মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

ব্যক্তির বিবেকের স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রযন্ত্র- মোঃ আসাদুজ্জামান

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫
  • ১৬২ Time View

 

স্টাফ রিপোর্টার:
দার্শনিক ও কবি ফরহাদ মজহার সাহেবের “জুলাই ঘোষণা ,জুলাই সনদ এবং গণমাধ্যম”এই শিরোনামে প্রথম আলোতে ৩রা জুলাই প্রকাশিত লেখাটি আমার নজর কেড়েছে। শ্রদ্ধেয় ফরহাদ ভাইকে এরকম সময়োচিত, সাহসী ও উৎকৃষ্ট মানের লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

সবার আগে ব্যাক্তি এর পর দল আর এর পর দেশ। পৃথিবীর ইতিহাস তাই বলে। বিধাতাও প্রথম ব্যক্তিকে বেছে নিয়েছেন। তার নিকট কোনো না কোনো ভাবে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন এবং তাকে কিছু জ্ঞান দান করেছেন বা শিক্ষিয়েছেন কিভাবে কি করতে হবে।ব্যক্তি বা মানুষকে মস্তিষ্ক ও বিবেক দিয়েছেন। চিন্তার স্বাধীনতা দিয়েছেন। সুতরাং মানুষের চিন্তা ও বিবেক (রেশনালিটির স্তর) মানুষকে/ব্যক্তিকে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকে।
ব্যক্তি যদি চিন্তা ও বিবেককে উন্মুক্ত না রেখে অন্যের বুদ্ধি বা প্ররোচনায় বা প্রভাবে তার আপন ইচ্ছা বা অভিপ্রায় কে চেপে রাখে বা প্রকাশ না করে অথবা প্রকাশ করতে ভয় পায় তাহলে গণতন্ত্র কখনোই বিকশিত হবে না।
ব্যক্তি প্রভাবিত /প্ররোচিত হয় নানান কারণে:
১। ব্যক্তির যখন চলার জন্য নিজের আয় বা কর্মসংস্থান থাকে না বা অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়।
২। চিন্তা বা বিবেক যখন বিক্রি বা ক্রীত হয়ে যায়।
৩। দেশ,রাষ্ট্র বা সমাজ ব্যাক্তিকে প্রতিবন্ধী করে বা চাপে রাখে।
সুতরাং ব্যাক্তি হলো সবার ঊর্ধ্বে।
সেজন্য মার্কার পরিবর্তে ব্যাক্তিকে ভোট দেয়া অত্যন্ত জরুরি বলে আধুনিক সমাজ সংস্কারকগণ মনে।
উন্নত বিশ্ব বিশেষ করে আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া,
ইউরোপ এর প্রত্যেক ব্যাক্তি বা নাগরিকের কর্মসংস্থান বা আয়ের ব্যাবস্থা আছে তাই তারা ভোটের ব্যাপারে স্বাধীনাভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
ফরহাদ ভাই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও গণসার্বভৌমত্বের পার্থক্যের কথা বলেছেন। গণসার্বভৌমত্ব অর্থ ব্যাক্তির চিন্তা আর বিবেকের স্বাধীনতার সমষ্টি বা অভিপ্রায়। লিখাটি বেশ বিশ্লেষণ ধর্মী এবং আমাদের শিক্ষিত সচেতন অর্থাৎ রাজনৈতিক সচেতন ব্যাক্তিবর্গের চিন্তার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে আমার নিকট প্রতিভাত হয়েছে। তবে আন্দোলনরত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাতে ঢালাওভাবে চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ডুবে না যান ব্যাক্তির এই ফিলোসফিকেল দিকটি নিয়ে ভাববার সময় এসছে।
তা না হলে গড্ডলিকা রাজনীতি হয়ত চলবে কিন্তু মানুষ আবার একসময় সংগঠিত হয়ে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার জন্য অভ্যুত্থান বা বিপ্লব করবে।
জনগণ ,মানুষ বা ব্যক্তির চিন্তার বা বিবেকের স্বাধীনতাকে কখনো কোনো আইন কানুন বা চাপ প্রয়োগে বন্দী করা যায় না।
সেজন্য মুক্ত গণমাধ্যম রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ। বঙ্গবন্ধু বা শেখ হাসিনা বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতীতের সরকার বা রাজনীতিকগণ মুক্তচিন্তা বা বিবেককে হরন করতে গিয়ে পরিশেষে ক্ষমতার অবসান হয়েছে বা চলে যেতে হয়েছে।
ব্যক্তি বা জনগণকে নেতা নির্বাচনের পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।কোনো ধরনের ছলাকলার আশ্রয় বা ধোকার আশ্রয় নেয়া যাবে না।
আর ব্যাক্তি বা জনগণকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করার জন্য শুধু নির্বাচন কমিশন নয় রাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নানারকম কলা কৌশলে প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা দরকার। শিক্ষার মাধ্যম বা সিলেবাসে সচেতন মূলক গল্প, কবিতা,ইত্যাদি সন্নিবেশ করা প্রয়োজন।
নইলে শুধু শুধু চোংগা ফুঁকিয়ে কোনো ফল পাওয়া যাবে না।
আর যারা চোংগা ফুঁকাচ্ছেন তারা অভাবের কারণে হোক বা লোভ লালসায় হোক সকাল বিকাল বেচাবিক্রি হয়।তাই মানুষ এদের উপর ভীষণ বিরক্ত।
যাইহোক, ফরহাদ ভাইয়ের বক্তব্যের মূল ট্রেন্ড হলো যতটুকু বুঝেছি চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতাকে সদাসর্বদা সমুন্নত রাস্টীয় ব্যাবস্থায় রাখতে হবে ,জনগণকে রাজনৈতিক সচেতন হিসেবে রাষ্ট্রকেই দেশের স্বার্থে গড়ে তুলতে হবে।
আর রাজনৈতিক নেতাদের শব্দের সঠিক অর্থ বুঝতে হবে এবং তদনুযায়ী জনস্বার্থে কর্মসূচি নিতে হবে।

লেখকঃ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব-জনতা পার্টি বাংলাদেশ, আহবায়ক -কাঙ্খিত বাংলাদেশ এবং সাবেক কর কমিশনার।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102