শহীদ খোকা
বুকের তাজা রক্তে ভিজে
হাসি মুখে প্রাণকে বিলিয়ে
মায়ের মুখের কথা ছিনিয়ে আনতে-
তোমরা ছিলে বীর সৈনিক বেশে।
পিছন ফিরে তাকানোর সময় ছিল না।
চোখ মুখের ভাষা একটাই,
মায়ের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে দেব না।
শেষ রক্তটুকু দিয়ে ছিনিয়ে এনেছো মায়ের ভাষা।
সেই ভাষায় আমরা কথা বলি।
মনের ভাব ব্যক্ত করি হাসি, কাঁদি, গাহি গান,
সেই ভাষা, সেই ভাষার জন্য
অমরত্ব নিয়ে গড়িয়ে পড়েছ মাটির কোলে।
ওদিকে মা বসে আছে, কখন খোকা ডাকবে?
মা - মা এইতো আমি এসেছি
দেখ, তোমার ছেলে-
ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত,মাটিমাখা শরীর নিয়ে
তোমার কাছে এসেছে ফিরে।
আমাকে বুকে জড়িয়ে নাও।
আমাকে ভাত দাও, আমি খুব ক্ষুধার্ত।
আজ কয়দিন হলো
ভাত চোখে দেখি না, মা - আর পারছি না।
হঠাৎ মায়ের স্বপ্ন ভাঙ্গে,
দরজা খুলে উঠানের এপাশ ওপাশ ছুটে চলে।
কই? খোকা, তুই কই?
আমি তো তোকে দেখছি না।
আয় খোকা, আয় আমার বুকে আয়।
কোথায় মায়ের সোনার খোকা?
সে আজ রক্তে ভেজা লাশ।
দেহ
কান্না দিয়ে জন্ম তোমার, মাটি দিয়ে গড়া।
হেসে খেলে দিন কেটে যায়,
যায় চলে যে বেলা।
চোখ বুঝলেই দেখতে পাও -কি যে তোমার খেলা?
আরশিতে উঠে ভেসে, তোমার কীর্তিকলাপ।
শৈশবেতে যেমন তেমন যৌবনেতে রাজা।
মাদকে আসক্ত হয়ে, পর্ন ভিডিও দেখে,
নারী নিয়ে মত্ত হতে একান্তই বাসনা জাগে।
সে শিশু ! না নারী! নাকি মা, না বোন!
এ জ্ঞান টুকু গেলে হারিয়ে।
সব খানেতে ছুটে বেড়াও
নেইকো কোনো মানা।
আদর যত্নে রাখ তুমি মাটির দেহ খানি,
দিনে দিনে যায় শুকিয়ে বয়সের ভারে নুয়ে পরে।
যায় ভুলে যে কে মহান?
এই দেহ কে তৈরি করল? দিলো তাতে প্রাণ।
সেই-ই যে মহান সৃষ্টিকর্তা, চাক্ষুস প্রমান।
পশু, পাখি, কীটপতঙ্গ, সবার আছে জান।
নির্বিচারে হত্যা কর, হয়ে পাষান হৃদয়।
তোমার যখন মৃত্যু হয় অসর দেহ পড়ে রয়।
মাটির নিচে স্থান হয়।
ওই যে পতঙ্গ তোমার দেহ চুষে খায়।
কেমন লাগে তোমার?উপলব্ধি হয়?
তবে প্রকাশ নাহি হয়। তাই তো বলি,
মাটির দেহের বড়াই আর কোরো না ভাই।