কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম

আমি নারী —
সারা জীবন ঘর-সংসার করি !
জানি না কি আমার পেশা?
আমি হেঁসেল ঠেলা বাটনা বাটা রাধুনি
বাচ্চা উৎপাদনের কারখানা, প্রসব ব্যথায় মুখ ঢেকে কাঁদুনি!
আমার সুযোগ নাই, সমাজ-রাষ্ট্রব্যবস্থার সাথে মেশা!
জাতীয় পরিচয়পত্রের সময়, জিগায়, কি আমার পেশা
গঁদ বাধা “গৃহিণী” লিখে দেয়া, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নেশা!
আসলে আমার পেশা কি? আমি মা, আয়া সেবিকা সহধর্মিণী
আমি, কন্যা ভার্যা বধূ ভগিণী, সবার খাবার রান্নার রাঁধুনি!
আমি পরিচ্ছন্ন কর্মী মালী রাখাল, রোজ ষোল ঘন্টা কাম
সব পেশায় আছে বেতন বোনাস ছুটি, গৃহ কাজের নাই কোন দাম!
আমি সবসময়ই অপরাধী, স্বামী শ্বাশুড়ি ননদী, সদা বাদী
গৃহকর্মে নাই কোন সন্মান, এ কাজ কিন্তু বনেদি, আদি!
আমি মেয়ে, ভগ্নি, স্ত্রী, মা, সব শেষে আমি যৌনকর্মী
বলুন ধর্মাবতার, আমার কর্ম, পেশা কোন ধর্মী ?
আমার পারিবারিক স্বাস্থ্যসেবা ভাবতে হয়
নাই সময়ের ঠিক আহার নিদ্রা স্নান, তাই স্বাস্থ্যের হয় ক্ষয়!
মহামান্য আদালত, অনুগ্রহ করে আমার “পেশা” করুন নির্ধারণ
আপনার জ্ঞাতার্থ বলছি, আমার চাকরি একদম অস্হায়ী, তা কাউকে বলা বারন!
আমার অসুস্থ হতে নাই, সারাদিন শ্রমে পর রাতে মনোরঞ্জনের জন্য সাজতে হয়
সেখানেই ত্রুটি হলে, আমার সাজানো-গোছানো সংসার হারাবার শত ভাগ ভয়!
আমি বাসায় থাকি, স্বামি অফিসে করেন কাজ —
বাসায় ফিরে, খাবার যদি টেবিলে না পান, মাথায় ভেঙে পড়ে বাজ!
কোন নতুন আগন্তুক কৌতুহল ভরে, যদি জিজ্ঞেস করে, ভাবী কি করেন?
আমার আগেই পতি পরমেশ্বর, জবাব তার, “কিছুই করে না, রাতের ঘুম দিনে সারেন!”
রাধুনি, গভার্নেস, নার্সিং, টিসিং, সেক্স সেলারেরের সারা বিশ্বে কত কদর,
“গৃহিণী” নাম ধারী ‘নারী জাতির’ এদেশে, কেন এত অনাদর?
ধর্মাবতার, আমার আদালতে আর্জি পেশের বড় কারন –
গৃহিণী নয়, ঘরে শত কাজের মূল্যায়নে, আমার পেশা হোক নির্ধারণ!
আমার হোক, অফিসে কাজের মত বেতন ভাতা প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুয়েটি, সপ্তাহিক ছুটি
আট ঘন্টার বেশী কাজ করতে আপত্তি নাই, চাই অন্য চাকুরির মত ও, টি !