শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
জগন্নাথপুরে আল ফালাহ মসজিদ এর শুভ উদ্বোধন নরসিংদী সাংবাদিক ফোরামের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত কবিতাঃ কসুর! নিয়ামতপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে ভ্যান চালকের মৃত্যু শরিয়ত ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা চায় খেলাফত মজলিস- ড. আব্দুল কাদের লুটপাটের অভিযোগ নাকি প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর ছক – ধর্মপাশায় আলোড়ন ধর্মপাশায় জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য প্রকল্প ব্রাক স্বাস্থ্য সেমিনার মোরেলগঞ্জে ইট সোলিং সড়ক মরণফাঁদে পরিণত, ভোগান্তিতে লাখো মানুষ মোরেলগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের পুলে চলাচল শিক্ষার্থীসহ তিন ইউনিয়নের লাখো মানুষ দুর্ভোগে ফেসবুক ইনকামের ধোঁকা: বাস্তবতা বুঝে ফিরে আসুন নিজের জীবনে

ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ হোক সবার- ক্লিন্টন হাওলাদার পাভেল

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৬ Time View

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দল-মত, ধর্ম-দর্শন যার যার- রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার কিন্তু নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য, একটি নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আমাদের সামনে একটি বিশাল বড় সুযোগ, যেন সাম্য সম্প্রীতি রক্ষা হয়। কোনভাবেই উগ্রসাম্প্রদায়িকতা মাথা চড়া দিয়ে না উঠে সেই বিষয়টিকে খেয়াল রাখা।
ধর্মীয় পরিচয়কে কেউ যেন নিজের হীন ও দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে- সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য বিনীত আহ্বান জানাই। ‘আমরা অতীতে দেখেছি, যারা নিজেদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে বিবেচনা করেন, সেই সম্প্রদায়ের ওপর কিংবা তাদের ধর্মীয় স্থাপনা বা বাসাবাড়িতে হামলার অনেক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পেছনে অধিকাংশ সময়েই কোনো ধর্মীয় কারণ ছিল না। ব্যতিক্রম ছাড়া এসব হামলার পেছনে ছিল অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অথবা অবৈধ লোভ-লাভের আশার মতো কারণ।’
মুসলমানদের শেষ নবীর স্বাক্ষরিত মদিনা সনদ এমন এক ঐতিহাসিক দলিল, যা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজে সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এবং আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্যও অনুপ্রেরণা। তাছাড়া প্রিয় নবী করিমের (স.) ওপর আয়াত নাজিল হলো ‘লা কুম দিনু কুম ওয়ালিয়া দ্বীন’, তোমার ধর্ম তোমার কাছে আমার ধর্ম আমার কাছে। তাহলে কি করে রাষ্ট্রধর্ম থাকে? যদি রাষ্ট্রধর্মের প্রয়োজন হতো তাহলে নবী করিমই করতেন ৬২২ থেকে ৬৩২ সালে।’’
আমি গর্ব করে বলতে পারি- বিশ্বে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের অন্যতম উজ্জ্বল উদাহরণ বাংলাদেশ। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান- নাগরিকত্বের প্রশ্নে এখানে সবাই সমান। সবার মর্যাদা সমান। কেউ কারও চেয়ে খাটো নয়, কারও ওপর কোন ধরনের বৈষম্যও আরোপিত হয়নি। দেশের সিংহভাগ নাগরিক মুসলমান- এটা সত্য। তবে, সংখ্যার হিসাবে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও সহাবস্থানে আছে। রাষ্ট্রনৈতিক টার্ম হিসাবে তাই কম সংখ্যক নাগরিকদের সংখ্যালঘু হিসেবে আখ্যায়িত করার চল রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে সংখ্যাগুরুরা কোন দিক দিয়েই ছোট করে না সংখ্যালঘুদের। তাই মাইনরিটি বা সংখ্যালঘু বলতে বিশ্বের নানা দেশে এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রেও যেভাবে বিবেচনা করা হয়, যে দৃষ্টিতে বিচার করা হয়, বাংলাদেশে কখনই তা করা হয় না।
ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার।’ নিজেদের সংখ্যালঘু না বলে নিজেদের খাটো করে না দেখে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সমমর্যাদা নিয়ে নিজ জন্মভূমিতে মুক্ত স্বাধীন মানুষের মতো জীবনযাপনের জন্য সব সম্প্রদায়ের প্রতি আমি আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দেশকে সমৃদ্ধির শিখরে নিয়ে যেতে হবে কোন বৈষম্য সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না।
দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এ দেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। আবহমানকাল ধরে মানুষ এ ভূখণ্ডে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখুক- এটাই প্রত্যাশা। কেউ যেন সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্ব নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
একটি রাষ্ট্রে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার। শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতি বজায় রাখাই হলো রাষ্ট্রের সৌন্দর্য, যা শান্তি ও সমৃদ্ধির ভিত্তি স্থাপন করে। যেখানে এই ভেদাভেদগুলো বিভাজনের কারণ না হয়ে বরং ঐক্যের উৎস হয়ে ওঠে এবং মানুষ একে অপরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সম্মান করে, সেখানেই রাষ্ট্রের প্রকৃত সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়। রাষ্ট্রের সৌন্দর্যের দিকগুলো হলো-
প্রথমত সাম্য ও সমতা: রাষ্ট্রের মূল সৌন্দর্য নিহিত থাকে যেখানে সব নাগরিক, তাদের ধর্ম, বর্ণ বা গোত্র নির্বিশেষে সমান অধিকার ও সুযোগ পায়।
দ্বিতীয়ত সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও সহাবস্থান রাষ্ট্রের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
তৃতীয়ত হলো ঐক্য ও সংহতি: ধর্ম, বর্ণ বা গোত্রের ভিন্নতা সত্ত্বেও একটি সাধারণ জাতীয় পরিচয় ও ঐক্যের বোধ মানুষকে একত্রিত করে, যা একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক।
চতুর্থত সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা: ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও রীতিনীতিকে সম্মান জানানো এবং সেগুলো চর্চার সুযোগ থাকা একটি দেশের সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি বাড়ায়।
একটি রাষ্ট্র তখনই সুন্দর হয়, যখন এটি সব নাগরিকের জন্য একটি নিরাপদ, সম্মানজনক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক স্থান হয়ে ওঠে। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে যখন সবাই এক লক্ষ্যে এগিয়ে যায়, তখনই একটি রাষ্ট্রের প্রকৃত সৌন্দর্য বিকশিত হয়।
আসুন, সকলে মিলে গড়ে তুলি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর, বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ। বিশ্বের মাঝে যেন উচ্চস্বরে বলতে পারি ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার- এটাই যেন হয় আগামীর বৈষম্যহীন ও উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।’

লেখক: আমেরিকা প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধা, স্পীন ডক্টর, রাস্ট্র চিন্তক ও প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ সাপোটার্স ফোরাম।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102