খুলনা অফিস:
বিদ্রোহী নজরুল একাডেমির ২৭-তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গুণীজন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে খুলনা আর্ট একাডেমি চারুকলা ভর্তি কোচিং এর ২০১৫সালের ৬ষ্ঠ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সুস্মিতা মন্ডল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে চিত্রশিল্পী হিসেবে সম্মাননা স্মারক অর্জন করে। শিক্ষার্থীর এই প্রাপ্তিতে খুশি হয়ে চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস তাকে আশীর্বাদ করেন এবং বলেন ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু অর্জন করে তার পরিবারের সকলকে খুশি করবে এবং জীবনে স্বপ্নের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে যাক।আজ এই সুন্দর খুশির দিনে যিনি সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন তিনি আমাদের মাঝে নেই, তিনি হলেন সুস্মিতার বাবা। সুস্মিতা সম্পর্কে মিলন বিশ্বাস আরো বলেন আজকে যে সম্মাননা অর্জন করেছেন এটি তার প্রাপ্য কারণ যার বাবা না থাকা সত্ত্বেও পড়াশোনা করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে ২০২৫ সালে ১৮ তম নিবন্ধনে সফলতা অর্জন করেছে এটাই তো তার বড় গুনের পরিচয়। হয়তো এই নবীনকে গুণী সম্মাননা দেওয়ায় অনেকে চিন্তা করবেন এত অল্প বয়সে গুণী সম্মাননা পেল কিভাবে? তাই এই গুণী শিল্পী সম্পর্কে নিচে তুলে ধরছি।তার এই প্রাপ্তির জন্য যার কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি রয়েছে তিনি হলেন সুস্মিতার মা। সুস্মিতা যখন নবম শ্রেণীতে পড়ে তখনই তার পিতাকে হারায়। সুস্মিতা বড় ওর ছোট একটি বোন আছে দুই বোনকেই জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ালেখা করিয়েছেন তার মা। এতে বলবো এই গুনি চিত্রশিল্পীর মায়ের অবদান তাই সবচেয়ে বেশি। তাই তার মাকে আমি প্রণাম জানাই আদর্শ মাতা হিসেবে। এবং এই শিল্পীকে অনুরোধ করবো তার শিক্ষক হিসেবে তার মাধ্যমে তার মা যেন কোনদিন কোন তার কাছ থেকে কষ্ট না পায়।তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে ২০১৫সালে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে আমার কাছে এসেছিল। আমার হাত ধরেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সুযোগ পায়। আবার আমার প্রতিষ্ঠানে বসেই সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেছে। এটাই আমার কাছে বড় আনন্দের বিষয়।আমি তার সম্পর্কে অল্প দিনে যতটুকু বুঝেছি তারই একটি বিষয় তুলে ধরছি। এই গুণীজন আসলেই এই স্মারক পাওয়ার মত জ্ঞান তার মধ্যে আছে। সে যখন আমার শিক্ষার্থী ছিল তখন পরীক্ষায় খুব অল্প নম্বর পেত। তার পরিবারের সম্পর্কে আমি যখন জানতে পারি তার পিতা নেই তখন তার প্রতি আমার আলাদা দৃষ্টি,দায়িত্ব ও কর্তব্য বেড়ে যায়।তখন আমি তাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ানোর জন্য দিশেহারা হয়ে পড়ি। হঠাৎ করে একদিন পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ায় ভরা ক্লাসের মধ্যে তার ভিতরে যে জেদ তৈরি করার জন্য তাকে এবং তারই সহপাঠী সুজনকে পুরস্কার দেই। কম নম্বর পেয়ে পুরস্কার গ্রহণ করে খুবই লজ্জা পেয়েছিল। সেদিন থেকে সুস্মিতার জীবন পরিবর্তন করে ফেলেছে। সেদিনের পর থেকেই পরবর্তী পরীক্ষায় সে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করত নিজের চেষ্টায়।তাই আমি বলব একজন শিক্ষার্থীর জীবন পরিবর্তন করার জন্য নিজের প্রচেষ্টায়ই যথেষ্ট। একই মাসে তার দুটি সফলতা অর্জন হয়েছে।আমি সুস্মিতাকে আশীর্বাদ করি এই সম্মাননা স্মারক অর্জনই তার লক্ষ্যে পৌঁছে দিবে। এমন প্রত্যাশায় চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস। আপনারাও সবাই আমার শিক্ষার্থীর জন্য আশীর্বাদ করবেন। বিদ্রোহী নজরুল একাডেমির সকল কর্মকর্তাকে এই নবীন চারু শিল্পীকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।