স্টাফ রিপোর্টার:
জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত মানবিক করিডোর দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বদলীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন রয়েছে। রোহিঙ্গাদেরকে করিডোর দেয়া হলে আরাকার আর্মি এ করিডোর দিয়ে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি যদি আরাকানে অস্ত্র বা গোলাবারুদ ঢোকে, যদি ‘মিলিটারাইজেশন’ হয়, তাহলে পরিস্থিতি জটিল হবে। জাতীয় স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়, এমন কাজ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরত থাকা উচিত। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে মনে করি। ভুরাজনীতিতে ভারত মহাসাগর ঘিরে এক প্রকার বলয় তৈরির প্রতিযোগিতা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারতের মতো বৈশ্বিক ও আঞ্চিলক শক্তিগুলোর আধিপত্য ও ক্ষমতা বিস্তারের বলয় হচ্ছে এ মহাসাগর। প্রকৃতপক্ষে বড় দেশগুলোর এ ভূকৌশলগত আধিপত্যের লড়াইয়ে ছোট দেশগুলো বৃত্তবন্দী। রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার আগে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে কয়েকটি বিষয় আগে নিশ্চিত হওয়া উচিত। এ করিডোর কি বাংলাদেশের ভূকৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে, নাকি ক্ষতি করবে। বাংলাদেশ কোনো দেশ বা জোটের ভূরাজনৈতিক কৌশল বাস্তবায়নের গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না। আর এ করিডোর দিয়ে কোনো বৃহৎ শক্তি জোট বা দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের শত্রু হচ্ছি কি না।
নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করে দেশের সম্ভাবনাময় একটি দ্বীপকে রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। যা দেশের জন্য কখনো শুভ হতে পারে না। ¯’ানীয়রা প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা কর্তৃক অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হচেছন। স্থাানীয় প্রশাসনের দারস্থ হলেও প্রতিকার পাওয়া যাচেছ না। রোহিঙ্গাদের কারণে এলাকার আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি ঘটছে। এলাকার পরি¯ি’তি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। তাই মানবিক করিডোর বিষয়ে আরও ব্যাপক আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের কারণে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী লাভবান হলেও স্থানীয় মানুষজন অবর্ণনীয় দূর্ভোগে রয়েছেন। ১ জুন ২০২৫, রবিবার, বিকেল ৩.৩০ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাব, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত “মানবিক করিডোর-নিরাপত্তা ঝুঁকিতে উদ্বিগ্ন আমজনতা” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ডক্টর মোহাম্মদ জকরিয়া। মূল প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির মহাসচিব এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী। বাংলাদেশ সাপোর্টাস ফোরামের সহযোগিতায় অনুনুীষ্ঠত গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, আমার বাংলাদেশ পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ভুইয়া, গণ অধিকার পরিষদের সাধারন সম্পাদক মোঃ রাশেদ খান, জনতা পার্টি বাংলাদেশ এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আসাদুজ্জামান, সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্দুল আউয়াল ঠাকুর, পদ্মা গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহ মুরাদ, বিশিষ্ঠ রানীতিবিদ ও শিল্পপতি আলহাজ্ব মোঃ আকবর হোসেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আনেবদালনের আহবায়ক সাবেক সহকারী কর কমিশনার মির্জা শরীফুল আলম, অধ্যক্ষ রাফিকা আফরোজ, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাসেম মজুমদার প্রমুখ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খানের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাপোর্টার্স ফোরামের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শহীদ মঞ্জু, বাংলাদেশ ব্যাংক এর এডিশন্যাাল ডিরেক্টর ও জাতীয় নারী সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি হাসিনা মমতাজ হাসি, সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায, বাংলাদেশ নতুন ধারা জনতা পার্টির আহ্বায়ক মোঃ আব্দুল আহাদ প্রমূখ।
বক্তারা আরো বলেন এই ধরনের আন্তর্জাতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টির ন্যায্যতা বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বার্থে অবিলম্বে একতাবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ অপরিহার্য মনে করি। বাংলাদেশের মনে রাখতে হবে কোনো কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশটি যেন ভূরাজনীতির ক্রীড়াভূমিতে পরিণত না হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশে বিষফোঁড়ার মতো। কোনো হঠকারি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশের এই সমস্যা আরো ঘনীভূত হলে তার মাসুল দিতে হবে।
এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা জড়িত আছে তাই ভেবে চিন্তে আগাতে হবে।
বক্তারা বলেন সরকার এমন কোনো কাজ করবেন না যা জাতির বিরুদ্ধে যাবে, বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে যাবে। যেটা কক্সবাজার বাসী বাংলাদেশের মানুষের জন্য উপযোগী হবে না।