সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে- আনিসুল হক নরসিংদী সদর উপজেলায় ব্র্যাকের নারী অভিবাসী ফোরাম সভা অনুষ্ঠিত ভারতীয় কবি পত্রলেখা ঘোষ এর একগুচ্ছ কবিতা বিএনপির কেন্দ্রীয় থেকে সংসদ সদস্য মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সৈয়দপুরে বিক্ষোভ মিছিল শিবগঞ্জের কারবালা মোড়ে দুই ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত ১, আহত ২ আদালতে হাজিরা দিলেন ‘মব জাস্টিস’ এর সাথে যুক্ত থাকা ভুমি দস্যু জাকির হোসেন মুন্সী বিএনপি ক্ষমতায় গেলে হাওরকে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে: আনিসুল হক জগন্নাথপুরে থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২ পাশে থাকলেই সবাই আপন হয় না সখ করে স্বাধীনতা হারায় আহম্মক!

মোংলা বন্দর রাজস্ব আয়ে রেকর্ড গড়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩৭ Time View

এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলেরএকসময় বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের পরিচিতি ছিল শুধুই একটি রপ্তানি নির্ভর বন্দর হিসেবে, সেই বন্দর আজ অপার সম্ভাবনার এক নতুন নাম। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে এই বন্দর। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে অর্জিত অভূতপূর্ব আয়-ই তার প্রমাণ। আগামী দিনে দক্ষিণবঙ্গের অর্থনৈতিক ‘হাব’ হিসেবে মোংলা বন্দর প্রস্তুত এক নতুন ইতিহাস রচনার জন্য। বিগত বছরগুলোতে মোংলা বন্দরের উন্নয়নে গৃহীত হয়েছে যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ। আধুনিকায়ন করা হয়েছে বন্দরের অবকাঠামো, বাড়ানো হয়েছে সক্ষমতা। ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে এই বন্দরের প্রতি। বর্তমান সময়ে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হওয়ায় মোংলা বন্দরের গুরুত্ব বেড়েছে বহুগুণ। এটি এখন শুধু দক্ষিণবঙ্গের নয়, পুরো বাংলাদেশের বাণিজ্যিক গতিপথ বদলে দিচ্ছে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বন্দরের আয় বৃদ্ধিতে কাজ করেছে বেশ কিছু বিষয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো- মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা। নতুন জেটি, ইয়ার্ড নির্মাণ এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন। নদী পথ, উন্নত সড়ক ও সম্প্রতি বন্দরের সাথে রেল যোগাযোগ সংযোজন। সেবাগ্রহীতাদের দ্রুত সেবা প্রদানের লক্ষে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালুকরণ। নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বন্দরে পণ্য খালাস ও পরিবহনে নিরাপত্তা জোরদার। সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে বন্দরের ধারণক্ষমতা আরও বাড়ানো। চ্যানেলের গভীরতা বাড়িয়ে আরও বড় জাহাজ ভেড়ার সুযোগ সৃষ্টি। নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য বিশেষায়িত জেটি নির্মাণ। ইতিমধ্যে চীনের সাথে জিটুজি চুক্তির আওতায় আরও দুটি কন্টেইনার টার্মিনালসহ কন্টেইনার টার্মিনাল ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। আমদানিকৃত গাড়ি নিরাপদে রাখার জন্য পর্যাপ্ত কার ইয়ার্ড, শেড, ওয়ার হাউজ এবং স্পেস রেন্ট কম থাকায় দেশে আমদানিকৃত রিকন্ডিশন গাড়ির ৫৫ শতাংশ মোংলা বন্দর থেকে খালাস হয়। বন্দরের এই অগ্রযাত্রা শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়, দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ। এটি স্বপ্ন পূরণের এক প্রতীক।

আগামীর দক্ষিণবঙ্গের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত এই বন্দর, নতুন দিগন্ত উন্মোচনে বদ্ধপরিকর। এই বন্দর খুলনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ এবং এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর।

বন্দরের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩ হাজার ৩৮৭ লাখ টাকা। এ অর্থবছরে বন্দরে ৩৪ হাজার ৩৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯৪৬ লাখ টাকা এবং দুই দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আয় করেছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মোঃ মাকরুজ্জামান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্বভার গ্রহণের পর বন্দরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে মোংলা বন্দর পরিদর্শন করে বন্দর উন্নয়ন ও মোংলা বন্দরের কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। তাদের সময়োপযোগী পরামর্শে বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান জানান, বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বন্দরের স্টেক হোল্ডার, শিপিং এজেন্টস, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও ষ্টিভেডরসহ সব ধরনের বন্দর ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় সফলতার এই অর্জন। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ব্যবসা উন্নয়ন স্থায়ী কমিটি গঠন করার ফলে জাহাজ আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দরে জাহাজ জট নেই। গাড়ি আমদানিকারকদের জন্য বিশেষ সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। পর্যাপ্ত কন্টেইনার রাখার জন্য সাতটি কন্টেইনার ইয়ার্ড রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102