এস এম রকিবুল হাসান
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর নিয়ামতপুরে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে নিয়ামতপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আর অপারেশনে অংশ নেওয়া ডাক্তার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গতকাল (৯ মে) বিকেলে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গোপালচক এলাকার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগমের (২৫) রক্তক্ষরণ হলে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ওই ক্লিনিকে ভর্তি হোন। ক্লিনিকের মালিক অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটের বাচ্চা মারা গিয়েছে বলে তাদের জানান এবং দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। তা না করলে প্রসূতিকে বাঁচানো যাবে না বলে তাড়াহুড়ো শুরু করেন। তাদের তাড়াহুড়োয় অপারেশন করার জন্য বলেন প্রসূতির বাবা-মা।
এ ঘটনায় রাজশাহী মেডিকেলের সার্জন রুহুল আমিন অপারেশন শেষে নারী ও শিশুকে রেখে চলে যাওয়ায় নবজাতকের শ্বাস না নেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।ক্লিনিক মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে প্যাকিং করে রাত ৮ টার দিকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। ভুলক্রমে প্যাকিং বাক্সে অপারেশনের কাঁচিও রেখে দেন।
বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যরা দাফনের প্রস্তুতির সময় হঠাৎ সেই নবজাতক নড়ে ওঠে। শিশুটির প্রাণ আছে বুঝতে পেরে দ্রুতই উপজেলা সদরে আসেন। থানায় বিষয়টি অবহিত করলে তাঁরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কায়সার রহমান শিশুটি জীবিত রয়েছে বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। রাজশাহী মেডিকেল নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই অন্তঃসত্ত্বার মা নাজমা বলেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের তাড়ার কারণে দ্রুত অপারেশন করা হয়েছে। শিশুটি মারা গেছে বলে আমাদের কাছে তুলে দেয়। দাফন করার উদ্দেশ্য নিয়ে গেলে শিশুটি নড়ে ওঠে। আমরা খুব অসহায় মানুষ, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী পারমিতার দাবি,
অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই অপারেশন করা হয়েছে। নবজাতক মৃত্যুর ঘটনাটি দূর্ঘটনা বলছেন তাঁরা।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, নবজাতককে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।