কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
সভ্য সমাজে আমি নারী
স্বামীর সহধর্মিণী, স্ত্রী,
সত্যি করে যদি বলি
আমি ক্রীতদাসী, স্বামীর স্হায়ী ভোগ্য
স্বামীর সংসারে নই আমি কেহ
যতই হই আমি শিক্ষাদীক্ষায় যোগ্য !
আমি রাঁধুনী, আয়া, সেবিকা
আমি হই সংসারে হরহামেশা উৎখাত,
পানের থেকে চুন খসলে উঠে যায় আমার ভাত
হই নিপীড়িত, বিতাড়িত , ধর্ষিত !
আমার অসুস্থ হতে নাই --
স্বামীর সময়মতো খাবার চাই, সেবা চাই,
সন্তানের সুষ্ঠু লালনপালন চাই
পতি পরমেশ্বর, তারও চাই অনেক কিছু
উপোস তার থাকতে নাই !
মাছ কুটি, তরকারি কাটি বা মশল্লা পিষি
যখন তার ইচ্ছে হয় ---
হাত ধরে টেনে নেয় বিছানায়,
নারীর ইচ্ছে অনিচ্ছার কোন মূল্য নাই
কার কাছে বলি, কোথায় আমি বিচার চাই ?
প্রতিবাদ করলে আমার শিক্ষার দোষ
হাজার অপবাদ ঘাড়ে চাপে, আমি তখন নন্দ ঘোষ,
শাশুড়ী ননদ দেবর, সব হয় একজোট
আমার বিরুদ্ধে বসে আদালত কোর্ট !
স্বামীর সব নোংরামি করতে হয় সহ্য
আমি স্ত্রী, স্হায়ী সেবিকা, আমার হতে নাই অধৈর্য্য,
ভোমিটিং পিল খেয়ে, নিতে হয় সব মেনে
"তুমি নায়ক পুরুষ" বলতে হয় সব জেনে !
কোন অনুষ্ঠানে গেলে, আমি স্বামীর নায়িকা
শোবিজের পাপেট আমি,
করায় পরিচয় দেখে লোক দামী দামী,
আমার শিক্ষার যোগ্যতা করে বর্ননা
খুবই গর্ব ভরে, মনের মাধুরি মিশিয়ে, আদরে,
এমএসসি,এমএড,এমএস অধ্যাপিকা, ঢাকা সদরে!
তখন আমি মধুবালা, ডঃ নীলিমা
ঘরে ফিরলে সব শেষ, চোখেমুখে কালিমা,
"কেন অমুকের পা ছুয়ে করলে না ছালাম
কেন একটু ইংরেজিতে করলে না বাক্য কালাম,
কেন মেকআপ টা করো নাই গাঢ়ো?
দেখলে মনে হয় চুলগুলো ঝোড়ো ! "
স্বামী দেবতা, পতি পরমেশ্বর
অধিকার তার সীমা ছাড়া আনন্ত্যা, অর্বুদ,
আমি ক্রীতদাসী আমার প্রতি বৈষম্য অদ্ভুত
সুস্থ অসুস্থ অভুক্ত 'দাম্পত্য অতৃপ্ত' জিজ্ঞাসে কোনজন
প্রশ্ন তুললে স্বামী সংসার সমাজে হতে হয় অপমান !
তবু লড়ছি আমরা সমঅধিকার নিয়ে
কে দেবে এনে অধিকার, প্রতি বাসায় বাসায় যেয়ে
প্রতি ঘরে ঘরে উঁকি দিয়ে ?
হোক স্বামী ব্যবসায়ী, সরকারি অফিসার, চন্দ্রা শশী
সুযোগ পেলেই মেয়ে মানুষের গতর বেড়ায় চষি,
কেউ অফিস কক্ষে হয় যৌনসম্ভোগে লিপ্ত
কেউ সিঙ্গাপুর নেপাল ব্যাঙ্কক যেয়ে শিশ্ন করে সিক্ত!