লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
পাকিস্তানের উপ প্রধান মন্ত্রী “জনাব ইসহাক দার” বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা “তৌহিদ হোসেনের” সাথে সোনার গাঁ হোটেলে মিটিং করেছেন! সেই পুরানো কাসুন্দি ঘাটা, তিন বিষয় সমাধান নিয়ে সময় ক্ষেপণ হয়েছে অনেকটা, সন্মানিত মেহমান কে অহেতুক ছোটখাটো বিব্রত কর অবস্থায় ফেলা কেন?
ধর্ষন নির্যাতনের বিষয় ক্ষমা চাওয়ার তো জনাব ভুট্টা সাহেব সমাধান বলে গেছেন, “আমার সৈন্য রা যুদ্ধ করে বাংলাদেশে, সেক্স ফেলবে পশ্চিম পাকিস্তানের ঝিলাম নদীতে এসে — যা করেছে ঠিক করেছে!
১. “৩০ লক্ষ বাঙালি হত্যা, চার লাখ নারী ধর্ষণ, এক লাখ জারজ সন্তান জন্ম, বাড়িঘর পোড়ানো, বৈদেশিক সব রিজার্ভ এবং পরাজয় নিশ্চিত জেনে সব ব্যাংকের ভোল্ট ভেঙে সোনা দানা লুটে পশ্চিম পাকিস্তানে সরানো, সব কাগজ নোট পোড়ায় দেয়া, মেধা শূণ্য করতে ২ হাজার সেরা বাঙালি হত্যা” এসব কিছুর বিনিময়ে “ক্ষমা চাওয়া!”
২. আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফেরত নেয়া!
৩. অবিভাজিত সম্পদের ন্যায্য হিস্যা !
প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশের অবাঙালী ভোট কারো কারো ভোট ব্যাংক ধরে পাচ লাখ অবাঙালি কে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে এবং ভোটার ও করা হয়েছে! দশ বিশ শতক অবাঙালি বাঙালি মেয়ে বিয়ে থা করে বাঙালি জনস্রোতে মিশে গেছে! তা হলে এই ইস্যু আর থাকছে কই? স্মর্তব্য, আমার গ্রামের বাড়ীর পাশে বাজারে আমার অধীনে চাকুরী করা ফোরম্যান বিহারি “আমীনের” ছেলে, বিয়ে করে টেলিভিশন টিপিয়ারিং শপ দিয়েছে! সে আমাকে দেখতে ব্যাকুল ছিলো, তার বাবার বস! ছালাম করলো পেয়ে, পুরাদস্তুর বাংলী!
আপনারা আজ-ও রোহিঙ্গা প্রবেশে ঢিলাঢালা, ১৪/১৫ লাখ রোহিঙ্গা সংখ্যায় পৌঁছে গেছে তাদের না ঠেকায়ে ৫৪ বছর বসবাস রত বিহারিদের পিছে লাগছেন কেন? বরং ২৫ লক্ষ বাঙালি নাগরিকত্ব হীন মানবেতর জীবন যাপন করছে পাকিস্তানে তাদের নাগরিকত্ব চেয়ে নিন! করাচি শহর বিশাল ড্রেনের পাশে অধিকাংশের বাস, বিদ্যুৎ জল নাই, রোডে লাইন দিয়ে একবেলা পানি পায়!
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করলে বিলিয়ন বিলিয়ন পাওনা, ততকালীন পাকিস্তানের বৌদেশিক রিজার্ভ ছিলো ৪ বিলিয়নের মত, তার অর্ধেক চাইলে ও দেউলিয়া পাকিস্তান তা দিতে পারবে না কারন বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ কেউ পাকিস্তান কে লোন দেয় না! আপনাদের স্বৈরাচার সরকার হাসিনাকে যখন ৪.৫ বিলিয়ন লোন দিলো, এক সাথে পাকিস্তান লোন দরখাস্ত শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিলো! তঝন চীন সৌদি আরব দু’বার করে লোন না দিলে, পাকিস্তান কে খুঁজে পাওয়া যেতো না! অতএব বন্ধুত্ব করতে হলে এমনি করুন, কিছুই পাবেন না কারন তাদের আর্থিক সক্ষমতা বড়ই করুন! ২৩ কোটি নাগরিকের ৪ কোটি ভিক্ষুক যারা বিদেশে ভিক্ষা বৃত্তির জন্য রপ্তানি হয়! সৌদি আরব ৫ হাজার ধরে ধরে ফেরত পাঠিয়েছে!
