মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

সুন্দরবনের উপকূলে বোরো ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৭ Time View

 

এস.এম. এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:

বসন্তের বাতাসে ইরি-বোরো ধানের সবুজ ঢেউ কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। বৈশাখের বাতাসে ঢেউয়ের মতো দোল খাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ।বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় শস্যভাণ্ডার নামে খ্যাত উর্বর ভূমি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ সহ ৯ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সবুজে ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়েই এখন সবুজের সমারোহ। বোরো ধানের শিষে দোল খাচ্ছে কৃষকের বুকভরা সোনালী স্বপ্ন। ধান গাছের সবুজ পাতা আর কাঁচা শিষ দেখে আনন্দে ভরে উঠেছে কৃষকের মন।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ধানের ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের প্রতিটি ক্ষেতে শীষ উকি দিচ্ছে। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকের। কৃষকরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং ব্যবহার করছেন কেউ কেউ। মোরেলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কাঠালতলা ও বিশারীঘাটা  গ্রামের শতাধিক কৃষক দেশি আমন ধান ঘরে তোলার পর এবারে মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৯ হাজার হেক্টর ফসলি পতিত জমিতে বোরো ধানের চাষ করে বাম্পার ফলন ফলিয়েছে। খাউলিয়া, বনগ্রাম, বলইবুনিয়া, হোগলাপাশা, চিংড়াখালী ও হোগলাবুনিয়ায় এ  ফসল উৎপাদন করেছেন কৃষকেরা।মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে ৯ হাজার  হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোপা আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। ধানের সবল-সতেজ চারা এবং শীষ বের হয়েছে। তাই এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এদিকে ধানের শীষে দুধ-দানা গঠন শুরু হয়েছে। আর কিছু মধ্যেই দানা পরিপক্ষ হলেই সোনালী ফসল ঘরে তুলতে শুরু করবে কৃষকরা। বৈশাখের বাতাসের ঢেউয়ে দুলে উঠছে প্রকৃতি। তাই ইরি-বোরো ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। ধানের কাঁচা শীষ দেখে বাম্পার ফলনের আনন্দে বুক ভরে উঠছে এই উপজেলার কৃষকদের।

কয়েকদিন পরেই ধানের সবুজ গাছ এবং কাঁচা শিষ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালী ধানের শিষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। মাঠ ভরা ফসলের রঙিন স্বপ্ন দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ছোঁয়া, বুনছে রঙিন স্বপ্নের জাল। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষক-কৃষাণীর শূন্য গোলা।
যথা সময়ে জমিতে সার, কীটনাশক প্রয়োগ ও নিবিড় পরিচর্যার কারণে ইরি-বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বিকশিত করে তুলেছে। অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও উপজেলা কৃষি বিভাগ। মাঠে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। মোরেলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ।ভাইজোড়া, কাঠালতলা ও বিশারীঘাটা  গ্রামের শতাধিক কৃষক দেশি আমন ধান ঘরে তোলার পর এবারে ২০ হেক্টর হেক্টর ফসলি পতিত জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন ফলিয়েছে। বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বোরো ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের প্রতিটি খেতে শিষ উঁকি দিচ্ছে। কৃষকরা ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উচ্চমানের এ ভালো ফলনে এবং বাজার দর ভাল থাকার কারনে আগামীতে এ বোরো ধানের চাষে কৃষকদের দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মাঠে সেচ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং ব্যবহার করছেন কেউ কেউ।

মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কৃষক শহিদুল ,আশ্রাব আলী , আব্দুর রহিম হাওলাদার বলেন, বোরো ধানের সবল-সতেজ চারা এবং শিষ বের হয়েছে। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা।

একাধিক বোরো চাষি বলেন, স্থানীয় কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষ করা ইরি-বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। এঅঞ্চলে বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহে  ধান কাটা শুরু হবে।
তখন পূরণ হবে কৃষকের স্বপ্ন।বাগেরহাট রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এস.এম.  সাইফুল ইসলাম কবির জানান, চাষিদের কে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সীড কোম্পানি পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সার ও বীজ দিয়ে গরীব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে।

কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, এবছর  বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তরা কাজ করছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। তাই এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন বলেন, কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকদের আধুনিক প্রশিক্ষন ও প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। যার ফলে দেশী আমন ফসল ঘরে তোলার পরে পতিত জমিতে নতুন নতুন একাধিক ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।  এ ভালো ফসল দেখে আগামীতে কৃষকদের আরো আগ্রহ বৃদ্ধি পারে।

এ বিষয় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় এ বছর  সঠিক সময়ে চারা লাগানো, যথাসময়ে সেচ দেয়া, নিবিড় পরিচর্যা এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। পোকামাকড় আক্রমণ না করে এমন ধান লাগানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছরে ধানে তেমন রোগবালাই নেই বললেই চলে। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102