সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানাধীন সতীঘর গ্রামের একটি পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সরকারের একজন উপ সচিব ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেন একই গ্রামের শাহ রুম্মানুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জানান, নরসিংদী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ ও তার লোকজনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এই চক্রটি ইতিপূর্বে তার ৪৫ শতাংশ ফসলি জমি জোরপূর্বক দখল করেছে। পরবর্তীতে তার বসতভিটা দখলের উদ্দেশে সীমানা দেওয়াল ভাঙ্গারও চেষ্টা করেছে। এ ঘটনায় তিনি ২০২১ সালের ২৫ মার্চ মো. আব্দুল ওয়াহাব রাশেদসহ ৮ জনকে বিবাদী করে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত সদর, সিলেটে স্বত্ব মোকদ্দমা ১৭৭৪/২১ দায়ের করেছেন। মামলাটি (স্বত্ব মোকদ্দমা- ১৫৬/২২) সহকারী জজ আদালত ফেঞ্চুগঞ্জে বিচারাধীন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রুম্মানুল হক বলেন, গত ৮ মার্চ আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ ও তার ভাই আব্দুল ওয়াদুদ শাহেদের উপস্থিতে তাদেরই চাচাতো ভাই ‘সন্ত্রাসী’ আবুল কাশেম নাহিদ, হারুন মিয়া, ভাতিজা মারুফ আহমদ, মুমিন মিয়া, আল-আমিন, মারওয়ান আহমদ, চাচাতো বোন বাবনা বেগম, লিপি বেগম, চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী মাছুমা বেগম দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার বসত ঘরে আক্রমণ করে। এ সময় তারা তাকেসহ তার স্ত্রী ও বৃদ্ধা মাকে মারধর করে এবং ঘর থেকে নগদ ১ লক্ষ টাকা, ৬ ভরি স্বর্ণ, বিএস মূল নকশাসহ প্রয়োজনীয় দলিল পত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় স্বত্ব মোকদ্দমা তুলে জায়গা জমি তাদের দখলে না দিলে বসত ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এসময় ৯৯৯-এ কল করলে মোগলাবাজার থানা পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে।
শাহ রুম্মানুল হক জানান, তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় পরদিন ৯ মার্চ ওই চক্রটি তার সুপারি বাগানে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। এ ব্যাপারে তিনি মোগলাবাজার থানায় বাদী হয়ে মামলা করতে গেলে আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ তার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে। ফলে, থানার অফিসার ইনচার্জ তার মামলা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি বাদী হয়ে মেট্টোপলিটন ম্যাজিষ্টেট ৩য় আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু রাশেদ অবৈধ টাকা ও সন্ত্রাসী দিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষী না দিতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ ও আব্দুল ওয়াদুদ শাহেদের নির্দেশে তাদের লোকজন বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা দিয়ে তাদের হয়রানি করে। পরবর্তীতে আদালতে এসব মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তাদের এই সব মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা ও হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে তার বড় ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহ্ এনামুল হক বাংলাদেশ হাই কমিশনার, যুক্তরাজ্য এর মাধ্যমে দুটি আবেদন করেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তার বড় ভাই দেশে এলে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন। কিন্তু পতিত স্বৈরাচারী সরকারের দোসর মো. আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ এই অভিযোগের তদন্তে বাধা দিয়ে আটকে রাখে।
তিনি এসব বিষয়ের প্রতিকার পেতে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণায়ের সিনিয়র সচিবের সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. কবিরুল ইসলাম খছরু, আব্দুল মতিন, জুনেদ আহমদ, আসদ্দর আলী প্রমুখ।