি সৌখিনতা। চলাফেরা কথা বলা তার মধ্যেও ছিল অনেক স্টান্ডার । তিনি অল্প শিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষ ছিলেন এটি কখনোই বোঝা যেত না। তার ভদ্রতা এবং প্রতিভার কারণে তিনি একজন গুণী মানুষ হয়ে উঠেন। ৩০শে মার্চ বিকাল ৪ঃ৪০ মিনিটে আমার বাল্য বন্ধু রিপন ফোন করে এই গুণীজনের চলে যাওয়ার শোক সংবাদটি জানায়। সেদিন থেকেই রাতের ঘুম চলে যায় জন্মস্থানের একজন গুণীজনকে হারিয়ে। তাই তার উদ্দেশ্যে লেখা শুরু করলাম। আর এই লেখাটি লিখতে গিয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রঞ্জিত বেপারী। তিনি আমাকে সঠিক তথ্য দিয়ে লেখাটি লেখার সুযোগ করে দিয়েছেন তা না হলে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারতাম না। তাই আমি তার জন্য শুভ কামনা করি। এবং কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। সুধীর দার এই ছবিটি আমারই তোলা ছিলো। তার মৃত্যুর পরে গ্রাম থেকে তার ভালোবাসার মানুষরা সবাই শোক প্রকাশ করেছেন সকলের ওয়ালে আমার তোলা ছবি গুলো দেখতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। কিন্তু মৃত্যুর আগে যদি এই গুণী মানুষ দেখে যেতে পারতো তার ছবি নিয়ে আমরা কেউ লিখেছি খুব খুশি হতো।
তার এই জীবন বৃত্তান্ত লেখা দেখলে তবে সে অনেক খুশি হতো। আমি খুলনা থাকায় এই গুণীজন সম্পর্কে পূর্বে লেখার সময় হয়ে ওঠেনি। আমার শিল্পচর্চার যাত্রা যখন শুরু হয় তখন তার কাছ থেকে আমি অনেক উৎসাহ পেয়েছি তা না হলে হয়তো আজ আমি এ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারতাম না। আজকে নিজেকে খুব অপরাধী মনে করছি। গত ১২ই মার্চ দাদা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন খবরটি শোনার পরে গ্রামের বন্ধুবান্ধবদের কাছে আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছি কিন্তু আমি খুলনা থেকে দাদাকে দেখতে যেতে পারিনি। এটা আমার কাছে অত্যন্ত কষ্টের ।কিছু কথা থাকে যা লেখার মাধ্যমে তুলে ধরা যায় না।তাই সুধীর দাদার কাছে ক্ষমা প্রার্থী। আমি একজন শিল্পী আমার সাধনা ও চিন্তা ধারা থেকে যতটুকু বুঝি জীবিত থাকতে যদি কাউকে সম্মান ও বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সহযোগিতা না করা যায় মৃত্যুর পরে তার সম্পর্কে কোন কিছু করা আমার দৃষ্টি থেকে শোভনীয় না।আজকে খাজুরাবাসী যাকে হারিয়েছেন এই শূন্যতা কোনভাবে পূর্ণ হবে না। আমি মনে করি তিনি একটি নক্ষত্র ছিলেন। কিন্তু গুগলে সার্চ দিয়ে তার সম্পর্কে কোন তথ্য পেলাম না তাই এই লেখার উদ্দেশ্য। এই ডিজিটাল যুগে এই গুণী মানুষ সম্পর্কে একটা তথ্য থাকা খুবই জরুরী ছিল। তা না হলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই গুণী মানুষ সম্পর্কে জানবে কি করে। আমার এই লেখাটি গুগলে বা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে হয়তোবা তিনি অমরত্ব পাবেন। তখনই আমার লেখা সার্থকতা পাবে, একজন গুণী মানুষ এভাবে হারিয়ে যেতে পারে না। তাই আমার স্থান থেকে চেষ্টা করছি সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন আমি যেন শিল্প সাধনা নিয়ে পিতা-মাতার আদর্শ নিয়ে ভালো কিছু করতে পারি।আমার জন্মস্থানের এই গুণী মানুষের সম্পর্কে লিখতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমার লেখার মধ্যে যদি ভুল ত্রুটি থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

সরিষাবাড়িতে তুখোড় ছাত্রদল সেক্রেটারি সহঃঅধ্যাপক রুকন আর নেই মতিউর রহমান,সরিষাবাড়িঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক সদস্য সচীব ও সরিষাবাড়ি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক সহঃ অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম রুকন গত রাত ২:৩০ ঘটিকায় উত্তরা হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন।ইন্নাহ,,,,,রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। মহাদান ইউনিয়নে জন্মগত নাগরিক ও স্থায়ী বসতি শিমলা টাউন। মরহুম রিয়াজ উদ্দিন ডাক্তারের ২য় সন্তান মাজহারুল ইসলাম রুকন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ভাই ২ বোন ও স্ত্রী- সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। ৭ ডিসেম্বর বাদ আছর সরিষাবাড়ি আরডিএম মডেল পাইলট হাই স্কুল মাঠে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের জানাযা নামাযে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম,সরিষাবাড়ি কলেজের সহঃ অধ্যাপক খায়রুল আলম শ্যামল,আমিমূল এহসান শাহীন,পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র ফয়জুল কবির তালুকদার শাহিন,সাধারণ হসম্পাদক জহুরুল ইসলাম পিন্টুসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অধ্যাপক /শিক্ষকবৃন্দ/ কর্মচারীবৃন্দ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অসংখ্য গুনগ্রাহি উপস্থিত থেকে বিদহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102