শেখ সাইফুল ইসলাম কবির
পৃথিবীতে মানুষ যাদের মাধ্যমে জীবনের আলো দেখতে পায়, তারা হলেন পিতা-মাতা। সন্তানদের জন্য তাদের ত্যাগ, শ্রম, ও ভালোবাসা এমন এক অসীম দান, যার তুলনা নেই। ইসলাম ধর্মসহ বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মে পিতা-মাতার মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে বারবার গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ইসলামে তো বলা হয়েছে, "পিতা-মাতার পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেশত।" এই বাক্য শুধু একটি উপমা নয়, বরং এর ভেতরে লুকিয়ে আছে একটি মহান সত্য ও চিরন্তন আদর্শ।
পিতা-মাতার ত্যাগ
পিতা-মাতা সন্তানকে জন্ম দেন, লালন-পালন করেন, শত কষ্ট সহ্য করেও তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করে যান। একজন মা সন্তান জন্ম দিতে যে যন্ত্রণা সহ্য করেন, একজন পিতা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সন্তানদের জন্য যেভাবে পরিশ্রম করেন—তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তাঁদের এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার ঋণ কোনোদিনই শোধ করা সম্ভব নয়।
ধর্মীয় গুরুত্ব
ইসলামে পিতা-মাতার অধিকার এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরিফে স্বীয় ইবাদতের সঙ্গে তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, “তোমার মা, তারপর তোমার মা, তারপর তোমার মা, তারপর তোমার পিতা।” এই বাণীর মাধ্যমে মা-বাবার স্থান ও মর্যাদা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
আধুনিক সমাজে প্রেক্ষাপট
আজকের ব্যস্ত জীবনে অনেকেই পিতা-মাতার গুরুত্ব ভুলে যান। বৃদ্ধ বয়সে অনেক মা-বাবা সন্তানদের অবহেলা ও অবজ্ঞার শিকার হন। এটি সমাজের জন্য এক অশনি সংকেত। কারণ যারা নিজের পিতা-মাতাকে সম্মান করে না, তারা ভবিষ্যতে নিজের সন্তান থেকেও সেই সম্মান পাবে না।
আমাদের কর্তব্য
আমাদের উচিত পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা, তাদের সেবা ও যত্ন নেওয়া, এবং সবসময় তাদের দোয়া প্রার্থনা করা। তাদের আশীর্বাদই আমাদের জীবনের সফলতা ও শান্তির পথপ্রদর্শক। তারা সন্তুষ্ট থাকলে আল্লাহ তায়ালাও সন্তুষ্ট থাকেন।
উপসংহার
পিতা-মাতা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। তাদের ভালোবাসা, দোয়া এবং আশীর্বাদ সন্তানের জন্য পরম পাথেয়। আসুন, আমরা সবাই পিতা-মাতাকে ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি, এবং তাঁদের পায়ের নিচেই আমাদের বেহেশত খুঁজে নিন।
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির
চেয়ারম্যান জাতীয় মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম কেন্দ্রিয় কমিটি ঢাকা।