নিজস্ব প্রতিবেদক:
৬ মে বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী স্মরণে সম্মেলন ২৫ এ বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন। প্রবীণ আলেম কবি মওলানা রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ছরছিনার বর্তমান পীর ছাহেবসহ বিভিন্ন দরবারের পীর মাশায়েখ বিশেষত ফুলতলী দরবারের অনুসারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
বালাকোট চেতনা উজ্জীবন পরিষদের আয়োজিত ব্যতিক্রমী বিশাল সম্মেলনে ড. শাহেদী বলেন,
বালাকোট এর চেতনা মানে আল্লাহর রাহে শাহাদাতের তামান্না। সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী (র) বাস্তব উদাহরণ দিয়ে দেখিয়ে গেছেন, ইসলাম মানে পীরের খানকায় বসে নির্জন সাধনা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনা ও লড়াইয়ের ময়দানের জন্য সদা প্রস্তুত থাকার প্রেরণা লালন করতে হবে। সাহাবায়ে কেরামের জমানায় মুসলমানদের পরিচয় ছিল, তারা ছিলেন রাতের বেলা সংসার ত্যাগী সন্ন্যাসী, দিনের বেলা শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ঘোড়সওয়ার। সৈয়দ আহমদ বেরলভী (র) সেই পরিচয়কে উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে উজ্জীবিত করেন।
তিনি সুফি তরিকায় বিশ্বাসী ছিলেন, চর্চাও করতেন। কিন্তু সুফিবাদের নামে ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থী যে কোনো শিরকি ও বেদাতী কর্মকাণ্ডের ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি তরিকায়ে মুহাম্মদিয়া নামে আধ্যাত্মিক সাধনার স্বতন্ত্র পথ রচনা করেন এবং ভিন্ন ভিন্ন তরিকতের অনুসারীদের শরীয়তপন্থী ও একমুখী করার উদ্যোগ নেন।
সৈয়দ আহমদ বেরলভী (র) এর জিহাদ ছিল সাম্রাজ্যবাদী দখলদার ইংরেজদের বিরুদ্ধে, শেষ পর্যন্ত ইংরেজদের এ দেশীয় দালাল শিখদের বিরুদ্ধে বালাকোট ময়দানে জিহাদ করে তিনি নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন। তার এই জিহাদ যদিও দৃশ্যত ব্যর্থ ছিল, কিন্তু কারবালায় ইমাম হুসাইনের শাহাদত বরণের মত উপমহাদেশে ইসলামের পূনরুজ্জীন ঘটিয়েছে। তার শিষ্যরাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও জিহাদী প্রেরণার বিস্তার ঘটিয়ে উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমি রচনা করেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মীর সরাইয়ের সুফি নূর মোহাম্মদ নিজামপুরি এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের চুনতির মওলানা আবদুল হাকিম (র)। চুনতি হাকিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা তারই নামে প্রতিষ্ঠিত।
ড. শাহেদী বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে বালাকোটের চেতনা সদা জাগরুক রাখতে হবে। কারণ, সাম্রাজ্যবাদীরা নানা রঙে তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। রাজনৈতিক চক্রান্ত ছাড়াও ভ্রান্ত আকিদা ও ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টির ব্যাপারে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। এটিই বালাকোটের মূল শিক্ষা।