ইমরান আহমদ, গোয়াইনঘাট থেকে
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১২ নং সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আলীর গ্রামে জাহানারা বেগমের নেই মাথা গুজার টাই। দীর্ঘদিন স্বামী মরণব্যাধি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পরেই জাহানারা বেগমের পরিবারে নেমে আসে শোকের মাতম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিধবা জাহানারা বেগমের ঘর একেবারে জরাজীর্ণ। মাটির দেয়াল ভেঙে গেছে। ঘরের চালে পলেথিন দিয়ে রেখেছেন। বৃষ্টির পানি পড়ে ঘরের মেঝে-দেয়াল স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকে। বিশেষ করে বসবাসের অযোগ্য পরিবেশে মানবেতর জীবন যাপন করছেন জাহানারা বেগম।
গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন স্বামী হারা জাহানারা বেগম সাত সন্তান নিয়ে খুব কস্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুনিয়াতে দেখার মতো কেউ নেই তার। সমাজের কোনো হৃদয়বান ব্যাক্তি একটি ঘর করে দিলে বড় উপকার হতো।
প্রতিবেশীরা জানান, খিদের জ্বালা একজন মানুষ কতক্ষণ সইতে পারে। একমুঠো ভাতের জন্য
মাঝে-মধ্যেই প্রতিবেশীদের বাড়িতে কান্না করেন জাহানারা বেগম। তারা বলেন, জাহানারা বেগমের নেই নলকূপ , নেই স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার ব্যাবস্থা। এমন কি পায়নি বিধবা ভাতা কার্ডও। কাজ করলে খেতে পায়, কাজ না পেলে না খেয়ে দিন-রাত কেটে যায়। কী নিদারুণ কষ্টে বেঁচে আছেন সাত সন্তানের মা জননী জাহানারা বেগম।
কান্না জড়িত কণ্ঠে জাহানারা বেগম জানান, পাঁচ মেয়ে দুই ছেলে রেখে এক বছর আগে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বামী কামাল উদ্দিন মারা যান। স্বামীর দেওয়া এক টুকরো জমি আর এই ভাঙাচুরা জরাজীর্ণ কুঁড়েঘর ছাড়া সম্বল বলতে আমার আর কিছু নেই। পরিবারের সবার বড় মেয়ের বয়স ১৮ বছর। পরিবারে নেই কোন ইনকাম সোর্স। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। এখন অন্যের ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছি। যদি সমাজের কোন হৃদয়বান কিংবা বিত্তবান ব্যাক্তি আমাদের ঘরে থাকার মতো ব্যাবস্থা করে দিতেন তাহলে আমি আমার সাত সন্তান নিয়ে খেয়েদেয়ে বেঁচে থাকতে পারতাম।
১২নং গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সুমন বলেন জাহানারা বেগমের স্বামী মারা যাওয়ার এক বৎসর হয়েছে আমরা অতিথে ও সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছি এবং বর্তমানেও তার ঘরের বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চিন্তাধারা আছে, আমরা যদি এরকম কোন বরাদ্দ পাই সর্বাগ্রে আমাদের সহযোগিতা থাকবে।