কলমেঃ রামিম আহমেদ
কুঁড়েতে ক্ষুধার কৃষক বসে, খেতে নাহি পায় কিছু,
ধনীর বিলাসমদে লুটে অমৃত, সুখ ছোটে কার পিছু।
কঠিন শিলে লাঙ্গল চালায়, ফোটায় বনে রঙিন ফুল,
ধুলো মাখা দেহে সে আজ রইল নিঃসহায় কূল।
অহমভরে ধনীর বুকে উঠল স্বার্থের গর্ব,
দীন চাষার কপালে শুধু জমল দুঃখ-শর্ব।
ভাগ্য সাজে বণিক ধনীর শিরে রৌদ্র-ছায়,
পরিহাসে কৃষকের ললাট নত ধনীর পায়।
রৌদ্রজ্বালা খেটে খাওয়া সে খুঁজে নাহি ঠাঁই,
অশ্রুজলে ভিজিয়ে মাটি, নুহর নমিলো পায়।
ক্ষুধার তাপে কাতর দেহে কাঁপে করুণ হাহাকার,
তবু তারি ঘামে ভরে ওঠে স্বর্ণশস্য-ভাণ্ডার।
শোষক ধনী সোনার থালায় কত তার ভঙ্গি,
চাষার ঘরে ফাঁকা হাঁড়ি, ক্ষুধা তার চিরসঙ্গী।
তৃষ্ণার্ত প্রাণ খুঁজে সুখ, খুঁজে সাম্যের আলো,
ধনীর শিরে শোষণ তাজ-অহমে হলো কালো।
বজ্রবাণী তোল বুকেতে— “জাগো হে শোষিত জন,
ভেঙে ফেলো শৃঙ্খল সব, ধরো বিদ্রোহী ধ্বজন।”
আঁধার রাতে কৃষাণ কাঁদে, তারি চোখে রক্তধারা,
কোন শক্তি ফিরিয়ে দেবে তার হাসি-আনন্দধারা?
ধরণীর বুকে ঘাম ঝরে যে, সে কেন থাকবে দাস?
তারি শ্রমে দাঁড়ায় প্রাসাদ, তার ঘামে সভ্যতার আভাস।
শোষক ধনীর কীর্তিগাঁথা রচিত তার রক্তে,
তবু কেন সে চির দীন, বাঁধা অনল-শৃঙ্খলে?
ওগো জনতা, শোনো এবার বিদ্রোহীর অগ্নি-ডাক,
“ক্ষুধার কণ্ঠে জ্বালো আগুন, হাকো বিদ্রোহী হাক।”
দারিদ্র্যের হাহাকার মুছে যাবে আনব নতুন ভোর,
শ্রমিক কৃষক হাতে তুলে নেবে ন্যায়ের শঙ্খধ্বর।
আসবে সে দিন, শোষক ধনীর ভাঙবে মিথ্যে শান,
কৃষকের মুখে ফুটবে হাসি—গাইবে মহা-বিজয়-গান।