একে মিলন সুনামগঞ্জ থেকে:
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা গৌরারং ইউনিয়নে
ভূমিহীন গৃহহীন সাধারণ মানুষের জন্য স্বপ্নের ঠিকানা হল আশ্রয়ন প্রকল্প গুচ্ছ গ্রাম। আর এই গ্রামের বসবাসকারী খেটে খাওয়া মানুষের যাতায়াত ঘিরে গজারিয়া নদীতে খেয়াঘাটের উৎপত্তি। সদর উপজেলার গজারিয়া নদী তীরবর্তীতায় বিগত সরকারের আমলে আশ্রয়ন প্রকল্পে ১৪৭টি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়৷ আশ্রয়ন প্রকল্পে হিন্দু মুসলিম পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে থাকেন। গুচ্ছ গ্রমের বসবাসকারীরা যাতায়াতের জন্য দু-আড়াইশ ফুটের গজারিয়া নদী পাড়ি দিতে হয় তাদেরকে। যার অবস্থান সদর উপজেলা গৌরারং ইউনিয়ন এলাকায়। প্রতিদিন গুচ্ছ গ্রামের শত শত নারী পুরুষ সহ ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক সহ গ্রামের বাসিন্দাদের পারাপার হতে হচ্ছে৷ ছোট্ট এ খালে খেয়া পারাপারের জন্য ইজারা না দেয়ার জন্য স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দৃষ্টি কামনা করেছেন গুচ্ছ গ্রাম বাসী।
জানাযায়, গজারিয়া খালে খেয়াঘাট লিজ না দেওয়ার জন্য লালপুর গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা বাদশা মিয়া চলতি বছরের গত ৩০ এপ্রিল ২০২৫ইং সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন৷ অভিযোগে উল্লেখ করা হয় – ইউপি চেয়ারম্যান শওকত মিয়া, গত ১৪৩১ বাংলা সনের জ্যৈষ্ঠ মাস হতে ৬ মাসের জন্য লালপুর (গুচ্ছ গ্রাম) সংলগ্ন গজারিয়া খাল জনগণের পারাপারের জন্য (একলক্ষ দশ হাজার) টাকায় অবৈধ ভাবে লিজ দিয়ে প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে দিনে ৫ টাকা হারে আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীরা অধিক ভাড়ার অর্থ প্রদানে ব্যার্থ হলে মারধোর, অকথ্যভাষায় গালিগালাজ সহ শ্লীলতাহানির মত ঘটনাও ঘটছে। গুচ্ছগ্রামবাসীর স্বার্থে চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও ইজারাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ সহ গজারিয়া নদীতে খেয়াঘাট ইজারা না দিয়ে উন্মুক্ত করার দাবি জানান তারা।
গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা,মাসুক মিয়া, মোঃ আলী হোসেন, সমির উদ্দিন, আজিজুল, জহুর মিয়া, মোঃ ইয়াছিন মিয়া, মোঃ নূর উদ্দিন, লাল মিয়া প্রতিবেদকে বলেছেন, আমদের অভাব অনটনের সংসার দিনমজুরি করে সংসার চালাই এবং দিন শেষে একটু প্রশান্তির জন্য বাড়িতে এসে ঘুমাই। দিনের বেলা শুষ্ক মৌসুমে খেয়া পারাপারের জন্য আসা যাওয়া ১০ টাকা, বর্ষায় ২০ টাকা ভাড়া৷ অনেক সময় কাজে একটু দেরি হলে খেয়াপারাপারে সময় ২০- টাকা আবার কখনো কখনো ৩০ টাকা দিতে হয়। ইজারাদারের মনমতো না হলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ্য করতে হয়, কাঁদা মাটিতে শাস্তি স্বরূপ নামিয়ে দেয় ইজারাদারের লোকজন৷ গজারিয়া নদীতে গুচ্ছগ্রামের ইজারাদারের জুলুম অত্যাচার অবিচার মারধর সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের তথ্য তুলে ধরনের এবং ইজারা বাতিল করার আহ্বান জানান কর্তৃপক্ষের কাছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী বলেন, ইজারার ব্যাপারে আপত্তি থাকায় আপাতত খেয়া পারাপারের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে৷ ইউএনও মহোদয়ের সাথে আলাপ করে পরবর্তীতে পূণঃদরপত্র আহ্ববানের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করা হবে।
ইজারা সম্পর্কে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও অর্তীশ দর্শী চাকমার কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।