লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
বিশ্বের সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া "ধর্মনিরপেক্ষ" দেশ! তাদের জাতীয় প্রতিক 'গরুড়' 'বিষ্ণ' 'কৃষ্ণ' ইত্যাদি! ইন্দোনেশিয়া যারা গেছেন তারা জানেন, ঢাকার মত মসজিদের আজানে ধ্বনি শোনা যায় সেই উচ্চ ভলিউমে! আবার মালয়েশিয়া যাবেন সেখানে আজানে
মাইক ব্যবহার একদম নিষিদ্ধ! সৌদি আরবে খোদ "মসজিদুল হারাম/কাবা" "মসজিদুল মনোয়ারা" নির্দেশ আছে তিনভাগের এক ভাগ মাইক সাউন্ড দেয়ার যা মানব হৃদপিণ্ড সহ্য সীমায়! বাংলাদেশে এমন করতে গেলে "সরকারের পতন হয়ে যাবে!"
প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশ জন্মের পর ১৯৭২ সালের সংবিধান তৈরির যে এগারো জন বিজ্ঞ ব্যক্তি কাজ করেছিলেন যেমন ব্যারিস্টার কামাল, ব্যারিস্টার আমীর সহ অন্যান্য --
তখন যেহেতু এদেশ স্বাধীনতায় সব জাতি জীবন দিয়েছে এবং আগামী সুখে বসবাস করতে চার মূলনীতির একটা ছিলো " ধর্মনির্পেক্ষতা"! পাঠক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির চেয়ার বা কলেজে অধ্যাক্ষের চেয়ারটা ও ধর্মনিরপেক্ষ। কারন যে-কোন ধর্মের লোক ভিসি বা অধ্যাক্ষ হতে পারেন তেমনি প্রতিটি ভূখন্ড ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন তাহলেই কোন দেশ ধর্মীয় উগ্রবাদী দখলদারিত্ব সমর্থন করবে না! সব ধর্মের লোক সম অধিকারে বাস করবে!
ইসরায়েল ফিলিস্তিনের কেন শত্রু, কারন ফিলিস্তিন মুসলমান তারা ইহুদি! ধর্ম শান্তি আনার কথা কিন্তু এসেছে বৈষম্য কারন বিশ্বে আসল ধার্মিক পাওয়া দুষ্কর!
১৯৭৫ সালে মুজিব হত্যার পর যে সরকার এসেছেন তিনি বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের মূলনীতির খোলনলচে পাল্টিয়ে ফেলেছেন! ধর্মনিরপেক্ষ কথাটা বাদ দিয়ে মুসলমান খুশি করেছেন কেউ বিসমিল্লাহ বসায়ে কেউ সংবিধানে "রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম'" লিখে কিন্তু মানুষের মন কি ইসলামের পিউরিফাইড করা হয়েছে?
বিশ্বে মাত্র তিনটা দেশ ইসলামি প্রজাতন্ত্র, ইরান মৌরতানিয়া ও পাকিস্তান! পাকিস্তান কেমন ইসলামি তা আপনারা জানেন! প্রায় ৩১ টা সন্ত্রাসী সংগঠন পালন করে, পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, " Quran condemns of Sectarian violence and speak against Terrorism!", আপনি মধ্য প্রাচ্যের যে সব দেশে জেনা ডাকাতি হত্যায় গলাকাটা হয় তার ৮০% অপরাধী পাবেন পাকিস্তানি!
প্রিয় পাঠক, ধর্মীয় লেবাসধারী দেশ আছে কিন্তু ইসলামের দেশ নাই। ভারত ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ছিলো সে চরিত্র ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় আদভানীর নেতৃত্বে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গায় ভারত ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র শেষ করেছে!
তা হলে বাংলাদেশ এখন কোন গোত্রের দেশ? আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনূস আমেরিকার জরিপে বিশ্বের ৫০০ খাটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ৫০/৫১ নাম্বার Pious Muslim ! তা হলে আমরা ইরান ইসরায়েল যুদ্ধে মুসলমান ভাই ইরানের পক্ষে সমর্থন জানাতে পারলাম না কেন? কেন এত ধর্মীয় দল, বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে ইরানের পক্ষে একটা মিছিল বের করলো না, কেন প্রায় সাড়ে চার লাখ মসজিদ বাংলাদেশে সেখানে দোয়া হলো না!
অথচ এই ইমাম সাহেবরা প্রতি শুক্র বার গলা ফাটায় আমাদের নসিহত করে বেহেশতে পাঠান!
যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আক্রমণ সমর্থন করেছে জার্মান কানাডা ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া সব খৃষ্টান রাষ্ট্র! মুসলমান না হয়ে ও চীন রাশিয়া উত্তর কোরিয়া তো ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমরা আল্লাহ কে কি জবাব দেবো?
পাঠক সেই ধর্মনিরপেক্ষতার প্রনেতা "মুজিব" তো ইসরায়েলের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, ইসরায়েল মুসলিম শত্রু বলে সে দেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা পাসপোর্টে উল্লেখ করা ছিলো! তখন তো এদেশে থ্রি নট থ্রি রাইফেল ছাড়া আর কোন যুদ্ধ অস্ত্র ছিলো না! এখনকার মত সাবমেরিন ছিলো না ছিলো না ৩০ টা সড়ক সেতু, রেল সেতু, উড়াল সেতু!
এইতো সেদিন অপরিনামদর্শী নির্বোধ দুর্নীতি প্রশ্রয়দানকারী পতিত সরকার প্রধান বললেন,"ফিলিস্তিন সমাধান একমাত্র স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন"! উনাকে তো আমরা মুসলমান ই মানি না, কোন সাহসে মুসলমানদের পাশে দাড়ালেন তিনি,যে সাহস আমাদের নেই?
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।