লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীরা সবাই মোটামুটি মুক্ত জীবনে! যারা জেল বন্দী ছিলেন এবং যারা প্রতিবেশী দেশ সহ পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশে আশ্রয় পেয়েছিলেন তারা সবাই বাংলাদেশ মুখী! বাংলাদেশ এখন স্বৈরাচার মুক্ত এ আনন্দ থেকে তাদের ও বঞ্চিত থাকার কথা না! ৯০ দশকের শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ ২০ বছর কারাভোগের পর প্রেসিডেন্ট মার্সিতে মুক্তি পেয়েছিলেন (সমকাল)! এমনি জেল ভেঙে, রাজনৈতিক বিবেচনায়,
বিভিন্ন ভাবে আগের শক্তিতে বলিয়ান! একসময় রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় সন্ত্রাসী চাষ হতো! সুব্রত বাইন, কালা জাহাঙীর, মোল্লা মাসুদ, প্রকাশ কুমার, আগা শামীম, মানিক, সাগর, কচি, ছোট্ট হান্নান, জিসান, বিকাশ, মুরগী মিলন এমন অর্ধ সহস্র সন্ত্রাসী তৈরি হয়েছিলো রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায়! ডাঃ সুলতানা জাহানের ছেলে ইমন বিএনপি নেতা পিন্টুর ছত্র ছায়ায় বেড়ে উঠেছিলো, মোহাম্মদ পুর আওয়ামী নেতা হাজী মকবুল ও তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন!
৫০০ সিরিজ বেমা ফুটানো, বাংলা ভাইর রাজশাহী শহরে সহস্র লোকের অস্ত্র মিছিল পুলিশ পাহারায় সব ই রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় হয়েছিলো! শায়েখ আঃ রহমান বাংলা ভাই ২০০৮ সালে সেনা ব্যাকড সাময়িক সরকার ফাঁসি না দিলে আজ হয়তো মুক্তি পেতে পারতো! এমনি মুক্তি পেয়েছিলো রাজনৈতিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেভেন সিস্টার্স নেতা শফিউল আলম প্রধান, গোপালগঞ্জের হেমায়েত, ১১ হাজার কনভিকটেড আসামী, ৩০ হাজার বিচারাধীন -
সবই বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ১৯৭৫ সালে মুক্তি পায়!
প্রিয় পাঠক, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর হাজার হাজার অস্ত্র মানুষের হাতে ছিলো! ভারতের দেয়া অস্ত্র, আভ্যান্তরীন আহরন হিসাব ছাড়া অস্ত্র ছিলো মানুষের হাতে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে যারা অস্ত্র জমা দিয়েছিলো তার থেকে বেশী অস্ত্র ছিলো চৈনিক নকশাল দেবেন শিকদার গণবাহিনী সিরাজ শিকদার আত্ম গোপনে থাকা রাজাকার প্রভৃতি দলের হাতে। গোপনে থাকা রাজাকারের হাতে খুলনা এলাকায় তিন জন সাংসদ হত্যা হয়েছিল। মুক্তি যোদ্ধা যারা ছিলো তারা ছিলো অনেকটা কুলি মজুর চাষা শ্রমিক কিশান কামলা! তাদের ট্রেনিং ছিলো, সদ্য স্বাধীন দেশে অভাব ছিলো, এই শ্রনী পুরাটা ডাকাত হয়ে যেতে পারতো! তারা ছিলো বেটে খাটো ২৮, ৩০ ইঞ্চি বুকের মাপ! এসব লোকগুলো ডাকাতি ছিনতাই তে জড়িত না হয় সেজন্য বঙ্গবন্ধু পরিবারের আয় ও অস্ত্র ট্রেনিং বিপথগামী না হয় বিবেচনা করে "রক্ষী বাহিনী" নামে আলাদা একটা বাহিনী তৈরি করেছিলেন যার সংখ্যা ছিলো প্রায় ১৬০০০ এর মত! ব্রিগেডিয়ার নুরুজ্জামান বীরউত্তম ছিলেন পরিচালক! এমন একটা সুন্দর পদক্ষেপ কে স্বাধীনতা বিরোধী তথা চৈনিক জাসদ মিলে ভারতীয়দের নিয়ে রক্ষী বাহিনী গঠিত বলে জনগন কে প্রতারণা করা হয়েছে! সেই ভুল ধারনা অনেক টা উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাহেবের ২৬ লক্ষ ভারতীয় বাংলাদেশে চাকুরী করার মত মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা! রক্ষীবাহিনী তৈরি হওয়ায় Physically unfit but arms trained person সামরিক চাকুরী পেয়েছে, বেকারত্ব কমেছে আবার সন্ত্রাসী তৈরি হতে পারে নাই! সরকার উপকৃত হয়েছে, অস্ত্র উদ্ধার সহ ছোটখাটো যে সব জায়গায় সেনাবাহিনী নামানো যায় না আবার পুলিশ ও ব্যর্থ বর্তমান R A B এর মত কাজ করেছে!
