এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট:
বিশ্বের ঐতিহ্যবৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দীর্ঘ ২৫ বছর পরে ১১২ বিঘা জমির দখল ফিরে পেয়েছেন জমির মালিকেরা। দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের গাজীরঘাট গ্রামের ওই একশত ১২ বিঘা জমি একটি প্রভাবশালী মহল ২০০১ সালে একই গ্রামের হাদিস গাজীর নেতৃত্বে দখল করে নিয়ে চাষাবাদ ও ঘের করে আসছিলো। জুলাই বিপ্লবের ফলে গত ৫ আগষ্ট রাষ্ট্রীয় পট পরিবর্তনের পরে হাদিস গাজীসহ তার বাহিনীর লোকজন পালিয়ে গেলে জমির মালিকেরা সাইনবোর্ড পুতে ও ঘেরাবেড়া দিয়ে জমি দখল করে নেন।
দখলের খবর পেয়ে পলাতক হাদিস গাজী ও তাদের বাহিনীর লোকজন রাতের আধারে এলাকায় ফিরে আবার ওই জমি দখলের চেষ্টায় দু’দফা হামলা করে ৭ জনকে আহত করে। মারপিটের এ মামলায় হাদিস গাজী বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। হামলার প্রতিবাদে ভূক্তভোগী জমির মালিকেরা রবিবার বেলা ১১টার দিকে বিবাদমান জমিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। সমাবেশে জমির মালিক মনোয়ারা বেগম, কহিনুর বেগম, আশ্রাফ শেখ, আনসার সরদার, সুলতান শেখ, রুমা খানম, ওয়ার্ড মেম্বর অহিদুল ইসলাাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। তারা পলাতক প্রতিপক্ষের গুপ্ত হামলায় খুন জখমের আশংকা করছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পরে হাদিস গাজী ও তার বাহিনীর লোকজন পালিয়ে যায়। এসএ ও বিআরএস সূত্রে পাওয়া ওই ১১২ বিঘা জমি প্রায় ৭০ জন মালিক দলিরের আলোকে জমিতে সাইনবোর্ড পুতে ও ঘেরাবেড়া দিয়ে দখল নেন। এ বিষয়ে কহিনুর বেগম নামে একজন জমির মালিক বিভিন্ন দপ্তর ও প্রেসক্লাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ‘২০০১ সালের ১৮ জন বেলা ১০টার দিকে কহিনুর বেগমের স্বামী সোহরাফ শেখকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে ৪টি বসতবাড়ি পুড়িয়ে সকলকে এলাকা ছাড়া করে তাদের ১১২ বিঘা জমি দখল করে নেয় হাদিস গাজী ও তার বাহিনীর লোকেরা।
কহিনুর বেগম পালিয়ে থেকে তার স্বামীর হত্যার বিচারের জন্য ৩৬ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলার বিচারে বিজ্ঞ জেলা জজ আতাহার আলী ওরফে পরান বাবু, কালা বাবুল ও বাদশা শেখের ফাঁসির আদেশ, পিকলু সরদারসহ ১১ জনের যাবজ্জীন ও হাদিস গাজীসহ ১৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় দেন। আসামিরা রায় চ্যালেঞ্জ করে মহামান্য হাইকোর্টে আপিল করলে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পূর্বের রায় বহাল রাখেন। পরে গত ৬ এপ্রিল হাদিস গাজী ও তার লোকজন এলাকায় ফিরে দুই দফা হামলা করে ১জন সেনা সদস্যসহ ৭-৮জনকে গ্ররুতর জখম করে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাদিস গাজী বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।
এ বিষয়ে থানার ওসি মো. রাকিব আল হাসান বলেন, বেদখল থাকা কিছু জমি কহিনুর বেগম ও তার লোকজন সম্প্রতি দখল করে নিয়েছে। ওই জমিগুলো কিভাবে বেদখল হয়েছিলো তা তার জানা নেই। এলাকায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।