লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
ভারত কাশ্মীরের ভাওয়াল পুর, কোটলি, মুরিদাবাস, মুজাফফর বাদ এমনই কয়েক জায়গা এ্যায়ার স্ট্রাইক ও গ্রাউন্ড স্ট্রাইক করেছে গতরাত ৮ টা ৪০ মিনিটে ! তাদের অভিযোগ ভারতের পর্যটন কেন্দ্র পহেলা গাও ২৬ জন নিরীহ পর্যটক কে পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী হত্যা করেছে! এটা তার প্রতিশোধ!
বিবিসির তথ্য মতে জন ৮/১০ মারা গেছে! তিনি সূত্র টেনেছেন পাক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফের! আমি এটাকে "যুদ্ধ" বলতে নারাজ, কারন ভারত বলেছে প্রতিশোধ, পাকিস্তানের ভিতর দেখলাম নাই কোন ক্রোধ! উড়ালো না বিমান, নাই কোন পাল্টা আক্রমণ! হয়তো-বা হবে, সেদিন জানে কে-বা কবে?
প্রিয় পাঠক, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলা গাও জঙ্গি দ্বারা পর্যটক হত্যা হলো পাক সেনাপ্রধানের সেনাবাহিনীর সভায় পাকিস্তানের ঐতিহ্য ইতিহাস শিখানোর পরপরই, এই ভুল ইতিহাস শিখানো নিয়ে আমি একটা প্রবন্ধ লিখেছিলাম যদি কেউ পড়ে থাকেন!
দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে চাই পাকিস্তান সেনাবাহিনী একটা যুদ্ধ নাটক চায়, তা-না হলে তাদের পুতুল সরকার শাহবাজ শরীফের ক্ষমতায় থাকা দায়! এমন সরকার থাকলে লুটেপুটে খাওয়া যায়! জনগনের দৃষ্টি অন্য দিকে ফিরানোর জন্য যুদ্ধ চায়!
পাকিস্তানের জনগনের ৮০% ইমরান খানের নিঃশর্ত মুক্তি চায়! তারা সেনা শাসন বিরোধী! ইসরায়েলের নেতানিয়াহু যখন জনসমর্থন তলানিতে তখন হামাস যুদ্ধ বেধে গেলে জনগন নেতানেহু ভুলে জীবন রক্ষা করতে ব্যস্ত! পাকিস্তানের ও সেই কৌশল! সেনাপ্রধান আসিফ মুনির দেশের আসল চাবি খান!
পাঠক, ভারত পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের শত মাইল ভিতরে যেয়ে সফল ক্ষেপণাস্ত্র ফেলে এলো বিনা প্রতিরোধে! সংবাদ শুনে আমি লেখক বিশ্ব ভ্রমনে বের হলাম জানতে, যুদ্ধ হলে গ্লোবাল পলিটিক্সে কে কোন দিকে! আমেরিকা রাশিয়া চীন উঃ কোরিয়া জাপান ইসরায়েল সব ঘুরে দেখলাম, সবাই ভারত সমর্থক। ভার্চুয়াল কারো সমর্থন বুদ্ধি পরামর্শ ইউক্রেনের মত কোন ওস্তাদ দিতে পারেন --- ইরানকে পেলাম কৌশলগত অবস্হানে, আফগান বলেছে সে নিরপেক্ষ দর্শক! ভারতের বড় শত্রু যাকে ভাবি সেই চীনের রপ্তানি ভারতে বছরে ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশী! আমরা বাংলাদেশীরা মায়ের পেটের ভাইকে ফেলে যাবো না, আগে এমন আভাস ছিলো, পাক ভারত যুদ্ধ হলে আমরা সেভেন সিস্টার্স দখল করে ফেলবো রাতারাতি এবং বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার সভায় একজন বলেছিলেন কয়েক ঘন্টায় পশ্চিম বাংলা দখল করে নেবো! তাই আমি আমার নিজ দেশ ঘুরতে সাহস পেলাম না! জাতিসংঘ সেই কাগুজে বাঘের পরামর্শ, আলোচনা করে মিটে যাও!