তখন সন্ত্রাসের চাষ হয় নাই! কিন্তু মুজিব হত্যার পরে সব সন্ত্রাসী ছেড়ে দেয়া হয়েছে যে ধারাবাহিকতায়
গনতান্ত্রিক সরকার আমলে ১৯৯০ সালের পর সন্ত্রাস বাদের চাষ হয়ে তৈরি হয়েছে আসলাম ইমন সুব্রত বাইনরা! হত্যা হয়েছে গাজীপুরের জনপ্রিয় নেতা
আহসানুল্লাহ মাস্টার , কিবরিয়া হত্যার মত শত হত্যা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় !
প্রিয় পাঠক, দৈত্য ঘাড়ে তুললে আর নামানো যায় না! সিন্দাবাদ ও দৈত্য ঘাড় থেকে নামাতে পারেন নাই!
"বেগম খালেদা জিয়া" দৈত্যের জন্য ক্ষমতায় এসে রাজ্য শাসনে দৈত্যদের দাবী মিটাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন!
তিনি তৈরি করেন ক্রোস ফায়ার পুলিশ RAB. ২০০৪ সালে ২৬ শে মার্চ R A B গঠিত হয়। ঐ সালে RAB এর ক্রস ফায়ারে মৃত্যু হয় ৬৫ জনের, ২০০৫ সালে ১৩০ জন, ২০০৬ সালে ১৯৫ জন! সব ই বিনা বিচারে তবে সন্ত্রাস মুক্ত হচ্ছিল বলে সবাই খুশি হচ্ছিলো। শেখ হাসিনা পরবর্তী তে ক্ষমতায় এসে প্রচুর মৌলবাদী সন্ত্রাসী মোকাবিলা করেন, খালেদা জিয়া খাটি মুসলমান তাকে আবার ধর্মীয় মৌলবাদীরা বিরক্ত করে না কখনও! আনসারুল্লাহ সহ শত নামে
সুইসাইড স্কোয়াড শেখ হাসিনা প্রশাসন কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছিলো। তার মোট ধারাবাহিক আমলে RAB এর হাতে প্রায় ২০০ হত্যা হয়! অনেক সন্ত্রাসী আটক হয়! মার্কিন সরকার শেখ হাসিনার "সন্ত্রাস নির্মূল জিরো টলারেন্স" বার বার প্রশংসা করে শুভেচ্ছা পাঠাতে থাকে!
হঠাৎ শুরু হয় মার্কিন সিনেটে R A B এর মানবতা বিরোধী বিচার বহির্ভূত হত্যার সমালোচনা ২০২০ সালে, R A B এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা!
প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশ আফগানিস্তান হয়ে গেছে প্রায়!
শিক্ষাদীক্ষা সংস্কৃতি তে আফগানিস্তান একসময় ছিলো সেরা, কবি রুমি, সম্রাজ্ঞী নূর জাহানের জন্মস্থান! আলেকজান্ডার আফগানিস্তানে ল্যান্ড করেছিলেন, বিয়ে ও করেছিলেন কথিত আছে! মার্কিন ইসরায়েল চক্রান্তে তছনছ হয়ে গেলো দেশ টা সো কল্ ধর্মীয় বিষবাষ্প ছড়ায়ে উগ্রবাদী ইসলামের দেশ বানানো দরদী সেজে ওঁরা শেষ করেছে দেশটা! বিশ্বের সব চেয়ে বড় বৌদ্ধ মন্দির ছিলো আফগানে, ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ফলের জুসের নহর বইতো, ইরানের নারীকে ইরানি গোলাপ বলা হয়, আফগান নারী ও দারুন বিউটিফুল ছিলো! ললাটে আহম্মকে কিছু বেঈমান কালিমা লেপন করে দিলো তালেবান দেশ হিসাবে! দুঃখের কথা কয়টা এই আর্টিকেল প্রাসঙ্গিক না হলেও বললাম!
আগামী পর্বে শেষ হবে!
ক্যাপশন ঃ
সুব্রত বাইন!