লেখক: গোলাম হোসেন
মানুষ সামাজিক জীব। একে অন্যকে সাহায্য সহযোগিতা করার মাধ্যমে প্রাপ্ত সুবিধার কথা চিন্তা করে মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। ব্যক্তির সমন্বয়ে পরিবার অতঃপর পরিবারের সমন্বয়ে সমাজ গড়ে উঠেছে। ব্যক্তি বিহনে সমাজের কোন অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। সেজন্য সৎ ও শান্তিকামী ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি সৎ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে উঠে। পক্ষান্তরে অসৎ ও স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তির কারণে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। অতএব সমাজসুদ্ধির প্রশ্নে ব্যক্তি-সুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই স্বীকার করতে হয়।
প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে মোহাম্মদী ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মুহাম্মদ (সা.) ব্যক্তি শুদ্ধের মাধ্যমেই সমাজ শুদ্ধ করেছেন। মহিমান্বিত আল্লাহ তা*আলা ওহির বানী আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ❝অবশ্যই সফলকাম হয়েছে সে, ব্যক্তি নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে। আর ব্যর্থ হয়েছে সে ব্যক্তি যে নিজেকে পাপাচারে কলুষিত করেছে।❞ (সূরা-আশ শামস-৯১:আয়াত ৯ ও ১০)।
মহান রাব্বুল আলামিনের এ বাণী মোবারক থেকে সুস্পষ্ট যে ইসলামের যাত্রা ব্যক্তি শুদ্ধের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে কুল-কাইনাতের রহমত, মোহাম্মদী ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তার অনুসারীদের আদর্শে মুগ্ধ হয়ে বহু লোক মুসলমান হয়েছেন। এভাবে অনুসারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে একটি সুন্দর শৃঙ্খশৃংখল ও কলুষমুক্ত সমাজ গড়ে উঠেছে।
উত্তম চরিত্র অর্জন করতে হলে অবশ্যই আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন। আত্ম অর্থ নিজ,নফস তথা জীবাত্মা। আর শুদ্ধি অর্থ পবিত্রকরণ। সুতরাং আত্মশুদ্ধি অর্থ নিজের নফস বা জীবাত্মাকে পরিশুদ্ধ করা,অর্থাৎ আত্মশুদ্ধির মর্ম হচ্ছে ষড়রিপুর বেরাজাল থেকে মুক্ত করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করা। মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন। ❝নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে সে, যে আত্মশুদ্ধি লাভ করে।❞ (সূরা-আল আলা-৮৭: আয়াত-১৪) কুল কায়েনাতের রহমত,মোহাম্মদী ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা,হযরত মুহাম্মদ (সা.)আত্মশুদ্ধির এ সুমহান শিক্ষা দিয়েই আদর্শ চরিত্রবান রূপে গড়ে তুলেন সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য অনুসরণীয়, পরিশুদ্ধ এক মানব সভ্যতা বিনির্মাণ করেন।
সুতরাং আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তি শুদ্ধ হয় আর ব্যক্তি শুদ্ধের মাধ্যমে সমাজ শুদ্ধ হয় সমাজ শুদ্ধের মাধ্যমে গোটা জাতি শুদ্ধ হয়।
আসুন আমরা সকলেই আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেদের চরিত্রকে আদর্শ চরিত্ররূপে গড়ে তুলি। আমিন।