লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
ইসরায়েল কাতারে বিমান হামলা করেছে! ও মা সেকি কথা, দেহ দিলাম মনো দিলাম নাইতো কিছু বাকী, তা হলে ইসরায়েল সব মুসলিম দেশ দখল করলে-ও কাতারে তো এয়ার এ্যাটাক হওয়ার কথা না! কাতার আমেরিকার দশ হাজার সেনাকে জায়গা দিয়েছে, পরমাণু সাবমেরিন, যুদ্ধ জাহাজ সহ সব কিছু আছে তাদের হেফাজতে!
কাতারে মার্কিন ঘাটি মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তর ঘাটি যাকে বলা হয় মধ্য প্রাচ্য মার্কিন কেন্দ্রীয় সামরিক কমান্ড!
এই ঘাটি থেকে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া আক্রমণ করা হয়েছে এবং ঐ সব দেশকে জাহান্নামে পাঠানো হয়েছে। কাতারের "উদইদ" বিমান ঘাঁটি মার্কিন ঘাটি বলা যায়, সেটা মার্কিন নিরাপত্তা বেষ্টনী তে এবং অবাদ ব্যবহারের জন্য মার্কিন সেনাদের দেয়া আছে সাথে পারস্য উপসাগরের রণতরী। যেন মিনি আমেরিকা একটুকরো কাতার ভূখন্ড!
প্রিয় পাঠক, তাহলে মার্কিন পৌষ্যপুত্র ইসরায়েল কাতার আক্রমণ করলো কেন? একেই বলে মার্কিন খেলা!
বাংলাদেশ পান্তা ভাত খাওয়া একজন "মুজিব" বলেছিলেন,"আমেরিকা কারো বন্ধু হলে তার আর নতুন কোন শত্রু লাগে না!" ৫০ বছর পর সেই পাগলের কথা ঠিক হচ্ছে, তাই নূরা পাগলার লাশ পোড়াবার আগে তার মাজার আক্রমণের চেষ্টা হয়েছে! চার জন গোপালী জীবন দিয়ে আপাতত ঠেকিয়েছে, আদৌ এটে গেড়ে বসলে আর ঠেকানো যাবে না!
ডোনাল্ড ট্রাম্প স্যার একটা রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের বলেছেন," ইসরায়েল কাতারে বিমান হামলায় আমরা খুশি নই!" হাসি চেপে রাখতে পারছি না! পরক্ষণেই তিনি ইসরায়েলের সাফাই গেয়েছেন, "জিম্মাদের মুক্তি চাই, হামাস কে দুর্বল করা একটা যৌতিক লক্ষ্য!" হামাস খুঁজতে আজ কাতার তো কাল কুয়েত, পরশু দুবাই বুর্জ খলিফা টাওয়ার!" মার্কিন মুরব্বি এমন ই বলবেন আমরা জ্ঞাত নই, আমরা খুশি নই! অথচ ইরান কে শায়েস্তা করতে ধেয়ে আসছে পরমাণু সজ্জিত মার্কিন রণতরী "জেফার্ড ও ফোর্ড "! ওদিকে ভেনিজুয়েলা দারুন উত্তেজনা চলছে, আমেরিকা যে কোন সময় আক্রমণ করতে পারে! এই তেলসমৃদ্ধ দেশটা নিতে পারলে আর তেল-গ্যাস চাইতে রাশিয়া সৌদি আরব নির্ভর করতে হবে না! ভেনিজুয়েলার পক্ষে চীন ইরান রাশিয়া প্যাক্ট হয়েছে! একটা কথা আপনাদের মনে করাতে চাই। আমেরিকা ইরান কে সরাসরি আক্রমণ করার পর ন্যাটোর সব দেশ তাকে আক্রমণ করতে পারবে কারন ন্যাটো সংবিধানে এমন একটা ক্লজ সংযুক্ত আছে, " ন্যাটোর কোন দেশ আক্রান্ত হলে সব দেশ আক্রান্ত বলে বিবেচিত হবে!"
ইসরায়েল আমেরিকার সম্পর্ক অনেকটা পিতা সন্তানের মত! নেতানিয়াহু মেয়াদোত্তীর্ণ ক্ষমতায় আছেন মার্কিন মদদপুষ্ট হয়ে। তিনি টয়লেটে গেলেও ট্রাম্প স্যার তা জানেন! কাতারে সাথে আমেরিকার সম্পর্কে দেবতা ভক্তের মত! সেখানে ইসরায়েল আক্রমণ আমেরিকা জানেনা তা কি বিশ্ব আহম্মক আমরা যারা আছি তাদের মেনে নিতে হবে?
প্রিয় পাঠক, আমরা লেখকরা শুরু থেকে বলে আসছি ক্ষুদ্র দুটো দেশ সিরিয়া আর বাংলাদেশের সরকার পতনে সারা বিশ্ব আমেরিকার দখলে এনে দিয়েছে। আজ যদি ৩০/৪০% আই কিউ থাকে দিব্বি চক্ষু মেলে দেখুন সারা বিশ্ব মার্কিন আগ্রাসন থাবার মধ্যে চলে গেছে। গাঁজা শেষ, মধ্য প্রাচ্যের সব দেশ জিজিয়া কর দেয়ার মত দুহাত করজোড়ে দাড়িয়ে, রাশিয়া যে NATO ঘরের কাছে নিয়ে আসবে না বলে ইউক্রেন আক্রমণ করলেন, খোদ আমেরিকা জেলেন্স স্কির কাছ থেকে চুক্তি করে নিয়েছে পুরা ইউক্রেনের আন্ডার গ্রাউন্ড খনিজ, অতএব সেখানে তার শত-শত সেনা আনাগোনা কোন পুতিন ঠেকাবেন ! উঁকুন তাড়াতে ন্যাড়া হয়ে পুতিনের লাভ হয়েছে বলে মনে হয় না!
সিরায়ার বৃহৎ অংশ গোলান ইসরায়েল দখল করে নিয়েছে, বাংলাদেশ লর্ড ক্লাইভ নয় ডোনাল্ড ট্রাম্প স্যার নখর বসিয়ে ফেলেছেন। চলে যাক এ দু'টো দেশ, ফ্যাসিষ্ট মুক্ত হয়েছে তো, কিন্তু আমার ফোকাস অন্য জায়গায়! ইরান বড় অসহায় হয়ে গেছে! ইসরায়েল ও আমেরিকা ইরানের সাপোর্টিং লেবাননের ৪ লক্ষ সৈন্য হিযবুল্লাহ কে সারেন্ডার্ড করায় ফেলেছে, এখন অস্ত্র জমা দিতে বলতেছে, ইয়েমেনের হুতি যারা রেড সি তে মার্কিন ইসরায়েল জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলো, নতজানু! ইরাকে মার্কিন পন্হী সরকার " প্রতিরোধ যোদ্ধাদের" ঘিরে রেখেছে, বাহরাইনে ইরান পন্হী যোদ্ধারা আর একটা গুলি ছুড়তে পারবে না এই শর্তে বেচে আছে!
অসমাপ্ত, আগামী পর্বে শেষ।