শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০৭ অপরাহ্ন

পাখির গ্রামে’ আসছে না পাখি

Coder Boss
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫
  • ১৬৬ Time View

 

এস এম রকিবুল হাসান
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

‘যার আসার নেই কোনো তিথি-তিনি হলেন অতিথি।’  তবে তিথি মেনে প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়েই নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা গ্রামে শামুকখোল পাখি অতিথি হয়ে চলে আসতো। এলাকায় ‘পাখির গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়েছিল গ্রামটি । এ গ্রামে বেশ কয়েক বছর ধরে শামুকখোল পাখি এসে বসবাস শুরু করেছিল। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসতো এই পাখি দেখার জন্য।  তবে গত বছর থেকে তাঁরা আর আসছে না।

গ্রামবাসীরা জানান, প্রতিবছর
জ্যৈষ্ঠ মাসে শামুকখোল পাখিগুলো গ্রামের নিমতলা বাজারের নিমগাছ ও তেঁতুলগাছে এসে বাসা বাধতো। এখানে বাচ্চা ফুটাতো। বাচ্চাগুলো বড় হয়ে গেলে অগ্রহায়ণ মাসের দিকে অন্য কোথাও চলে যেত। তবে পাখিগুলো কোথা থেকে আসতো আর কোথায় চলে যেত কেউ বলতে পারেনা।

গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক  সবুজ সরকার বলেন, ভাবিচায় বড় বড় গাছ থাকার ফলে এখানে অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছিল। গ্রামের সবাই মিলে পাখি শিকারিদের বাধা দেয়া হতো। কেউ এই পাখিগুলো শিকার করতে পারতো না। তাই পাখিগুলো এখানে স্বচ্ছন্দবোধ করতো । অতিথি পাখি আসার ফলে গ্রামবাসী অনেক খুশি হতাম । রাস্তার ধারে তাদের বসবাস। তাই মলত্যাগ করলে অনেক মানুষের শরীরে পড়ে। তবু পরিযায়ী পাখি গ্রামে এসেছে বলে সবাই মেনে নিত।

গ্রামের আরেক বাসিন্দা দেবাশীষ মন্ডল ও টিপু সরকার বলেন, ‘আমরা পাখি রক্ষার জন্য গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার দিয়ে রেখেছিলাম, যেন কেউ শিকার করতে না পারে। আমরা চাই পরিযায়ী পাখি এখানে নিরাপদে থাকুক। কেননা, শামুকখোল পাখি পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের অনেক উপকার করে।’
নিমতলা বাজারের পান  দোকানদার বনো কুমার বলেন, এই পাখি দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে লোক আসতো। সেজন্য কেনাবেচাও ভালো হতো।
উপজেলার শালবাড়ী গ্রামের শিক্ষক দ্বিপক চন্দ্র সরকার বলেন, গত কয়েক বছর আগে জানতে পারি ভাবিচা গ্রামে অতিথি  পাখি আসে। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে পাখি দেখতে গিয়েছিলাম। একসঙ্গে এতগুলো শামুকখোল পাখি দেখে আমার খুব ভালো লেগেছিল।
গ্রামের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক শ্যামল কৃষ্ণ রায় বলেন, পাখিগুলো আসতো দেখে খুব ভালো লাগতো। গত বছর থেকে তাঁরা কেন  আসছে না। সেটা জানি না। তবে আশা করছি এই অতিথি পাখিগুলো আবার আমাদের গ্রামে আসবে।

জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্য প্রাণী পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, শামুকখোল পাখি সাধারনত বিল, ঝিল, জলাশয় ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছে কলোনি করে বাস কর। যে এলাকায় বা গ্রামে তাঁরা নিজেদের নিরাপদ মনে করে  সেই এলাকায় বা গ্রামে বসবাস শুরু করে।
আমরা এসব বন্য পাখির বাসস্থানের  নিরাপত্তার জন্য স্হানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সভা করি। যোগাযোগ রাখি।
যেসব এলাকায় পাখিগুলো বসবাস শুরু করে সেখানে পাখি শিকার রোধে  জনসচেতনতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করি।

নিয়ামতপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, এসব পাখি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোনো পাখি অসুস্থ বা আহত হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় হতে চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102