লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
আমাদের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাহেব গোটা তিন বিয়ে করেছেন, সবই ভালোবাসার বিয়ে, তিনজনে ই আসিফ নজরুলের লেখা পড়ে প্রেমে পড়েছেন! তিনি ও একের পর এক সংসার ভেঙেছেন!
এ কথা সত্যি কবিসাহিত্যিক শিল্পী নাট্যকার ঔপন্যাসিক সিনেমা পরিচালক অন্য সাধারণ মানুষ থেকে নারীর কিছুটা দুর্বলতা সৃষ্টি তে তার মেধা অগ্রনী ভুমিকা রাখে কিন্ত সংসার ভেঙে রুচি পাল্টাতে বহুগামী হওয়া অনুচিত!
সিনেমার আলমগীর, লেখক হুমায়ুন আহমেদ, কবরী, রোজী, এমনি অনেকের কথা বলা যায়!
আমি হাইস্কুল জীবন থেকে যাত্রা নাটক রাজনৈতিক পরিবেশে সাথে জড়িত। তখন মেয়েরা নাটক যাত্রা করতে আসতে সামাজিক বিপত্তি ছিলো। আমি অনেক নাটক যাত্রার নায়িকা হয়েছি! পরবর্তী তে চাকুরী জীবনে এক চাকুরী পাল্টে অন্য চাকুরির জীবনে পড়ে গেলাম বিশাল সাহিত্য জগতে ! এখন ও লেখালেখি কবিতার সাথে দীর্ঘ দিন জড়িত থাকায় অনেক নারী-পুরুষ কবি পরিচিত! সবার কাছে শোনা যায় অনেক প্রেম প্রস্তাব আসে, অনেক সময় জেনারেশন গ্যাপ ও পাঠক বেছে প্রস্তাব দেয় না!
প্রিয় পাঠক, আমার বিষয় বিশাল প্রতিভাধর লেখক ও সিনেমা পরিচালক “জহির রায়হান” ও তার জীবন!
জহির রায়হান “বরফ গলা নদী সহ অনেকগুলো উপন্যাস লিখেছেন এবং সেগুলো অনেকে নাট্যরূপ দিয়েছেন! তিনি “জীবন থেকে নেয়া” সহ অন্তত ৮/৯ টা সিনেমার পরিচালক ছিলেন! তার মুক্তি যুদ্ধ কালিন শেষ সেলুলয় বন্দী সিনেমা “স্টপ জেনোসাইড” শেষ করে যেতে পারেন নাই! তিনি ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর পর একসময় একটা মিথ্যা টেলিফোন কলে জানতে পারেন তার ভাই”শহীদুল্লাহ্ কায়সার” মিরপুর বিহারি কলোনি তে আটকা আছেন! তাকে পেতে হলে “জহিরের” যাওয়া প্রয়োজন! তিনি সময়ের ভুলে সেখানে চলে যান এবং ফাঁদে পড়ে শহীদ হোন! অথচ শহীদুল্লাহ্ কায়সার বুূূদ্ধিজীবি হত্যার তালিকা অনুসারে ১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ হয়েছেন! স্মর্তব্য, ঢাকার মিরপুর, খুলনার খালিশপুর, সৈয়দপুর বিহারি কলোনি গুলো এত অস্ত্র পাক সেনারা সরবরাহ করে গেছিলো যাদের বশ্যতা স্বীকার করাতে আরো ৫/৭ দিন লেগেছিলো! সারা দেশ স্বাধীন হলে-ও এসব স্হান স্বাধীন হয়েছে দেরি করে! সে যাক —
পাঠক, জহির রায়হানের প্রথম প্রেম নায়িকা “সুমিতা দেবির সাথে এবং সংসার! সুমিতা নিজে বলেছেন, তিনি যখন দুই সন্তানের মা তখন ‘জহির’ কবরীর সাথে প্রেমে জড়ান এবং সুমিতা কে বাসা পাল্টে অন্য বাসায় পাঠিয়ে দেন!
তিনি সুমিতার বাসায় যাতায়াত বন্ধ করে দেন এমনকি খোঁজ-খবর ও নেয়া বন্ধ! ইতিমধ্যে কবরীর স্বামী “চিত্ত চৌধুরী” জহিরের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিলে জহির রায়হান দারুন বিপদে পড়ে যান এবং সুমিতার কাছে ফিরে যান, ততদিনে অনাটনে সুমিতা দেবি আবার সিনেমায় অভিনয় শুরু করেছেন, সন্তান রা বেড়ে উঠেছে! জহির আগের মত দাম্পত্য জীবনে চলতে থাকেন!
” বেহুলা” সিনেমা পরিচালনা করার সময় নায়িকা হয়ে আসেন “সুচন্দা” এবং জহির রায়হান আবার প্রেমে পড়েন এবং তাকে বিয়ে করে নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু করেন! সুমিতা দেবি বলেছেন, আর ঠেকিয়ে রাখতে পারলাম না!
প্রিয় পাঠক, আমি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র কবি লেখক, জহির রায়হান কে কিছু বলার ধৃষ্টতা আমার নাই, সব জনকে বলছি, স্বভাবে বহুগামিতা নিষ্ঠুরতা থাকলে তাকে ঠেকানো যায় না! কবি লেখক শোবিজের মানুষ গুলোর বার-বার প্রেমের প্রস্তাব আসে, এমনকি বেড প্রস্তাব পর্যন্ত অফারের থাকলে ও থাকতে পারে, আপনাকে ভাবতে হবে ক্ষুদ্র জীবন টা তথা সন্তান ও প্রথম ভালোবাসার কথা! সমাজ তথা আপন জনেরা আপনাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবে! প্রেমে পড়তেই পারেন, অতৃপ্ত বাসনায় আপন-পিয়াসী থেকে আদর সোহাগ কম হলে, কিন্তু ঘর ভাঙা, সন্তানের ভবিষ্যৎ ভেবে আপনাকে নিবৃত্ত থাকা প্রয়োজন! জীবন একভাবে চলে যায়, কিন্তু কোন ভাঙা সংসারের সদস্য গুলোর ভোগান্তির শেষ হয় না আর সেজন্য অনেকে “আধ-পাগলা” নিয়ে ও জীবন কাটায় দেন!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।
এই টালমাটাল বিশ্বে আধিপত্যবাদ যেভাবে শুরু হয়েছে তাতে কখন কার অস্তিত্ব বিলীন হবে কেউ জানি না!