অনুলিখন : অথই নূরুল আমিন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সত্যিকার অর্থে একটি ইসলামী রাজনৈতিক দল। দলটির দাওয়াতি পক্ষ মূলত জনগণকে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও আদর্শের দিকে আহ্বান করে। তাদের দাওয়াতি কার্যক্রমের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিচে তুলে ধরা হলো:
দাওয়াতের মূলনীতি:
১. একত্ববাদ (তাওহীদ): আল্লাহর একত্ব ও সার্বভৌমত্বের প্রতি আহ্বান জানানো, জামায়াতের দাওয়াতের অন্যতম প্রধান দিক। তারা মানুষকে একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব ও আনুগত্যের দিকে আহ্বান করেন।
২. নবী (সাঃ)-এর অনুসরণ: হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবন ও আদর্শ অনুসরণ করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয় এবং তাঁর দেখানো পথে জীবন পরিচালনার জন্য উৎসাহিত করা হয়।
৩. পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে ইসলাম: ইসলামকে শুধু একটি ধর্ম হিসেবে নয়, বরং জীবনের সকল দিক ও বিভাগের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
৪. ইনসাফ ও ন্যায়বিচার: সমাজে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরা হয় এবং এর জন্য কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
৫. নৈতিক ও আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি: ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
দাওয়াতের পদ্ধতি ও মাধ্যম:
১.ব্যক্তিগত যোগাযোগ: দলের কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেন।
২. গ্রুপভিত্তিক আলোচনা: ছোট ছোট গোষ্ঠীর মাধ্যমে ইসলামী আলোচনা ও শিক্ষা প্রদান করা হয়।
৩. ইসলামী সাহিত্য বিতরণ: বই, পুস্তিকা, লিফলেট ইত্যাদি বিতরণের মাধ্যমে ইসলামের বার্তা প্রচার করা হয়।
৪. দাওয়াতি জনসভা ও ইসলামী মাহফিল: বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ মাহফিল ও জনসভার আয়োজন করে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানো হয়।
৫. দাওয়াতি ইউনিট গঠন: স্থানীয় পর্যায়ে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ছোট ছোট ইউনিট গঠন করা হয়।
৬. আলোচনা সভা ও সেমিনার: বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা সভা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
৭. সিরাতুন্নবী (সাঃ) মাহফিল: নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবন ও কর্মের আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
৮. আল-কুরআনের দারস ও তাফসির: কুরআনের শিক্ষা ও ব্যাখ্যার মাধ্যমে দাওয়াত প্রদান করা হয়।
৯. ইসলামী দিবস পালন: বিভিন্ন ইসলামী দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১০. মসজিদভিত্তিক দাওয়াতি কাজ: মসজিদের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের কাছে দাওয়াত পৌঁছানো ও ইসলামী শিক্ষা প্রদান করা হয়।
১১. পত্র-পত্রিকা ও গণমাধ্যম: পত্র-পত্রিকা ও অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমে দলের আদর্শ ও দাওয়াত প্রচার করা হয়।
১২. দাওয়াতি সপ্তাহ/পক্ষ পালন ও গণসংযোগ অভিযান: বিশেষ সময়ে দাওয়াতি কার্যক্রম জোরদার করা হয়।
১৩. দাওয়াতি চিঠি ও ফোন আলাপ: ব্যক্তিগতভাবে চিঠি ও টেলিফোনের মাধ্যমে দাওয়াত পৌঁছানো হয়।
১৪. দাওয়াতি বই উপহার: বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইসলামী বই উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়।
১৫. ইফতার মাহফিল ও সামাজিক অনুষ্ঠান: সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচিত মহলে দাওয়াত পৌঁছানো হয়।
১৬. তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহার: বর্তমানে ওয়েবসাইট ও অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে, সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছে ইসলামের সঠিক বার্তা পৌঁছে দেওয়াই তাদের দাওয়াতি কার্যক্রমের লক্ষ্য।
(অধ্যাপক হুমায়ুন কবির স্যারের ওয়াল থেকে সংগৃহিত )
১২ এপ্রিল ২০২৫