এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি:
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলেরবাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের শেখপাড়াগামী পূর্ব কাটাখালের ওপর নির্মিত কাঠের পুলটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তিন ইউনিয়নের ভোগান্তিতে লাখো মানুষ।
বিশেষত ১১০ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এস.বি. আদর্শ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বি.এস. ওয়াহেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। শিক্ষক ও অভিভাবকদের শঙ্কা—যেকোনো সময় এ ভাঙা পুলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুলটির কাঠের তক্তাগুলো ভেঙে ১০-১৫ ফুট পর্যন্ত ফাঁকা হয়ে গেছে। পূর্ব পাশের প্রায় ২০ ফুট দেবে গিয়ে জয়েন্ট সরে গেছে। লোহার অ্যাঙ্গেল মরিচায় ক্ষয়ে গেছে, রেলিং ভেঙে পড়েছে। এমনকি একাংশ খালে বিলীন হয়ে গেছে।
পুলটির ওপর নির্ভর করে বহরবুনিয়া, বারইখালী ও জিউধরা ইউনিয়নের মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। পাশাপাশি ঘষিয়াখালী, ফুলহাতা, ফকিরবাড়ি, শনিরজোড়, কলেজবাজার, কালিবাড়ি বাজার, সিরাজ মাস্টার বাজার, বহরবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে যাওয়ারও এটাই একমাত্র ভরসা।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৩ সালের মে মাসে পুলের একটি অংশ ভেঙে গেলে বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে সেটিও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় ১০–১৫ বছর আগে নির্মিত এ কাঠের পুলটি সামান্য মেরামত হলেও আজ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গভাবে পুনর্নির্মাণ হয়নি।
৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ নুরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “পুলটির পুনর্নির্মাণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে এখনো কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।”
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, “বিষয়টি আমাদের জানা আছে। জেলা পরিষদে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অবিলম্বে এ পুলটির পুনর্নির্মাণ না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত ও জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।