লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
দীর্ঘ চার মাস লন্ডন চিকিৎসা শেষে বেগম খালেদা জিয়া দুই পুত্র বধূ জুবাইদা ও শর্মিলা কে নিয়ে দেশে ফিরে আসবেন আজ সকাল সাড়ে দশটায়! বিমানবন্দর থেকে গুলশান বাসা পর্যন্ত নেতাকর্মীরা অভ্যার্থনা জানাবেন! তিনি ফিরে শ্বাস নিবেন স্বৈরাচার হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশের বাতাসে! ১৯৯০ সালে বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ৫ আসনে নির্বাচনে সব-কয়টা আসনে জয়লাভ করে খেতাব পেয়েছিলেন দলীয় লোকদের কাছ থেকে "দেশ নেত্রী "! নিরপেক্ষ দেশ নেত্রী সর্বজনীন হতে পেরেছিলেন কিনা সে বিষয় এখানে আলাপে যাবো না! দেশনেত্রীর আমলে রাজশাহীর বাগমারা বাংলা ভাই উত্থান, প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা হত্যা, রাজশাহী শহরে পুলিশ পাহারায় বাংলা ভাই সহস্র লোকের অস্ত্রসজ্জিত মিছিল, ৫০০ সিরিজ বোমা একই রাতে বিস্ফোরণ, আসামের উল্ফা নেতা অনুপচেটিয়াকে বাংলাদেশে লালন-পালন, নয় ট্রাক অস্ত্র জিয়া ফার্টিলাইজার জেটিতে খালাস, বিরোধী দলের নেত্রীর জনসভায় আর্সেনিক গ্রেনেড হামলায় ---
এতবড় প্রাপ্তি কতটা বিশ্বে ধূসর রং ছিটিয়ে ছিলো সে বিষয় না-ই বা গেলাম! তবে বাংলাদেশে " মুজিবের" বঙ্গবন্ধু খেতাবের পর "দেশনেত্রী" খেতাব ধরে রাখতে সচেষ্ট হলে আজ সবার নেত্রী হতে পারতেন তিনি! জানি আওয়ামী প্রেমিরা আমাকে ভ্রুকুটি করবেন, বলবেন 'কার সাথে কার তুলনা!!'
প্রিয় পাঠক, ১৯৯০ সালে বেগম খালেদা জিয়া যে বাংলাদেশের "দেশ নেত্রী" হয়েছিলেন, আজ দেশে ফিরে কি সে-ই বাংলাদেশ পাবেন? তিনি অবশ্য তার অধিকাংশ জনসভার ভারতের কাছে দেশ বিক্রির কথা বলতেন, আমি তখন দেশ কিভাবে বিক্রি হয় তার শানেনজুল খুঁজতাম! তিনি কি জানতেন, দেশ কেনার মত মেধা ও পয়সা বিশ্বে একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আর কারো নাই! আজ ইউক্রেনের মাটির নিচের খনিজ সম্পদ ৭৫% মার্কিন পকেটে! যুদ্ধ করলো যাদের কথায় তারাই ভক্ষক! ১৯৭১ সালে নিক্সন কিসিঞ্জারের ইঙ্গিতে পাকিস্তানের "মার্কিন রাস্ট্রদূত ফারলেন্ড " মুজিব কে বলেছিলেন, "স্বাধীনতা নিয়ে যাও সেন্ট মার্টিনে আমাদের একটা শীপ ভিড়তে অনুমতি দিয়ে দাও!" মুজিব বলেছিলেন, "আমার দেশের এক ইঞ্চি জায়গার বিনিময়ে আমি স্বাধীনতা চাই না!"
সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল বলেছিলেন, "স্বীকৃতি নিয়ে যাও কিন্তু বাংলাদেশের নামটা পরিবর্তন করে 'ইসলামী প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ রাখো!" মুজিব বলেছিলেন, "মিঃ সন্মানিত বাদশাহ, আপনার দেশটার নাম তো ইসলামি প্রজাতন্ত্র সৌদি আরব না, আমার দেশে ২১% অন্যান্য ধর্মের লোকদের কোন দেশে তাড়ায় দেবো? "
মুজিব যখন জাতিসংঘের সদস্য হতে প্রয়োজনীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশের স্বীকৃতি খুঁজে হন্যে হয়ে দেশ থেকে দেশ ছুটছেন, তখন ইসরায়েল স্বীকৃতি দিয়ে ছিলো বিনা শর্তে! মুজিব বলেছিলেন, "ইসরায়েল মুসলমানের শত্রু, আমি মুসলমান পরিকল্পিত নিধনকারীর স্বীকৃতি নিতে চাই না!"
বেগম খালেদা জিয়া বাংলার মাটিতে পা রেখে জানবেন বর্তমান সরকার স্বীকার করেছেন, "সীমান্ত অনেক আগেই ভিনদেশীদের দখলে চলে গেছে, বাংলাদেশ "আরাকান নিরাপত্তা করিডোর" নামে জাতিসংঘ, মার্কিন তত্বাবধানে চলে গেছে!" তার দল বিএনপির মহাসচিব "ফখরুল ইসলাম ইসলাম' প্রতিবাদ বক্তব্য রেখেছেন! অবশ্য এই আইওয়াশ বক্তব্য Analysis করলে মনে হয়
" ইহা ইতো ছিলো মোদের মনে, সমন্বয়করা জানলো কেমনে?"
প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশ একটা অস্থায়ী "ব"দ্বীপ যা প্রবাহিত বাতাসের বিলিয়ন বিলিয়ন ধূলিকণা সমুদ্রে উর্মিমালার প্রবাহিত পলি মাটির স্তূপাকৃতি দ্বীপের মত হিমালয় বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে নিন্মে পতিত স্তুপ থেকে তৈরি ভূখন্ড! একদিন আবার বিলীন হবে প্রকৃতিগত কারনে!
দুর্ভাগা এ-ই দেশটা বার-বার বিদেশি শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছে কখনও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে কখনও মীর সাদিক মীর কাশিম ঘষেটি বেগম দের ক্ষমতার লোভে! এ ভুমিতে জন্ম নেয়া জাতি টাও একত্রিত হতে পারে নাই মুক্ত রাখতে নিজ দেশকে! হতে পারে নাই সততার উদাহরণ এক জাতি, বিশ্বের বুকে! বার-বার কষ্ট করেছেন কোন তিতুমীর মজনু শাহ সুভাষ মুজিব, জীবন দিয়েছেন লক্ষ লক্ষ তাদের সাথে সংগ্রামে, কোন প্রীতিলতা ক্ষুদিরাম নন্দলাল সত্যকিঙ্কর ---
ভারত স্বাধীনে হিন্দু থেকে মুসলমান শহীদ বেশী (প্রায় ৩ হাজারের মত বেশী, দিল্লি গেট লিপিবদ্ধ তালিকা ) তবু সেখানে মৌলবাদী শাসনে নাজিল হয় N C R, বাংলাদেশ স্বাধীনতায় হিন্দু মুসলমান প্রায় সমান সমান তবু ধর্মীয় লঘূ গুরু নির্যাতন নেমে আসে সরকার পরিবর্তনে! এ যেন দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটা দেশের আগ্নেয়গিরির ধর্মীয় জ্বালামুখে বসবাস মানুষ গুলোর!
আসল হলো ক্ষমতায় যেতে ধর্মকে হাতিয়ার করা হয়ে আসছে ধর্মপ্রাণ অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে ধোঁকা দিয়ে!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।