এই তিনটা বিষয় আলোচনায় কেন এসেছে তা আমার বোধগম্য নয়, তবু ও শুভঙ্করের ফাঁকি হচ্ছে,
অমীমাংসিত তিন বিষয় বলছেন কিন্তু অমীমাংসিত রেখেই বিভিন্ন বিষয় সই স্বাক্ষর চুক্তি তো বন্ধ নাই!
পাকিস্তানের পতিত প্রেসিডেন্ট ইমরান খান বলেছিলেন, “আমি আমার পাকিস্তান কে বাঁচাতে চাই তাই আমদানি থেকে পরিবহন ভাড়া দ্বিগুণ আর দেবো না, আমি ইউরোপ আমেরিকা থেকে নয়, বাড়ীর কাছের থেকে ট্রাক ভাড়া বা নামে মাত্র ট্রান্সপোর্ট খরচে পন্য আমদানি করবো। সেজন্য রাশিয়া চীন ভারত বাংলাদেশ সবার সাথে বানিজ্য বিনিময় করবো, তিনি রাশিয়া এই যুদ্ধের ভিতর ও এই কারনে সফর করেছিলেন, ব্যাস, বিশ্বের বড় মামা ততকালীন সেনা প্রধান কে প্রেসিডেন্টের থেকে শক্তিশালী ডোজ দিয়ে দেয়ায় তিনি তরবারি ঘুরায়ে ইমরান কে ক্ষমতাচ্যুত করলেন এবং শেহবাজ শরীফ ক্ষমতার মসনদে আরোহন করলেন তড়িৎ গতিতে! পাকিস্তানের মার্কিন দূতাবাস সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া দিলেন,” আমরা ইমরান খান কে ক্ষমতাচ্যুত করেছি, একদিন পর আবার থুথু ফেলে ফেরত নিলেন, বললেন, “না না আমরা জড়িত নই! অবশ্য পাকিস্তানে ২৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছিল তা কিন্তু আমি বলছি না কারন ট্রাম্প স্যার তেমন পাকিস্তান নিয়ে বলেন নাই!
প্রিয় পাঠক, যুক্ত রাজ্যভিত্তিক বিশ্ব অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ” সেন্টার ফর ইকোনমিকস এ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) ২০২২/২৩ সালে জরিপে প্রকাশ করেছিলো, “২০৩১ সালে বিশ্বের বড় ২৫ টা বৃহৎ অর্থনীতির দেশের “একটা হবে বাংলাদেশ!” আরো বলেছিলো সে রিসার্চ জরিপে, “৪১ তম বাংলাদেশ উঠে আসবে ২৪ তম অবস্থানে এবং ২০৩৩ সালে এই বাংলাদেশ ” মালয়েশিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ আফ্রিকাকে অর্থনীতিতে টপকে আসবেে!”
আমি মুখ্যসুখ্য ক্ষুদ্র লেখক, আগের সরকার ছিলো নির্বোধ অপরিনামদর্শী দুর্নীতি প্রশ্রয়দানকারী শাসক তাই হয়তো সিইবিআর রিসার্চ ২০৩১ থেকে ২০৩৩ পর্যন্ত লিমিট করেছে। বর্তমান অবশ্যই রাষ্ট্রের সরকার প্রধান উচ্চ শিক্ষিত ন্যায় পরায়ন এবং Best economist, বাংলাদেশ ২০৩৩ সালের আগেই ৪১ ক্রমিক নাম্বার থেকে ২৪ নাম্বারে চলে আসবে এবং উপরে উল্লেখিত দেশ গুলোকে টপকে আসবে আরো আগে!
অবশ্য পাকিস্তান বিশ্বে প্রথম ধর্মভিত্তিক গঠিত দেশ। আমরা তাদের অংশীদার। অর্থনৈতিক দিকে এগিয়ে যেতে সেই পতিত সরকারের মত ( ভিপি নূরের ভাষ্য) একহাতে চীন অন্য হাতে ভারত রাশিয়া এবং মাঝখানে আমেরিকা তথা সৌখ্যতা ইউরোপীয় ও আরবীয় পেট্রো ডলারের দেশের সাথে জনাব তৌহিদ হোসেন সাহেবের Integrated থাকতে হবে, শুধু পাকিস্তানের সাথে সমস্ত বুদ্ধি পরামর্শ বিদেশ পলিসি খাটালে অর্থনৈতিক রেসে অনেক দেশ টপকে আসা যাবে না! পাকিস্তান বর্তমান বিশ্বে একজন গ্রহীতা, দাতা নয় বরং বাংলাদেশ দাতা, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা, নেপাল, সুদান কে লোন দিয়েছে!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশেকে ভালোবাসেন!