আসুন একটু আলোকপাত করি বিগত তিনটা চারটা পাক ভারত যুদ্ধের ফলাফল কেমন ছিলো?
যখন লালবাহাদুর শাস্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন পাকিস্তান চীনকে ডেকে কাশ্মীর আক্রমণ করান এবং ৪৩ হাজার কিলোমিটার (২০% কাশ্মীর) চীন দখল করে নেয়, আমেরিকা ধমক দিলে চীন থেমে যায়! আইয়ুব খান মনে করে এই সুযোগে কাশ্মীর আক্রমণ করি, সে যুদ্ধে পাকিস্তানের শোচনীয় পরাজয় হয়!
১৯৬৫ যুদ্ধে ভারত লাহোর পর্যন্ত দখল করে নেয় এবং পূর্ব পাকিস্তান একদম অরক্ষিত ছিলো! মুজিব এই ইস্যু তার মুখ্য করে সমর্থন বাড়ায় এবং আইয়ুব খান কে তাড়ায়! ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধে ও পরাজয় পাকিস্তানের! ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান হারায় এবং পশ্চিম সেক্টরে ১৫ হাজার কিলোমিটার ভারত দখল করে নেয় বিনা প্রতিরোধে, ১৯৭২ সালে সিমলা চুক্তিতে ভারত দখলকৃত জায়গা ছেড়ে দেয়! তবে পূর্ব পাকিস্তান ফেরত পায় নাই, পেয়েছিলো ৯৩ হাজার ফেরেস্তা তুল্য সেনা যারা মুসলমান হয়ে মুসলমান ৩০ লক্ষ হত্যা করেছে, ৪ লক্ষ মা-বোনকে ধর্ষণ করেছে এবং ১ লক্ষ জারজ শিশু জন্ম দিছে যা মুজিব বৃটেন নরওয়ে নেদারল্যান্ডস সহ ১৫ টা দেশের কাছে পূনর্বাসন চায় এবং তারা দত্তক নিয়ে যায়! সে সব শিশু আজ পরিপক্ব মানুষ, বিদেশি বাবা-মার সাথে বাংলাদেশে আসে কেউ কেউ তাদের মাকে খুঁজতে! আরও একটা পূন্যের কাজ করেছে পাকিস্তান! কাশ্মীর মুসলমান ভাইদের ২০% জায়গা চীনের অধীনে ষড়যন্ত্র করে দিয়ে আজীবন তাদের স্বাধীনতা চিররুদ্ধ করে দিয়েছে! তিনদেশ থেকে কোনদিন ও মুক্ত হওয়া সম্ভব নয়!
প্রিয় পাঠক, ২. ৯ বিলিয়ন রিজার্ভ নিয়ে পাকিস্তান ৯৬ ঘন্টা যুদ্ধ রসদ জোগাড় করতে পারবে যা এক জরিপে উঠে এসেছে! এই যুদ্ধ খেলায় ইউক্রেন হয়ে গেলে ও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না কারন ভারত এখন আর ১৯৭১ সালের ভারত নয়, ফায়ারফক্স জরিপে তারা সামরিক শক্তি তে ৪ নাম্বারে! ভারতের দলমত নির্বিশেষে একমত, পাকিস্তানের ৮০% মানুষ আসিফ মুনির বিরোধী, ৫০০ জন সেনা ও অফিসার মিলে ইস্তফা দিয়েছে! পরমাণু ওয়ার হেড একমাত্র সম্বল তা ব্যবহার করলে চিরতরে ধূলিসাৎ হবে পাকিস্তান নামক দেশটা! আমরা ও রেহাই পাবো না! বিশ্বের তাপমাত্রা কমে যাবে, তেলের দাম বাড়বে, শেয়ারবাজার ধস নামবে! এবং ভারত যদি মনে করে এ সুযোগে বাংলাদেশে একটা ফেলে দেই ---
ভারতের অজিত ডোবাল ও আমেরিকার মার্ক রুবিও খোশ মেজাজে কথা বলতে দেখলাম! দুই কি পারসন্স অফ দি কান্ট্রি!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।