নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনার প্রখ্যাত বাঁশিয়াল বাবলু বিশ্বাস খুলনা আর্ট একাডেমি পরিদর্শন করেন। একাডেমিটি ইকবাল নগর গার্লস স্কুলের পূর্ব পাশে অবস্থিত।একাডেমির সম্মুখে চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। উভয়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ কুশল বিনিময়ের পর মিলন বিশ্বাস বাবলু বিশ্বাসকে ভেতরে আমন্ত্রণ জানান। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বাবলু বিশ্বাস খুলনা আর্ট একাডেমির ঐতিহ্য সংরক্ষণশালা ঘুরে দেখেন। সেখানে হারিয়ে যাওয়া মানুষের ব্যবহৃত বহু ঐতিহ্যবাহী উপকরণ দেখে তিনি গভীর আনন্দ প্রকাশ করেন।পরিবেশে বিমোহিত হয়ে বাবলু বিশ্বাস তাঁর হাতে থাকা বাঁশিতে সুর তোলেন। সেই সুরে চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাসের ছেলে মেয়ে সৌহার্দ্য বিশ্বাস ও সম্প্রীতি বিশ্বাস মুগ্ধ হয়ে যায় এবং খুশিতে ভরে ওঠে চারপাশ। এ সময় খুলনা আর্ট একাডেমির সহকারী পরিচালক শিলা বিশ্বাস বাবলু বিশ্বাসকে প্রণাম জানান।স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাবলু বিশ্বাস উল্লেখ করেন ২০০০সালে চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস খুলনাতে যখন প্রথম আসেন আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার উদ্দেশ্যে তখন তার সঙ্গে পরিচয় হয় এবং একদিন সন্ধ্যায় তার রুমে গিয়ে একটি দৃশ্য এঁকে দিয়েছিলাম। সেই মিলন বিশ্বাসের বর্তমান অবস্থান দেখে আমি খুবই আনন্দিত হলাম। মিলন বিশ্বাস এক দিনের শিক্ষা পেয়ে বাবলু বিশ্বাসকে গুরুজন হিসেবে আজীবনের শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছে।আলোচনার সময় চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস খুলনা আর্ট একাডেমির চলমান শিল্পচর্চা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাফল্যের গল্প বাবলু বিশ্বাসকে শোনান। এসব শুনে বাবলু বিশ্বাস গভীর আনন্দ প্রকাশ করেন এবং প্রতিষ্ঠানে বাঁশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। তিনি প্রস্তাব করেন— অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সপ্তাহে অন্তত একদিন বাঁশি শিক্ষার ক্লাস চালু করা হোক। এ প্রসঙ্গে মিলন বিশ্বাস তাঁকে অনুরোধ করেন প্রতি সপ্তাহে একদিন প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য।আবেগভরে মিলন বিশ্বাস বলেন “দাদা, আপনাকে দেখলে শিল্পগুরু এস. এম. সুলতানের কথা মনে পড়ে। সুলতানের ছিল লম্বা চুল, তিনি বাঁশি বাজাতেন। আপনার কার্যক্রমের সঙ্গে তার অনেক মিল রয়েছে।”পরিদর্শনের এক পর্যায়ে চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস বাবলু বিশ্বাসের জীবনবৃত্তান্ত জানতে চান এবং সেই জীবনকে কেন্দ্র করে একটি কবিতা রচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস বলেন, জীবনের প্রথম দিকের অনুপ্রেরণা হিসেবে বাবলু বিশ্বাসকে কখনোই ভুলে যাননি। পরিশেষে, চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস বাবলু বিশ্বাসের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন এবং তাঁর আশীর্বাদ গ্রহণ করেন।শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনে বাবলু বিশ্বাস শুধু তাঁর বাঁশির মধুর সুরেই নয়, শুভালাপ, বিনয়ী ব্যবহার এবং মানবিক গুণাবলীর জন্যও সবার হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। চিত্রজগতের প্রতিভাবান শিল্পীরাও তাঁকে সমানভাবে ভালোবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন। চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস বলেন এটাই তো একজন শিল্পীর বড় পাওয়া। তারপরে বাবলু বিশ্বাস খুলনা আর্ট একাডেমিতে আবারো আসার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাসের কাছ থেকে বিদায় নেন।