রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

‎গরমে এলএসডির প্রকোপ,পশুর হাটে থাকছে সংক্রমণের ঝুঁকি

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
  • ৩২ Time View

‎হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

‎‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ বা এলএসডি নামে গবাদিপশুর এক ভাইরাস, যা করোনা ভাইরাসের সময়কাল থেকে দেখা মিলেছে।মানবজাতির জন্য করোনা যেমন প্রাণঘাতী ছিলো,গবাদী পশুর জন্য এলএসডি তেমন।করোনার প্রকোপ থেমে গেলেও গবাদিপশুর ভাইরাস এলএসডি যেন স্থায়ী বাসা বেঁধেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলাসহ সারাদেশে। গরমে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয় বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তাই আসন্ন কুরবানী ঈদকে ঘিরে গরুর বাজারে বিশেষ সতর্কতার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা। এ রোগে আক্রান্ত গরুকে হাটে না আনার কথা বলছেন তারা।

‎সরেজমিনে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ ভাইরাসে অসংখ্য গরু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এলএসডি গরুর জন্য একটি ভয়ঙ্কর ভাইরাসজনিত চর্মরোগ, যা খামারের ক্ষতির কারণ। তবে এ রোগে হতাশ না হয়ে অধিক সচেতনতা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কথা বলছেন প্রাণীসম্পদ অফিস। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে নিয়মিত ভ্যাকসিন নিতে বলছেন তারা।

‎জানা যায়, ১৯২৯ সালে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে এ রোগ দেখা দেয়। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে মহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। আরো জানা যায়, বাংলাদেশে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রথম দেখা দেয় ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে। এরপরই মাঠে নামে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তদন্ত টিম। তখন দেশের ১২ জেলায় ৪৮ হাজার গরুর মধ্যে এ রোগের লক্ষণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। মশা-মাছির বেশি বিস্তারের সময় ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তবে গবাদিপশুর এ রোগ থাকলেও মানুষে আক্রান্ত হবার কোনো ইতিহাস নেই।

‎প্রাণী সম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়, এলএসডি আক্রান্ত গরু প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং খাবার রুচি কমে যায়। জ্বরের সাথে সাথে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়, দুই পায়ের মাঝে পানি জমে যায়। পশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পিন্ড আকৃতি ধারণ করে,লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষত শরীরের অন্যান্য জায়গায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কারণে গরুর পানি পানে অনীহা তৈরি হয় এবং খাদ্য গ্রহণ কমে যায়।

‎মশা মাছি ছাড়াও অন্যান্য কীট-পতঙ্গের মাধ্যমেও ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গরুর লালা গরুর খাবারের মাধ্যমে এবং খামার পরিচর্যাকারী ব্যক্তির কাপড়ের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়াতে পারে। গ্রাম-গঞ্জের প্রাণি চিকিৎসকগণ এক সিরিঞ্জ ব্যবহার করে বিভিন্ন গরু-ছাগলকে টিকা দেয়। এতেও সিরিঞ্জের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাসে আক্রান্ত ষাঁড়ের সিমেন প্রজননে ব্যবহার করলেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। শুধু গরু, মহিষ ও ছাগল এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

‎তবে খামারের ভেতরের এবং আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে মশা-মাছির উপদ্রব কমিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আক্রান্ত গরুর খামারের শেড থেকে আলাদা করে অন্য স্থানে মশারি দিয়ে ঢেকে রাখলে অন্য গরুতে সংক্রমণ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আক্রান্ত গরুর ব্যবহার্য কোনো জিনিস সুস্থ গরুর কাছে না আনা বা খাবার অন্য গরুকে খেতে না দেওয়া।

‎প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.উজ্জ্বল হোসাইন জানান, সচেতনতার মাধ্যমেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হয়। তাই লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলেই দ্রুত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা রেজিস্ট্রার্ড প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102