কলমে: মো সাব্বির হোসেন জয়
নদীর ধারে ফেরিঘাটে বাঁশের ছাউনি ঘর,
জেলে বসে গেয়ে চলে পদ্মার ঢেউয়ের পর।
পাড়ের পাশে তালগাছ যেন প্রহরীর মতো দাঁড়ায়,
নৌকা দু’টি দোল খায় স্রোতে, চিল উড়ে যায় হায়!
রাখাল কিশোর বাঁশি বাজায়, গরুর পালে ধায়,
ধুলোমাখা প্রান্তর জুড়ে সে শান্তি খুঁজে পায়।
শিশুরা মাঠে দৌড় ঝাঁপে, ঘুড়ি ওড়ে প্রাণে,
রঙিন স্বপ্ন মিশে গিয়ে আকাশ ছুঁয়েই জানে।
কৃষকের হাত সোনালি ধানে—ঘামে ভেজা বুক,
রোদ পুড়ে যে ফসল ফলায়, তাতেই জাগে সুখ।
বাঁশঝাড়ের ছায়ায় বসে গেয়ে ওঠে কেউ,
মাটির হাঁড়ি, ধানের গন্ধ—গ্রামের প্রাণ সে ঢেউ।
সন্ধ্যা নামে মৃদু বাতাস, বাজে পূজার ঢাক,
মসজিদে তখন আজান পড়ে, আলোকিত সব পাক।
ধর্ম মিলে, মনও মিলে, হৃদয় করে কাম,
হিন্দু-মুসলিম কাঁধে কাঁধে—ভ্রাতৃত্ব যেখানে থাম?
পড়শির মুখে হাসি লেগে, দ্বন্দ্ব পেরিয়ে যায়,
ভাতের থালায় ভাগ বসায় ভালোবাসার ছায়।
এই যে আমার ছবির মতো, স্বপ্ন-তোলা গ্রাম,
মাটির গন্ধে বাঁধা পড়ে ইতিহাসের নাম।
যেখানে জন্ম নিলে বুঝি হৃদয় পায় ঠিকানা,
সে গ্রাম যেন কাব্য হয়ে জেগে থাকে আপনা।
যতই যাই দূর শহরে, ফিরি ফিরে সে ধামে—
স্মৃতির ভাঁজে, প্রাণের গানে—ছবির মতো গ্রামে।