শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
কবিতাঃ কসুর! নিয়ামতপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে ভ্যান চালকের মৃত্যু শরিয়ত ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা চায় খেলাফত মজলিস- ড. আব্দুল কাদের লুটপাটের অভিযোগ নাকি প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর ছক – ধর্মপাশায় আলোড়ন ধর্মপাশায় জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য প্রকল্প ব্রাক স্বাস্থ্য সেমিনার মোরেলগঞ্জে ইট সোলিং সড়ক মরণফাঁদে পরিণত, ভোগান্তিতে লাখো মানুষ মোরেলগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের পুলে চলাচল শিক্ষার্থীসহ তিন ইউনিয়নের লাখো মানুষ দুর্ভোগে ফেসবুক ইনকামের ধোঁকা: বাস্তবতা বুঝে ফিরে আসুন নিজের জীবনে লালমনিরহাট জেলায় জন্ম আমার বটিয়াঘাটায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ: তদন্ত ও শাস্তির দাবি শিক্ষক সমাজের

হরতালের নামে জনদুর্ভোগ: গণতন্ত্র কি ভুল পথে হাঁটছে?

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৭ Time View

শেখ সাইফুল ইসলাম কবির

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে হরতাল একটি বহুল পরিচিত এবং বহু ব্যবহৃত আন্দোলনের মাধ্যম। তবে প্রশ্ন উঠেছে, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এই হরতাল কি আদৌ গণতান্ত্রিক, কার্যকর ও জনবান্ধব কোনো কৌশল হিসেবে গণ্য হচ্ছে? নাকি এটি শুধুই একটি চিরাচরিত অথচ অকার্যকর হাতিয়ার, যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ জনগণ?

সম্মিলিত নাগরিক কমিটির ডাকা হরতালে বাগেরহাট ৪ আসনের ৯ উপজেলায় গাছ ফেলে কিংবা টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়কে চলাচলকারী অ্যাম্বুলেন্স, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অফিসমুখী কর্মজীবী মানুষদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে দীর্ঘ ভোগান্তির মধ্য দিয়ে।

প্রশ্ন হলো—এই হরতালে যদি সত্যিই জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন থাকত, তাহলে রাস্তা অবরোধ কিংবা জবরদস্তির আশ্রয় নেওয়ার দরকার হতো না। মানুষ স্বেচ্ছায় ঘর থেকে না বের হয়ে হরতাল সফল করত। কিন্তু বাস্তবতা হলো, জনগণ নানা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হচ্ছে, অথচ রাজনৈতিক কর্মীরা তাদের চলাচলে বাধা দিচ্ছে। এতে জনগণ যেমন ক্ষুব্ধ হচ্ছে, তেমনি আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিও হারাচ্ছে।

ব্যক্তিগতভাবে অসংখ্য নাগরিকের সঙ্গে কথা বলে আমরা দেখেছি, তারা রাস্তায় চলতে না পেরে ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাদের মতে, রাজনীতির নামে এমন হয়রানি মেনে নেওয়া যায় না। তারা বলছেন, রাজনৈতিক দলের দাবি যৌক্তিক হলেও, তা আদায়ে এই ধরনের কৌশল জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়।

বর্তমান আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হলো ৪টি আসন বহালের দাবি। নিঃসন্দেহে এই দাবিটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে গুরুত্বপূর্ণ দাবির পেছনে যদি জনসমর্থন হারিয়ে ফেলে একটি রাজনৈতিক দল, তাহলে তা নিজের অস্তিত্বকেই সংকটে ফেলে দেয়। জনগণের বিরাগভাজন হয়ে দাবি আদায়ের আশা করা একধরনের আত্মপ্রবঞ্চনা।

এছাড়া আলোচনায় এসেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘না’ ভোটের সুযোগ চালু হতে পারে। যদি তা সত্য হয়, তবে এটি হবে জনগণের হাতে একটি শক্তিশালী প্রতিবাদ জানানোর উপায়। অসন্তুষ্ট ভোটাররা তখন কোনো প্রার্থীকেই সমর্থন না দিয়ে সরাসরি ‘না’ ভোট দিয়ে তাদের হতাশা ও বিরক্তি প্রকাশ করবেন।

তাই এখনই সময়, রাজনৈতিক দলগুলোকে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের আন্দোলনের ধরন পরিবর্তন করতে হবে। আন্দোলন হোক জনবান্ধব, দাবি হোক বাস্তবসম্মত, আর পন্থা হোক আইনি ও সাংবিধানিক। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যেতে পারে। নির্বাচন বর্জন বা প্রতীকী প্রতিবাদও হতে পারে এক বিকল্প পন্থা।

কিন্তু বারবার হরতাল-অবরোধ ডেকে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলা কোনো সভ্য রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে না। কারণ, গণতন্ত্র মানেই জনগণের ক্ষমতায়ন। জনগণকে কষ্ট দিয়ে কখনোই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

সর্বশেষে বলতেই হয়—রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা উচিত জনসাধারণ। তাই জনগণকে পাশে না পেলে, কোনো আন্দোলনই টেকসই হয় না, ইতিহাস তা বারবার প্রমাণ করেছে।

শেখ সাইফুল ইসলাম কবির চেয়ারম্যান জাতীয় মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম কেন্দ্রিয় কমিটি ঢাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102